চলুন মনকে বুঝার চেষ্টা করি-১
লিখেছেন লিখেছেন মিশু ০৩ নভেম্বর, ২০১৫, ০৫:০১:০৪ বিকাল
আসসালামু’আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
দয়াময় মেহেরবান আল্লাহর নামে।
রসূল (সঃ) আমাদের উদ্দেশ্যে বর্গাকৃ্তির একটি চতুর্ভুজ আঁকলেন, অতঃপর এর মাঝ বরাবর একটি সরলরেখা টানলেন, অতঃপর চতুর্ভুজের বাইরে দিয়ে একটি সরল রেখা টানলেন, অতঃপর মাঝের সরলরেখার চতুর্দিকে অনেকগুলো রেখা টানলেন এবং বলেন -- এটি হলো আদম-সন্তান এবং বেষ্টনি হল তার জীবনকালের সীমারেখা,যা তাকে বেষ্টন করে রেখেছে। মধ্যখানের সরল রেখাটি হল মানুষ, এর চারপাশের রেখা সমূহ হল তার বিপদাপদ। সে এর একটি থেকে মুক্তি পেলে অপরটি তাকে দংশন করে। আর বাইরের রেখাটি হল তার কামনা-বাসনা।–বুখারী
রসূল (সঃ) বলেছেন-আদম সন্তান বৃদ্ধ হয়ে গেলেও তার দু’টি স্বভাব যুবকই থাকেঃ সম্পদের লোভ ও বেঁচে থাকার লালসা।– বুখারী
প্রতিটি কাজের পেছনে থাকে প্রেরনা ও উদ্দীপনা, আর উদ্দীপনার পেছনেই লুকিয়ে থাকে অলসতা ও কর্মবিমুখতা। কাজেই যে ব্যক্তি সোজা পথে চলে এবং মাঝামাঝি পর্যায়ে নিজেকে সোজাভাবে কাজে অটল রাখতে পারে তার সাফল্য লাভের আশা করতে পার। আর যদি তার দিকে আংগুলে ইশারা করা হয় (লোক দেখানো আমল করে) তাহলে তাকে সফলকাম লোকদের মধ্যে গন্য করোনা।–তিরমিযী
তোমরা আল্লাহকে যথাযথভাবে লজ্জা কর। আমরা বললাম, হে আল্লাহর নবী ! আমরাতো নিশ্চয়ই লজ্জা করি, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। তিনি বলেন- তা নয়, বরং আল্লাহকে যথাযথভাবে লজ্জা করার অর্থ এই যে, তুমি তোমার মাথা এবং এতে যা কিছু আছে তা সংরক্ষন করবে এবং পেট ও এতে যা কিছু আছে তা হেফাযত করবে, মৃত্যুকে এবং এরপর পঁচে-গলে যাবার কথা স্মরন করবে। আর যে ব্যক্তি পরকালের আশা করে, সে যেন পার্থিব আড়ম্বর পরিত্যাগ করে। যে ব্যক্তি এসব কাজ করতে পারে সে-ই আল্লাহকে যথাযথভাবে লজ্জা করে।
তিরমিযী
মানব-সত্তা বিচিত্র। মানুষের দুটো সত্তা রয়েছে।
১। দেহ সত্তা ২। নৈতিক সত্তা
দেহ সত্তা হলো বস্ত সত্তা এবং দুনিয়াটাও বস্ত সত্তা, তাই দুনিয়ার প্রতি প্রবল আকর্ষন।
পৃথিবীতে ভোগের যা কিছু আছে সবই দেহ ভোগ করতে চায়। দেহের মুখপাত্র হলো মন। মন যা চায় তা দেহেরই দাবী। কোর’আনে দেহের দাবীর নাম নাফস বলা হয়েছে।
মানুষের বিবেক বা নৈ্তিক সত্তাই দেহের দাবী সম্পর্কে বিচার-বিবেচনা করে। এ বিবেকই হলো আসল মানুষ। কোর’আনের ভাষায় একে বলে রুহ।
দেহ হাজারো দাবী করতে পারে কিন্তু রুহ বা বিবেকের যোগ্যতা থাকলে তা নিয়ন্ত্রন সম্ভব।
মনের উপর লাগাম ধরতে হবে রসূল(সঃ) এর দেখানো পথে।
সব সময় মহান আল্লাহকে স্মরনে রাখলেই মনের লাগাম ধরা সহজ হতে পারে।
মন এমন একটা ঘোড়া যার পিঠ কখনো খালি থাকে না,কেউ না কেউ সওয়ার হয়।
আপনার পিঠে কে সওয়ার আছে একটু দেখুন তো?
• নফস
• সমাজ স্রোতধারা যা আল্লাহর ও রাসূলের বিপরীতমুখী
• প্রতিষ্ঠালাভের মোহ যদিও আল্লাহর আদেশের বাইরে হয়
• পাছে লোকে কিছু বলে
* শয়তান ও তাগুত
• আখেরাতমুখী যা আল্লাহর ও রাসূলের স. প্রদর্শিত
যে ব্যক্তি নিজের নফসকে নিয়ন্ত্রন করে এবং মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের জন্য কাজ করে সেই প্রকৃত বুদ্ধিমান। আর যে ব্যক্তি নিজেকে কুপ্রবৃত্তির গোলাম বানায় অথচ আল্লাহর নিকট প্রত্যাশা করে সেই অক্ষম।
তিরমিযী
তাই রসূলের দেখানো পদ্ধতিতে মানুষ এ বস্তজগত ও দেহযন্ত্রকে আল্লাহর পছন্দনীয় পন্থায় ব্যবহার করে সাফল্যমন্ডিত হতে পারে।
“রসূল (সঃ) প্রায়ই এই দোয়া করতেন—(ইয়া মুক্বাল্লিবাল ক্বুলুবি ছাব্বিত ক্বলবি য়ালা দ্বীনিক) হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী ! আমার অন্তরকে তোমার দীনের উপর মজবুত(দৃঢ়) রাখো।
সাহাবা বললেন, হে আল্লাহর নবী ! আমরা আপনার প্রতি এবং আপনি যা কিছু নিয়ে এসেছেন তার প্রতি ঈমান এনেছি।আপনি কি আমাদের সম্পর্কে কোনরুপ আশংকা করেন?
তিনি বলেন-হাঁ, কেননা সমস্ত অন্তরই আল্লাহর আংগুলসমূহের মধ্যকার দুটি আংগুলের মাঝখানে রয়েছে। তিনি তা যেভাবে ইচ্ছা পরিবর্তন করেন। তিরমিযী
বিষয়: বিবিধ
৯৬২ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মহান আল্লাহ আমাদের আমলিয়াত মুমিন হওয়ার তাওফিক দান করুন।
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন