নিজেকে সঁপে দেই মহান রবের আনুগত্যে
লিখেছেন লিখেছেন মিশু ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৮:৫৯:২৬ সকাল
আসসালামু’আলাইকুম
সবাইকে আগত পবিত্র ও অত্যন্ত শিক্ষাসম্বলিত খুশির দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে কিছু আহবান।
ইসলাম আল্লাহর নিকট একমাত্র জীবনবিধান। যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল, তারা এ দীন থেকে সরে গিয়ে যেসব বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেছে, সেগুলো অবলম্বনের পেছনে এ ছাড়া আর কোন কারণই ছিল না যে,
প্রকৃত জ্ঞান এসে যাওয়ার পর তারা নিজেদের মধ্যে পরস্পরের ওপর প্রাধান্য বিস্তারের জন্য এমনটি করেছে। আর যে কেউ আল্লাহর হেদায়াতের আনুগত্য করতে অস্বীকার করে, তার কাছ থেকে হিসেব নিতে আল্লাহর বিন্দুমাত্র বিলম্ব হয় না।
সূরা আলে ইমরান: ১৯
আমাদের সমাজে ইহুদী-নাসারাদের চক্রান্তের মাধ্যমে বিভিন্ন রকম দিবস পালন করার নামে নানাভাবে নানা আয়োজনে সমাজের বিরাট অংশের মুসলিম চেতনাকে কুর’আনের শিক্ষা থেকে দূরে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে; জীবন সম্পর্কে বিভ্রান্ত ধারণা দিচ্ছে যে, জীবন শুধুমাত্র এই দুনিয়াতে থাকার জন্য এবং এখানে সব চাওয়া-পাওয়ার মধ্যেই সুখ-শান্তি, আনন্দ-স্ফূর্তি ও স্বার্থকতা নিহিত। আর তাই দেখা যায়, তারা মৃত্যুকে ভুলে থাকতেই পছন্দ করে, পছন্দ করে মৃত্যু পরবর্তী জীবনের জবাবদিহীতাকে এড়িয়ে চলতে, মোহনীয় এই দুনিয়ার জীবনকে এতো বেশী ভালোবেসে ফেলে যে, মহান আল্লাহ তা’য়ালার সন্তুষ্টির পথে যে চলতে হবে তা তারা ভুলে যায়। ফলে অন্যায়-অশ্লীলতার সয়লাবে ভেসে গেলেও তারা কোন সমস্যা মনে করে না। দুনিয়ার জীবনে কাঙ্খিত জিনিষ না পেলেই হতাশায় আরো বেশী অশ্লীল আনন্দে সময় পার করে জীবনের বাস্তবতাকে ভুলে থাকতে চায়। সমাজ জীবনের প্রায় প্রতিটি ঘরে আজ নৈতিকতার চরম অবক্ষয় শুরু হয়ে গিয়েছে। এ অবস্থা থেকে রেহাই পেতে হলে সঠিকভাবে মহান আল্লাহর দেয়া দিবসগুলোকে সমাজের সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন।
রাসূল স. এর শিক্ষাকে সকলের মাঝে উপস্থাপন করে পূত-পবিত্র, সুন্দর ও সাবলীল আনন্দে ঘেরা জীবন পরিচালনায় উদ্বু্দ্ধ করতে হবে, যেন এর দ্বারা মহান আল্লাহর রহমত, ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয় এবং তাদের অন্তরে মৃত্যু-পরবর্তী স্থায়ী জীবনের জবাবদিহীতার চেতনা দৃঢ় হয়। তাহলে নিজেকে অন্যায় পাপ থেকে মুক্ত করে জান্নাত লাভের জন্য সকলেই সচেষ্ট হবে ইনশা’আল্লাহ।
যিলহজ্জ মাসে বিশেষভাবে কুরবানীর ইতিহাস নিয়ে যদি আমরা বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখতে পাই, হযরত ইবরাহীম আ. এর গোটা পরিবার মহান আল্লাহর ভালোবাসা ও সন্তুষ্টির জন্য একমুখী হয়ে ইসলামের বিধানের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকেছেন এবং এই পথে টিকে থাকার জন্য দুনিয়ার জীবনের সর্বোচ্চ ত্যাগ কুরবানীর উদাহরণ রেখে গিয়েছেন। ইবরাহীম আ. এর পরিবারের প্রত্যেক সদস্যই বান্দা হিসেবে, পিতা, স্ত্রী, সন্তান হিসেবেও সুন্দর আদর্শ মুসলিম চরিত্রের নমুনা রেখে গিয়েছেন।
হযরত ইব্রাহীম আ. ও হযরত ঈসমাইল আ. এর জীবনে কুরবানীর ঘটনা অন্তরে উপলব্ধি করে এর শিক্ষাকে লালন করতে হবে। মহান আল্লাহকে ভালবাসতে হবে যেমন ভালোবেসেছিলেন হযরত ইব্রাহীম আ. এবং এই ভালোবাসার রঙ এতো সুন্দর ও গভীর যে, মহান আল্লাহর আদেশ-নিষেধকে বাস্তবে রুপ দেয়ার জন্য অন্তর সদা উন্মুখ হয়ে থাকে। তখন দুনিয়ার এই ক্ষণস্থায়ী জীবনের তুলনায় আখেরাতের জীবনকে প্রাধান্য দেয়ার প্রতিফলন ঘটে ব্যক্তির প্রতিটি কথা ও কাজে।
আর যখন তারা সবর করে এবং আমার আয়াতের প্রতি দৃঢ় প্রত্যয় পোষণ করতে থাকে তখন তাদের মধ্যে এমন নেতা সৃষ্টি করে দেই যারা আমার হুকুম অনুসারে পথপ্রদর্শন করতো।
সূরা আস সাজদাহ:২৪
যারা সত্য-সঠিক পথ অবলস্বন করে আল্লাহ তাদেরকে সঠিক পথে চলার ক্ষেত্রে উন্নতি দান করেন এবং স্থায়িত্বলাভকারী সৎকাজগুলোই তোমার রবের প্রতিদান ও পরিণামের দিক দিয়ে ভালো।
সূরা মরিয়ম: ৭৬
কুরবানীর শিক্ষায় যখন থেকে আমরা মহান প্রতিপালকের ভালোবাসার দিকে উজ্জীবিত হবো, তখন এই সমাজের সকলেই মহান আল্লাহর ভালোবাসার জন্য সকল প্রকার নাফরমানী থেকে সরে এসে সুন্দর পরিবার তথা শান্তির সমাজ উপহার দিবে ইনশা’আল্লাহ।
যিলহজ্জ মাসের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত হজ্জ ও কুরবানীর সঠিক চেতনা ধারণ করে সেভাবে নিজেদের জীবনের প্রতিটি অংগনে এর বাস্তব প্রতিফলন করার অদম্য প্রচেষ্টা চালানো প্রয়োজন।
মহান আল্লাহ আমাদের মাঝে যিলহজ্জ ও কুরবানীর পয়গামকে আমলে পরিণত করার তাওফিক দান করুন।
বিষয়: বিবিধ
৯৪৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন