কুর’আনে মুত্তাকীর কিছু গুনাবলী
লিখেছেন লিখেছেন মিশু ১২ জুন, ২০১৬, ০৯:৩৫:৪৭ সকাল
আসসালামু’আলাইকুম
গোটা মানব জাতির মধ্যে নবী স সবচেয়ে দানশীল ছিলেন। রমজান মাসে জিবরাঈল আ যে সময় তাঁর সাথে সাক্ষাত করতেন সে সময় তিনি সবচেয়ে বেশী দানশীল হয়ে উঠতেন। জিবরাঈল রমজান মাসে প্রতি রাতেই তাঁর সাথে সাক্ষাত করতেন। এভাবেই রমজান মাস অতিবাহিত হত। নবী স (এ সময়) তার সামনে কুর’আন মজীদ পড়ে শুনাতেন। যখন জিবরাঈল তাঁর সাথে সাক্ষাত করতেন তখন তিনি গতিবান বায়ুর চাইতেও বেশী দানশীল হয়ে উঠতেন।
বুখারী, কিতাবুস সাওম: ১৭৬৭
তাহলে এই হাদিস থেকে জানা যায় নবী(স রমযান মাসে কি করতেন –
বেশী বেশী দান করা
কুর’আন পাঠ করা
তাই আমাদের পরিকল্পনা হবে এই দুইটি কাজ যা আমাদের রাসূল স.করে নমুনা দেখিয়ে গিয়েছেন, সেটাকে কেন্দ্র করে ইন শা আল্লাহ।
আর যেহেতু এই সব কিছুর উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া অর্জন, তাই মুত্তাকী হতে হলে আমার কি গুনাবলী প্রয়োজন সেটাও আমরা মিলিয়ে দেখতে পারি, আমি কি মুত্তাকী?
মুত্তাকীদের গুনাবলীর কিছু
আমরা জানতে পারি ---
(সূরা বাকারা২-৫)—এখানে ৫টি গুন যেমনঃ
এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,
১। যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে
২। এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে।
৩। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে
৪। এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে।
৫। আর আখেরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে।
সূরা আল ইমরান(১৩২-১৩৬) এখানে আরো ৪টি গুন
আর তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ ও রসূলের, যাতে তোমাদের উপর রহমত করা হয়।
তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা এবং জান্নাতের দিকে ছুটে যাও যার সীমানা হচ্ছে আসমান ও যমীন, যা তৈরী করা হয়েছে পরহেযগারদের জন্য।
১। যারা স্বচ্ছলতায় ও অভাবের সময় ব্যয় করে,
২। যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে
৩। আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, বস্তুতঃ আল্লাহ সৎকর্মশীলদিগকেই ভালবাসেন।
৪। তারা কখনও কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে কিংবা কোন মন্দ কাজে জড়িত হয়ে নিজের উপর জুলুম করে ফেললে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করবেন? তারা নিজের কৃতকর্মের জন্য হঠকারিতা প্রদর্শন করে না এবং জেনে-শুনে তাই করতে থাকে না।
তাদেরই জন্য প্রতিদান হলো তাদের পালনকর্তার ক্ষমা ও জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হচ্ছে প্রস্রবণ যেখানে তারা থাকবে অনন্তকাল। যারা কাজ করে তাদের জন্য কতইনা চমৎকার প্রতিদান।
Who are the people taqwa
“সে দিন মুত্তাকীরা থাকবেন প্রস্রবণ বিশিষ্ট জান্নাতে। তাঁরা সেখানে উপভোগ করবেন যা তাঁদের প্রভু তখন তাঁদেরকে দিবেন। কারণ, তাঁরা ছিলেন ইতোপূর্বে দুনিয়ার বুকে সৎকর্মপরায়ণ। তাঁরা রাত্রি বেলায় কম ঘুমাতো এবং শেষ রাতে আল্লাহ তা‘আলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করতো। তাদের সম্পদে রয়েছে ভিক্ষুক ও বঞ্চিতের অধিকার”। [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ১৫-১৯]
বিষয়: বিবিধ
১১৯৫ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই মুত্তাকি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন