চলুন মনকে বুঝার চেষ্টা করি --৯
লিখেছেন লিখেছেন মিশু ১৯ নভেম্বর, ২০১৫, ০৯:৩৪:২২ সকাল
আসসালামু’আলাইকুম
মহান আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন,
হে নবী! বলে দাও, যদি তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান ও তোমাদের ভাই তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের আত্মীয়-স্বজন, তোমাদের উপার্জিত সম্পদ, তোমাদের যে ব্যবসায়ে মন্দা দেখা দেয়ার ভয়ে তোমরা তটস্থ থাক এবং তোমাদের যে বাসস্থানকে তোমরা খুবই পছন্দ কর-এসব যদি আল্লাহ ও তার রসূল এবং তাঁর পথে চূড়ান্ত প্রচেষ্টা করার চাইতে তোমাদের কাছে বেশী প্রিয় হয়, তাহলে আল্লাহর ফায়সালা তোমাদের কাছে না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা কর আল্লাহ ফাসেকদেরকে কখনো সত্য পথের সন্ধান দেন না। ।
সূরা আত তাওবা ২৪
মূলত মহান আল্লাহ এই প্রেম ভালোবাসা অন্তরে দিয়ে আবার এর একটা শ্রেনী দিয়ে দিয়েছেন। সেই শ্রেনী এই আয়াত থেকে জানা যায়-
১। মহান আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা
২। প্রিয় রাসূল স.এর প্রতি ভালোবাসা
৩। মহান আল্লাহর নির্দেশিত ও রাসূলের স. প্রদর্শিত পথে টিকে থাকার চূড়ান্ত প্রচেষ্টার ভালোবাসা
এরপর আসবে পিতা মাতা,স্ত্রী,সন্তান সন্ততি, ভাই বোন ও আত্মীয় স্বজন ইত্যাদি অন্যান্য ।
আমাদের পরিবারগুলোতে শুরুতেই এই ভালোবাসার স্তর শেখালে অনেক ধরনের ফেতনা থেকে নিজে পরিবার ও সমাজকে হেফাজত করা যেতো।
কিন্তু আমরা প্রথমেই সন্তানকে শেখাই,
তুমি কাকে ভালোবাসো? আম্মুকে না আব্বুকে?
আমরা শিখাই না যে, তুমি আম্মু আব্বুকে চতুর্থ স্থানে এসে ভালোবাসবে। প্রথম তিনটি স্থানের ভালোবাসা কে পাবে? ঐ আয়াতের কথা শিখিয়ে দেই কি?
আজ আমাদের সমাজে তরুন তরুনী হওয়ার আগেই বাল্যাবস্থায়ই দেখা যাচ্ছে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি ভালোবাসায় জড়িয়ে পিতা মাতার ভালোবাসাকেই গৌণ করে ফেলছে সেখানে প্রথম তিন স্তরের চিন্তাতো তাদের শিক্ষাতেই নাই। আর এরই ফলাফলে দেখা যায় মানসিক ও শারিরীক দুইভাবেই সন্তানটি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। গান বাজনা,রাত জাগা বিভিন্নভাবে সময়ের অপূরনীয় অপব্যবহার করে জীবনকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
বিপরীত লিঙ্গের প্রতি প্রেম-ভালোবাসার ক্ষতি জানার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, এটা হলো হৃদয়ের বন্দিদশা, আর প্রীতিভাজনের জন্য দাসত্ব, প্রেম-ভালোবাসা অসম্মান, অপদস্থতা ও কষ্টের দরজা।
হৃদয় যখন আল্লাহর মহব্বত ও স্মরণ থেকে শূন্য হয়ে যায়, আল্লাহর কাছে দুয়া-মুনাজাত ও আল্লাহর কালামের স্বাদ গ্রহণ করা থেকে যখন শূন্য হয়ে যায় তখন নারীর ভালোবাসা, ছবির প্রতি আগ্রহ, গান-বাজনা শোনার আগ্রহ তার জায়গা দখল করে।
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ রা. বলেন
’ ইশক বা প্রেম একটি মানসিক ব্যাধি। আর যখন তা প্রকট আকার ধারণ করে শরীরকেও তা প্রভাবিত করে। সে হিসেবে তা শরীরের পক্ষেও ব্যাধি। মস্তিষ্কের জন্যও তা ব্যাধি। এ-জন্যই বলা হয়েছে, এটা একটা হৃদয়জাত ব্যাধি। শরীরের ক্ষেত্রে এ ব্যাধির প্রকাশ ঘটে দুর্বলতা ও শরীর শুকিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে।‘
তিনি আরও বলেন, [দ্র: মাজমুউল ফাতওয়া: ১০/১৩২] ’ পরনারীর প্রেমে এমন সব ফাসাদ রয়েছে যা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেও গুনে শেষ করতে পারবে না। এটা এমন ব্যাধির একটি যা মানুষের দীনকে নষ্ট করে দেয়। মানুষের বুদ্ধি-বিবেচনাকে নষ্ট করে দেয়, অতঃপর শরীরকেও নষ্ট করে।‘
শূন্য, দুর্বল, পরাস্ত হৃদয়েই শুধুমাত্র অনৈতিক ও অযৌক্তিক ভালোবাসা স্থান পায়। আর বিপরীত লিঙ্গের প্রতি ভালোবাসা ওই হৃদয়কে স্পর্শ করতে পারে না যে হৃদয়ে আল্লাহর ভালোবাসা ভর্তি রয়েছে ।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, 'পানাহার, পোশাক-আশাক, অবৈধ ভালবাসা ও গান-বাজনায় মগ্নতা মানুষকে উন্মাদ বানিয়ে দেয়। কারো অন্তরে যখন তার ভালবাসার বস্তুটির চিত্র ফুটে উঠে, তখন সে তাতেই নিমজ্জিত হয়ে পড়ে, এগুলো একাকার হয়ে যায় তার সত্তার সঙ্গে, যা থেকে উত্তরণ সম্ভব হয় না তার পক্ষে। এমন হয় কখনো লোভের কারণে, যেমন সম্পদ, সম্মান ইত্যাদির জন্য। কখনো হয় ভয়ের করণে, যেমন দুশমন বা অন্য কারো আতঙ্কে আতঙ্কিত ব্যক্তির অন্তর। প্রবৃত্তির অনুসারীরা আরো অনেক কারণে পানিতে নিমজ্জিত ব্যক্তির ন্যায় প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণে আপাত-মস্তক নিমজ্জিত হয়ে থাকে।' (মাজমুআতুল ফতওয়া : ১০ / ৫৯৪)
যা কিছু মানুষের মনোজগৎ ও বিচার-বিবেচনা শক্তিকে নষ্ট করে দেয়ার মাধ্যম তা বন্ধ করার জন্য শরিয়ত সকল ব্যবস্থাই গ্রহণ করেছে। আর প্রেম-ভালোবাসা, নরনারীর সম্পর্ক, সব থেকে বড় ব্যাধি ও মারাত্মক আপদ।
শায়খ ইবনে তাইমিয়াহ রা. বলেন: [দ্র:মাজমুউল ফাতওয়া: ১০/১৩৫] হৃদয় যদি একমাত্র আল্লাহকে ভালবাসে, দীনকে একমাত্র তার জন্য একনিষ্ঠ করে, তাহলে অন্য কারও ভালোবাসার মুসীবত তাকে স্পর্শ করতে পারে না। প্রেম-ভালোবাসার কথা তো বহু দূরে। প্রেম-ভালোবাসায় লিপ্ত হওয়ার অর্থ, হৃদয়ে আল্লাহর মহব্বতের অপূর্ণতা। এ-কারণে ইউসুফ আলাইহিস সালাম, যিনি একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে মহব্বত করতেন, তিনি এই মানবীয় ইশক-মহব্বত থেকে বেঁচে গেছেন। আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে:
(এমনি ভাবেই হয়েছে যাতে আমি তার থেকে মন্দ ও নির্লজ্জ বিষয় সরিয়ে দেই। নিশ্চয় সে আমার মনোনীত বান্দাদের মধ্যে একজন ছিল।) [ সূরা ইউসূফ: ২৪]
শুক্রবার জুম’আর দিনের জন্য ভিডিওগুলো দেখার আমন্ত্রন রইলো পরিবারের সবাইকে নিয়ে।
Pl take time to watch these video with family .
সুরা কাহাফ
https://www.youtube.com/watch?v=iP4KdANILDU
https://youtu.be/FGJB-MUAwNA
https://www.youtube.com/watch?v=NjIFnTNfsyU
https://www.youtube.com/watch?v=nLdPo8QCz0c
বিষয়: বিবিধ
৯৭৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন