মৃত বাবা-মা ও অন্যান্য মুসলিম ভাই বোনদের জন্য জীবিতদের পক্ষ থেকে যা করা যেতে পারে।

লিখেছেন লিখেছেন মিশু ২১ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৯:২০:৪১ সকাল

https://www.youtube.com/watch?v=QSRJ7uNR9sg

https://www.youtube.com/watch?v=Qk53I1ipAio

https://www.youtube.com/watch?v=cj0kN5UpFqU

আসসালামু’আলাইকুম

আমাদের সমাজে দেখা যায় একজন ব্যক্তি মারা যাবার পর সেই মৃত ব্যক্তিকে সামনে রেখে অথবা পরে সম্মিলিতভাবে কুরআন ভাগ করে খতমের ব্যবস্থা করা হয়-যা ইসলামের কোন নির্দেশনাতে পাওয়া যায় না।

কুরআন তিলাওয়াত ও অন্যান্য ইবাদাতের সাওয়াব কি মৃতের নিকট পৌঁছায়? মৃত ব্যক্তির সন্তান বা যার পক্ষ থেকেই হোক?

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআন তিলাওয়াত করে নিকট আত্মীয় বা অন্য কোন মৃত ব্যক্তির জন্য ঈসালে সাওয়াব করেন নি। তিলাওয়াতের সাওয়াব যদি মৃত ব্যক্তির নিকট পৌঁছত বা এর দ্বারা সে কোনভাবে উপকৃত হত, তাহলে অবশ্যই তিনি তা করতেন, উম্মতকে বাতলে দিতেন, যেন তাদের মৃতরা উপকৃত হয়। তিনি ছিলেন মুমিনদের উপর দয়ালু ও অনুগ্রহশীল। তার পরবর্তীতে খুলাফায়ে রাশেদিন ও সকল সাহাবায়ে কেরাম তার যথাযথ অনুসরণ করেছেন, আল্লাহ তাদের সকলের উপর সন্তুষ্ট হোন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবাদের আদর্শ অনুসরণ করাই আমাদের জন্য কল্যাণ। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

“খবরদার! তোমরা নতুন আবিষ্কৃত বস্তু থেকে সতর্ক থেকো, কারণ প্রত্যেক নতুন আবিষ্কৃত বস্তু বিদআত, আর প্রত্যেক বিদআত গোমরাহী ও পথভ্রষ্টতা।” (আবু দাউদ: ৩৯৯৩)

তিনি অন্যত্র বলেন :

“যে আমাদের এ দ্বীনে এমন কিছু আবিষ্কার করল, যা এর অন্তর্ভুক্ত নয়, তা পরিত্যক্ত।” (বুখারি: ২৫১২, মুসলিম: ৩২৪৮)

মৃতদের জন্য কুরআন তিলাওয়াত করা বা করানো জায়েয নয়, এর সাওয়াব তাদের নিকট পৌঁছে না, বরং এটা বিদআত। আর আল্লাহই ভালো জানেন।সূত্র

[আল-লাজনাতুদ দায়েমাহ্ লিল বুহুসিল ইলমিয়াহ ওয়াল ইফতা]

“ইলমি গবেষণা ও ফতোয়ার স্থায়ী পরিষদসদস্য ,আব্দুল আযিয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বায

কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে মৃত মা-বাবা জন্য কী ধরনের আমল করা যাবে এবং যে আমলের সওয়াব তাদের নিকট পৌছবে তা উল্লেখ করা হলো:

১. বেশী বেশী দু‘আ করা

২. দান-ছাদকাহ করা, বিশেষ করে সাদাকায়ে জারিয়াহ প্রদান করাঃ

৩. মা-বাবার পক্ষ থেকে সিয়াম পালন

৪. হজ্জ বা উমরাহ করাঃ

৫. মা-বাবার পক্ষ থেকে কুরবানী করাঃ

৬. মা-বাবার ওসিয়ত পূর্ণ করা

৭. মা-বাবার বন্ধুদের সম্মান করা

৮. মা-বাবার আত্নীয়দের সাথে সম্পর্ক রাখা

৯. ঋণ পরিশোধ করা

১০. কাফফারা আদায় করা

১১. ক্ষমা প্রার্থনা করাঃ

১২. মান্নত পূরণ করা

১৩. মা-বাবার ভাল কাজসমূহ জারী রাখা

১৪. কবর যিয়ারত করা

১৫. ওয়াদা করে গেলে তা বাস্তবায়ন করা

১৬. কোন গুনাহের কাজ করে গেলে তা বন্ধ করা

১৭. মা-বাবার পক্ষ থেকে মাফ চাওয়া

মূলত: জানাযার নামায প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মৃত ব্যক্তির জন্য দুআ স্বরূপ।

আজ আমাদের সমাজের বেশীরভাগ মানুষই সঠিক আমলের সন্ধান পেয়েছেন বা পেয়ে থাকেন। প্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের মাঝে সঠিক জ্ঞানের প্রচারের জন্য সচেতনতাও বেড়েছে। কিন্তু দুখঃজনক হলেও সত্য এবং ভয়ানক চিন্তার বিষয় যে আমরা বেশী সংখ্যক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী হয়েও আমলের দিক দিয়ে এখনো অনেক পিছনে,কথাটা শুনতে ভালো না লাগলেও এ যেন “যেই লাউ সেই কদু”অবস্থায় অবতীর্ণ হই। মহান আল্লাহ আমাদের সত্য সঠিক আমলের উপর দৃঢ় হওয়ার তাওফিক দান করুন।

আজ কুলখানি বা চল্লিশা নামে অনুষ্ঠান না করলেও একটু পরিবর্তন করে দোয়ার আয়োজন বা আত্মীয়দের সাথে একটু গরীবদের খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়। জানতে চাওয়া হলে বলে না আমরাতো অনুষ্ঠান সেইভাবে করছি না, শুধুমাত্র আশে পাশের মানুষেরা কি বলবে,তাই এই আয়োজন। আর মানুষকে খাওয়ানোতো সাওয়াবের কাজ তাই না? ইত্যাদি অনেক যুক্তি দিয়ে জায়েয করার অদম্য প্রচেষ্টা চলে। এইখানেই শয়তান সফল। আমরা এতো সেরা হয়েও জ্ঞানের বহরকে কাজে লাগাতে সক্ষম হতে পারি না।

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

“আর রাসূল তোমাদের জন্য যা নিয়ে এসেছেন তা তোমরা গ্রহণ কর এবং তিনি যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক। ” সূরা হাশরঃ ৭

মৃত ব্যক্তি কেবল ঐ সকল জিনিস দ্বারাই উপকার লাভ করতে পারে যেগুলো কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা নির্ধারিত। যেমন

১) রাসূল স. বলেনঃ

“মানুষ মৃত্যু বরণ করলে তার আমলের সমস্ত পথ বন্ধ হয়ে যায় তিনটি ব্যতীতঃ সদকায়ে জারিয়া,এমন ইলম যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় এবং এমন নেককার সন্তান যে তার জন্য দুআ করে”।

মুসলিম:৩০৮৪

২) নিম্নোক্ত হাদীস অনুযায়ীও মৃত ব্যক্তি উপকৃত হয়ে থাকে। আনাস রা. হতে বর্ণিত,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ

“সাত প্রকার কাজের সওয়াব মারা যাওয়ার পরও বান্দার কবরে পৌঁছতে থাকে। যে ব্যক্তি দ্বীনী ইলম শিক্ষা দেয়, নদী-নালায় পানি প্রবাহের ব্যাবস্থা করে,কুপ খনন করে, খেজুর গাছ রোপন করে,মসজিদ তৈরী করে,কুরআনের উত্তরাধিকারী রেখে যায় অথবা এমন সুসন্তান রেখে যায় যে তার মারা যাওয়ার পরও তার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমার জন্য দুয়া করে।

মুসনাদে বাযযার,কিতাবুল হিলয়া, আবু নুওয়াইম। দেখুন: আল্লামা আলবানী (রাহHappy কর্তৃক রচিত সহীহুত তারগীব ওয়াত্ তারহীব:৭৩

৩) মৃত ব্যক্তি যদি তার জীবদ্দশায় কোন পরিত্যক্ত সুন্নতকে আমলের মাধ্যমে পূণর্জীবিত করে এবং তার মৃত্যুর পরেও উক্ত আমল চালু থাকে তবে এর সওয়াব সে কবরে থাকা অবস্থায়ও লাভ করতে থাকবে। যেমন,বিশুদ্ধ সূত্রে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

“যে ব্যক্তি ইসলামে কোন সুন্নত চালু করল সে ব্যক্তি এই সুন্নাত চালু করার বিনিময়ে সওয়াব পাবে এবং তার মারা যাওয়ার পর যত মানুষ উক্ত সুন্নাতের উপর আমল করবে তাদেরও সওয়াব সে পেতে থাকবে। অথচ যারা আমল করবে তাদের সওয়াব কিছুই হ্রাস করা হবে না।

”সহীহ মুসলিম: ১০১৭

৪) মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোন দান-সদকা করা হলে মৃত ব্যক্তি তার সওয়াব লাভ করে। যেমন,সহীহ বুখারীতে উদ্ধৃত হয়েছে:

ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত,সা’দ ইব্ন উবাদাহ রা. এর মা মারা গেল। এ সময় তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন,হে আল্লাহর রাসূল,আমার মা মারা গেছে। সে সময় আমি অনুপস্থিত ছিলাম। আমি তার পক্ষ থেকে সদাকা করলে তার কি কোন উপকার হবে? তিনি বললেন,“হ্যাঁ”। তিনি বললেন,তাহলে আমি আপনাকে স্বাক্ষী রেখে বলছি,আমি আমার মিখরাফ নামক প্রাচীর বেষ্টিত খেজুর বাগানটি আমার মায়ের উদ্দেশ্যে সদকা করলাম। ”

সহীহ বুখারী।

৫) সা’দ বিন উবাদাহ রা. থেকে বর্ণিত,তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞাস করলেন:

“হে আল্লাহর রাসূল,আমার মা মৃত্যু বরণ করেছেন,তার পক্ষে কোন দানটি সবচেয়ে ভাল হবে? তিনি বললেন,“পানি”। তারপর সাদ রা. একটি কুপ খনন করে ঘোষণা করলেন, “এই কুপ সাদের মায়ের উদ্দেশ্যে দান করা হল। ” সহীহুত্ তারগীব ওয়াত্ তারহী, আলবানী রহ.: ৯৬২।

৬) সহীহ মুসলিমে বর্ণিত রয়েছে,এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বললেন,আমার পিতা-মাতা অর্থ-সম্পদ রেখে মারা গেছেন। এ ব্যাপারে তারা আমাকে কোন ওসিয়ত করে যাননি। এখন আমি তাদের উদ্দেশ্যে দান-সদকা করলে তা তাদের জন্যে কি যথেষ্ট হবে?তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,“হ্যাঁ”।

৭) জীবিত মুসলিমগণ মৃত মানুষের জন্য দুআ ও ইস্তেগফার করলে তাদের নিকট এর সওয়াব পৌঁছে। যেমন,কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

“যারা তাদের পরবর্তীতে আগমণ করেছে (অর্থাৎ পরে ইসলাম গ্রহণ করেছে) তারা বলে,হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদেরকে এবং আমাদের পূর্বে যে সকল ঈমানদার ভাই অতিবাহিত হয়ে গেছেন তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং মুমিনদের ব্যাপারে আমাদের অন্তরে হিংসা-বিদ্বেষ বদ্ধমূল রেখো না। হে আমাদের প্রতিপালক,আপনি তো পরম দয়ালু,অতি মেহেরবান। ” সূরা হাশর: ১০

এমন জিনিস দান করা উত্তম যা দীর্ঘ দিন এবং স্থায়ীভাবে মানুষের উপকারে আসে: হাদীসে বর্ণিত হয়েছে:

উপকারী এবং স্থায়ী দান কয়েক প্রকার:

১) পানির ব্যবস্থা করা (বিশুদ্ধ পানির জন্য ফিল্টার দিতে পারেন)

২) এতিমের/ বিধবার প্রতিপালনের দায়িত্ব গ্রহণ করা

৩) অসহায় মানুষের বাসস্থান/কর্ম সংস্থান তৈরি করা

৪) গরীব তালিবে ইলমকে সাহায্য-সহযোগিতা করা

৫) দাতব্য চিকিৎসালয় বা হাসপাতাল নির্মান, একটি হুইল চেয়ার বা বেড বা চেয়ার দান করা

৬) মসজিদ নির্মান। মসজিদে ফ্যান,বই, ইত্যাদি হাদিয়া হিসেবে দেয়া।

৭। জ্ঞান অর্জনের জন্য সঠিক বই হাদিয়া দেয়া ( বেসিক জ্ঞানের জন্য সহিহ ঈমান,সালাত,অজু,গোসল ফরয ওয়াজিব,শিরক বিদয়াত ইত্যাদি)

৮। রক্ত দান করা/ চিকিৎসায় সহযোগীতা করা

৯। ফলদায়ক গাছ লাগানো ( আপনি দূরে কোথাও সফরে যাচ্ছেন, রাস্তার পাশের পড়ে থাকা জমিতে ফলের বীজ ছিটিয়ে দিতে পারেন)

১০। কল্যানমূলক কাজ যা মানুষের মৌ্লিক চাহিদাকে পূর্ণ করে সেটা শরীয়ত মুতাবিক ব্যবস্থা করে দেয়া।

১১। কল্যানমূলক জ্ঞান বিতরন

জীবিত মানুষের পক্ষ থেকে মৃত মানুষের নিকট সওয়াব পৌঁছানোর ব্যাপারে উপরোল্লোখিত হাদীস সমূহ দ্বারা আমাদের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

বিষয়: বিবিধ

২৫৩৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

357355
২১ জানুয়ারি ২০১৬ সকাল ১০:০৪
বিবর্ন সন্ধা লিখেছেন : আললাহ আমাদেরকে ভালো কাজের জন্য কবুল করুন .
আমিন।
357356
২১ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ১২:১২
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : কবর জিয়ারতের নিয়মটা জানাবেন কি?
২৭ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ১২:৫৫
296859
মিশু লিখেছেন : জাযাকাল্লাহী খাইরান কবর যিয়ারতের সঠিক পদ্ধতি:
কবর যিয়ারতের সুন্নত সম্মত নিয়ম হল,

১) মৃত্যু ও আখিরাতের কথা স্বরণ করার নিয়তে করব যিয়ারত করতে যাওয়া। আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে,

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর মায়ের কবর যিয়ারত করতে গিয়ে কাঁদলেন এবং তাঁর সাথে যে সাহাবীগণ ছিলেন তারাও কাঁদলেন। অতঃপর তিনি বললেন,“আমি আমার মায়ের মাগফেরাতের জন্য আল্লাহর কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম কিন্তু আমাকে সে অনুমতি প্রদান করা হয়নি। তবে আমি মায়ের কবর যিয়ারতের জন্যে আবেদন জানালে তিনি তা মঞ্জুর করেন। অতএব, তোমরা কবর যিয়ারত কর। কেননা কবর যিয়ারত করলে মৃত্যুর কথা স্মরণ হয়। ” সহিহ মুসলিম:৯৭৬

অন্য বর্ণনায় রয়েছে,
“সুতরাং তোমরা কবর যিয়ারত কর, কেননা এতে আখিরাতের কথা স্বরণ হয়।”

২) কবর যিয়ারতের দুয়া পাঠ করা। বুরাইদা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাহাবীগণ কবর যিয়ারত করতে গেলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে এই দুয়াটি পড়তে বলতেন:

“কবর গৃহের হে মুমিন-মুসলিম অধিবাসীগণ,আপনাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ চাইলে আমরাও আপনাদের সাথে মিলিত হব। আমি আমাদের জন্য এবং তোমাদের জন্য আল্লাহর নিকট নিরাপত্তা কামনা করছি। ” সহিহ মুসলিম:১৬২০

অত:পর মৃতদের গুনাহ-খাতা ও ভুলত্রুটি মোচনের জন্য আল্লাহর নিকট দুয়া করা। যেমন কুরআনে যে আল্লাহ তায়ালা মৃতদের জন্য দুয়া শিখিয়েছেন। তিনি বলেন:
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ
“হে আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে এবং আমাদের ভাইদেরকে ক্ষমা করে দাও যারা ঈমানের সাথে আমাদের আগে (দুনিয়া) থেকে চলে গেছে। ” সুরা হাসর:৫৯

সুনানে আবূ দাঊদে বর্ণিত হয়েছে,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাফন ক্রিয়া শেষ করে কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বলতেন,
اسْتَغْفِرُوا لأَخِيكُمْ وَسَلُوا لَهُ التَّثْبِيتَ فَإِنَّهُ الآنَ يُسْأَلُ
“তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমা চাও। দুয়া কর যেন সে স্থির থাকতে পারে। কারণ, তাকে এখনই প্রশ্ন করা হবে।” আবু দাউদ:২৮০৪

মৃতদের জন্য হাত তুলে দুয়া করা:
দুয়া করার ক্ষেত্রে হাত তুলে দুয়া করা জায়েয রয়েছে। যেমন উম্মুল মুমিনীন আয়িশা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
أَنَّه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَارَ القُبُوْرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ وَدَعَا لِأَهْلِهَا
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাকী গোরস্থান যিয়ারতে গিয়ে কবরবাসীদের জন্য দুহাত তুলে দুয়া করলেন।” সহিহ মুসলিম:৯৭৪

মৃতদের জন্য সম্মিলিতভাবে দুয়া করার বিধান:
তবে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার ব্যাপারে দলীল নাই। তাই অনেক আলেম কবর যিয়ারত করার সময় একজন দুয়া করবে আর বাকি সবাই ‘আমীন’ ‘আমীন’ বলবে এভাবে সম্মিলিত দুয়াকে বিদয়াত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

সউদী আরবের স্থায়ী ফতোয়া কমিটির [ফতোয়া হল, “দুয়া একটি ইবাদত। আর ইবাদত দলীলের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং আল্লাহর বিধানের বাইরে কারও জন্য ইবাদত করা জায়েজ নয়। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এটি প্রমাণিত নয় যে, তিনি জানাযা শেষ করে সাহাবীদেরকে সাথে নিয়ে সম্মিলিতভাবে দুয়া করেছেন। এ ক্ষেত্রে যে জিনিসটি প্রমাণিত তা হল, মৃত ব্যক্তিকে কবর দেয়া সম্পন্ন হলে তিনি সাহাবীদেরকে লক্ষ্য করে বলতেন, “তোমাদের ভাইকে এখনই প্রশ্ন করা হবে। অত:এব দুয়া কর যেন সে (প্রশ্নোত্তরের সময়) দৃঢ় থাকতে পারে।” তাহলে এ থেকে প্রমাণিত হল যে, জানাযার সালাত শেষ করে সম্মিলিতভাবে দুয়া করা জায়েয নয় এবং এটি একটি বিদয়াত।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ দুপুর ১২:৪৭
298556
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : ধন্যবাদ, ভাই।
357361
২১ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ০১:০৯
আবু জান্নাত লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

৩. মা-বাবার পক্ষ থেকে সিয়াম পালন

৪. হজ্জ বা উমরাহ করাঃ

৫. মা-বাবার পক্ষ থেকে কুরবানী করাঃ


এই তিনটির ব্যপারে কোন দলিল থাকলে পেশ করবেন আশাকরি।

কবর যিয়ারাতের সময় কোন সূরা কেরাত, দোয়া, দরুদ, ইস্তেগফার পাঠ করে মাইয়্যেতের উপর কি ছাওয়াব পৌছানোর দোয়া করা যাবে?

সাধারণত কুরআন পাঠ করে কি উহার ছাওয়াব মাইয়্যেতের উপর পৌছানোর দোয়া করা যাবে?

এতিম মিসকিনদের খানা খাওয়ানোর ছাওয়াব কি মাইয়্যেতের উপর পৌছানোর দোয়া করা যাবে?

আশা করি কুরআন ও সহীহ হাদিসের আলোকে উত্তর দিবেন।

জাযাকাল্লাহ খাইর

২৭ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ১২:৫৬
296860
মিশু লিখেছেন : জাযাকাল্লাহী খাইরান। আলাদাভাবে পোষ্ট করবো ইন শা আল্লাহ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File