চলুন মনকে বুঝার চেষ্টা করি --৭

লিখেছেন লিখেছেন মিশু ১০ নভেম্বর, ২০১৫, ০৯:১০:৩৫ সকাল

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে।

প্রবৃত্তির বা নফসের আনুগত্য করলে যে ধরনের ক্ষতি হতে পারে তা মহান আল্লাহ কুর’আনেও বলে দিয়েছেন। একজন মানুষ তার মর্যাদা থেকে নিচে পড়ে যাওয়ার জন্য আর কিছু লাগে না। ইবলিশ অন্যায় করে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা না চাওয়ার কারনও নফসের আনুগত্য। আর পরিনতিতে সে চিরবঞ্চিত,ধিকৃত ও জাহান্নামী হয়ে গেলো।

মহান আল্লাহ বলেছেন,

কখনো কি তুমি সেই ব্যক্তির অবস্থা ভেবে দেখেছো, যে তার নিজের প্রবৃত্তির কামনাকে প্রভু রূপে গ্রহণ করেছে? তুমি কি এহেন ব্যক্তিকে সঠিক পথে নিয়ে আসার দায়িত্ব নিতে পার৷ তুমি কি মনে করো তাদের অধিকাংশ লোক শোনে ও বোঝে? তারা পশুর মতো বরং তারও অধম৷

সূরা আল ফোরকান:৪৩-৪৪

আবু উমামাহ রেওয়ায়াত করেছেন , রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :

"এ আকাশের নীচে যতগুলো উপাস্যের উপাসনা করা হয়ে থাকে , তাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট উপাস্য হচ্ছে এমন প্রবৃত্তির কামনা করা যার অনুসরণ করা হয়।"

(তাবরানী)

যে ব্যক্তি নিজের কামনাকে বুদ্ধির অধীনে রাখে এবং বুদ্ধি ব্যবহার করে নিজের জন্য ন্যায় ও অন্যায়ের পথের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় , সে যদি কোন ধরনের শির্কী বা কুফরী কর্মে লিপ্ত হয়েও পড়ে তাহলে তাকে বুঝিয়ে সঠিক পথে আনা যেতে পারে এবং সে সঠিক পথ অবলম্বন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পর তার উপর অবিচল থাকবে এ আস্থাও পোষণ করা যেতে পারে। কিন্তু প্রবৃত্তির দাস হচ্ছে একটি লাগামহীম উট। তার কামনা তাকে যেদিকে নিয়ে যাবে সে পথহারা হয়ে সেদিকেই দৌড়াতে থাকবে। তার মনে ন্যায় ও অন্যায় এবং হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্য করার এবং একটিকে ত্যাগ করে অন্যটিকে গ্রহণ করার কোন চিন্তা আদৌ সক্রিয় থাকে না। তাহলে কে তাকে বুঝিয়ে সঠিক পথে আনতে পারে।

আর কে তার চেয়ে বড় জালেম, যাকে তার রবের আয়াত শুনিয়ে উপদেশ দেয়ার পর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং সেই খারাপ পরিণতির কথা ভুলে যায় যার সাজ-সরঞ্জাম সে নিজের জন্য নিজের হাতে তৈরি করেছে ? (যারা এ কর্মনীতি অবলম্বন করেছে) তাদের অন্তরের ওপর আমি আবরণ টেনে দিয়েছি, যা তাদেরকে কুরআনের কথা বুঝতে দেয় না এবং তাদের কানে বধিরতা সৃষ্টি করে দিয়েছি৷ তুমি তাদেরকে সৎপথের দিকে যতই আহ্বান কর না কেন তারা এ অবস্থায় কখনো সৎপথে আসবে না৷

সূরা কাহফ:৫৭

ওয়াহাব ইবনে মুনাব্বেহ বলেন, “দ্বীনের জন্য সবচেয়ে সাহায্যকারী চরিত্র হলো: আল্লাহমুখী হওয়া এবং ধ্বংসের জন্য হলো প্রবৃত্তির গোলামী। প্রবৃত্তির গোলামীর মধ্যে হচ্ছে দুনিয়ামুখী হওয়া। দুনিয়ামুখী হওয়ার মধ্য হতে সম্পদ ও পদের ভালবাসা। আর এই ভালবাসা এক পর্যায়ে হারামকে হালাল করে আল্লাহর অসন্তুষ্টিতে নিয়ে যায়। আর আল্লাহর অসন্তুষ্টি এমন একটি রোগ যার ঔষধ আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া নিরাময় করা যায় না। আল্লাহর সন্তুষ্টি এমন একটি ঔষধ যার পরে আর কোন রোগ আক্রমণ করতে পারে না। অতএব যে তার আল্লাহকে সন্তুষ্টি করতে চাবে, তাকে তার প্রবৃত্তিকে নারাজ করাতেই হবে, কারন যে তার প্রবৃত্তিকে নারাজ করাতে পারবে না, সে তার প্রতিপালককে খুশি বা সন্তুষ্ট করতে পারবে না। আর মানুষ যখন তার প্রতি দ্বীনের কোন কাজ ভারী মনে করে ছেড়ে দিতে থাকবে,একদিন এমন হবে যে তার সাথে দ্বীনের আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না”

আলী ইবনে আবি তালিব বলেন, “আমি দুটি জিনিষকে বেশী ভয় পাই,বড় আশা ও প্রবৃত্তির গোলামী। কারন বড় আশা আখেরাতকে ভুলিয়ে দেয় এবং প্রবৃত্তির গোলামী সত্যকে গ্রহন করা থেকে বিরত রাখে। জেনে রেখো দুনিয়া পিছনে যাচ্ছে আর আখেরাত সামনে এগিয়ে আসছে। আর প্রতিটির সন্তান রয়েছে। তাই আখেরাতের সন্তান হওয়ার চেষ্টা করো, দুনিয়ার সন্তান হওয়ার চেষ্টা করোনা। এই দুনিয়াতে আমল আছে হিসেব নেই আর আখেরাতে হিসেব আছে আমল নেই”।



.

বিষয়: বিবিধ

১১৪৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

349265
১০ নভেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৪:০৩
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : সুন্দর পোষ্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ।
১১ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:১৭
289947
মিশু লিখেছেন : জাযাকাল্লাহী খাইরান।
349346
১১ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:১৬
মিশু লিখেছেন : ওয়াআলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
সুপ্রিয়া আপু তোমাকেও জাযাকাল্লাহী খাইরান। মহান আল্লাহ আমাদের শেষ পর্যন্ত হেদায়েতের পথে থাকার তাওফিক দান করুন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File