সময়ের দাবী আত্মউপলব্ধিঃ ১৬ ও ১৭

লিখেছেন লিখেছেন মিশু ২৯ জুন, ২০১৫, ০৮:৫৬:১৪ রাত

সময়ের দাবী আত্মউপলব্ধিঃ ১৬

আসসালামু’আলাইকুম।

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহতা’আলার নামে

মহান আল্লাহ বলেছেনঃ হে জনগন,তোমাদের রবকে ভয় কর যিনি তোমাদিগকে একটি প্রাণ থেকে সৃষ্টি করেছেন,উহা হতে উহার জুড়ি তৈরী করেছেন এবং এই উভয় হতে বহু সংখ্যক পুরুষ অ স্ত্রীলোক দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন। সেই আল্লাহকে ভয় কর যার দোহাই দিয়ে তোমরা পরস্পরের নিকট হতে নিজের নিজের হক দাবী কর। এবং আত্মীয়সুত্র ও নিকটত্বের সম্পর্ক বিনষ্ট করা হতে বিরত থাক। নিশ্চিত জেনো যে,আল্লাহ তোমাদের উপর কড়া দৃষ্টি রাখছেন।

সূরা আন নিসাঃ০১

এই আয়াতটি বিয়ের সময় কাজী সাহেব বলে থাকেন আমার জানা মতে। কিন্তু আমরা কি জানি এই আয়াতে কি শিক্ষা ও আদেশ রয়েছে একজন নব বর ও বধূর জন্য? যদি আমরা বুঝতাম এবং আমরা শুনলাম ও মানলাম এই নীতিতে আমল করতাম তাহলে হয়তো এতো দ্বন্ধ হতো না।

উভয় পক্ষের আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক বিনষ্ট করে এই ধরনের ভূমিকা থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে আল্লাহকে ভয় করে। মহান আল্লাহ তীক্ষ্ণ নজর রেখেছেন উভয়ের প্রতি।

আত্মীয়ের হকের ব্যাপারে অনেক জোড়ালো হাদীস এসেছে। সেটা আরেক অধ্যায় যা আলোচনার দাবী রাখে। কোন নর বা নারী বিয়ে করেন সম্পর্ক ছেদ করার জন্য এটা কোনভাবেই সত্য নয়। এই ধরনের পরিস্থিতি হওয়ার পিছনে অনেক কারন থাকে। অবশ্যই আমাদের সুন্দর সত্য উদার মন নিয়ে মহান আল্লাহর ভয়কে সামনে রেখে আখেরাতের ফয়সালার কথা চিন্তা করেই আমাদের নিজেদের অবস্থান যাচাই করা প্রয়োজন এবং সেই ভাবে কোর’আন হাদীসের আলোকে সংশোধিত হতে হবে যদি আমরা জান্নাত পেতে চাই। এই ব্যাপারে আমি মনে করি প্রতিটি নর বা নারী বিয়ের পূর্বে কমপক্ষে ৩ মাস কোর’আন হাদীসের আলোকে পড়া শুনা করে বিবাহীত জীবন সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা প্রয়োজন। অভিভাবকদের এই ব্যাপারে ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।

আমি আগের অনেক গুলো পর্বে স্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে বলেছি,এখন স্বামীদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা চলছে,আশা করি আমরা যার যার অবস্থানে থেকে মহান আল্লাহর ভয় ও সন্তুষ্টির আশায় নিজেরা পরিবর্তন হবো ইনশা’আল্লাহ।

সেই বুদ্ধিমান যে নিজেকে সংশোধন করে নিলো।

স্বামী পরিবারের মূল অভিভাবক বলেই দায়িত্বটা বেশী ও জবাবদিহীতাও বেশী। স্ত্রীকে ভালোবাসা দিয়েই তাকওয়া সম্পন্ন বানানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

সব নারীকে এক কাতারে এনে ধারনার বশবর্তী হয়ে আচরন করলে কখনো শান্তি আসবে না।একজন নারী যখন চির পরিচিত এক পরিবার থেকে অন্য একটি পরিবারে আসে তখন সেই পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব নতুন এই সদস্যাকে আপন করে নেয়া,এই ক্ষেত্রে স্বা্মীর সহযোগীতা খুবই গুরুত্ব রাখে। স্বামী স্ত্রীকে সহযোগীতা করবে এই ভাবে যে, পরিবারের মা বাবা কি পছন্দ করেন আর না করেন সেটা কিছু বুঝিয়ে দেয়া যেন স্ত্রী সেই ভাবে শশুর শাশুড়ীর সাথে আচরন করতে পারেন। স্ত্রীকেও সেই মনের আকাংক্ষী হতে হবে যে, সে দাঈ ইলাল্লাহ হিসেবে এই পরিবারে কাজ করার জন্য ভালো একটা সম্পর্ক তৈরী করতে হবে,এ ছাড়া স্বামীর জন্য সহজ হবে এবং স্বা্মী খুশী থাকবে যদি শশুর শাশুড়ীর যত্ন দিতে পারেন স্ত্রী,সব কিছুরই মূল উদ্দেশ্য মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি। এখানে প্রসঙ্গত জানিয়ে নেই অনেক স্বা্মী স্ত্রীর উপর জুলুম করে তার পিতা-মাতার দায়িত্ব পালনের জন্য যা অন্যায়। ইসলামী শরীয়তে নারী, শশুর শাশুড়ী বা সেই পরিবারের অন্য সদস্যদের দায়িত্বের ব্যাপারে বাধ্য নন। নারী নিজের সংসারের জন্য আলাদা বাসস্থানের দাবীও করতে পারে। স্বামী তার সামর্থ অনুযায়ী থাকা,খাওয়া ও পড়ার ব্যবস্থার ব্যাপারে দায়িত্বশীল।

কিছু পরিবারে দেখা যায় এই সম্পর্ক ধরে রাখার নামে পর্দার বিধানকে উপেক্ষা করে দেবর-ভাসুর,ভাবী,দুলাভাই একসাথে বসে গল্প খাওয়া দাওয়া হাসি ঠাট্টা চলে যা শরীয়ত কোনভাবেই অনুমোদন করে না। এই ক্ষেত্রে পরিবারের স্বা্মীকেই মূল ভূমিকা রাখতে হবে। কিন্তু সমস্যা হয় স্বা্মীর নিরব ভূমিকা পালনের জন্য পরিবারের সদস্যরা সেই নারীকে ভুল বুঝে, যে শরীয়ত মেনে চলতে চায়।

আমার এক কলিগের বিয়ের দিন শশুর নাই বিধায় ভাসুর এসে হাজির হয়েছেন আংটি পড়িয়ে দিবেন ছোট ভাইয়ের বউকে কারন সেই এখন মুরুব্বী, কিন্তু আমার কলিগ তখন বাধ্য হয়েই মেনে না নিয়ে বললেন যেন, তার জা(ভাসুর বউ) আংটি পড়ান।তাতে ভাসুর খুব অপমানিত ভাব ধরে রাগ হয়ে চলে গেলেন। এরপর অনেক দিনই সময় লেগেছে এই ব্যাপারটা সহজ করতে। সে যাই হোক অনেক ঘটনা আছে আমাদের ভাই ও বোনদের জীবনে যা শুনলে কষ্ট লাগে এইভেবে যে, আমরা যারা অন্তত কিছু হলেও কোর’আন হাদীস পড়ার ও মানার চেষ্টা করার কথা বলি,আমাদের পরিবারগুলোতেই সবাই তাকওয়া সম্পন্ন জীবন যাপন না করার কারনে পরিবারের যে ব্যক্তিটি শরীয়ত অনুযায়ী চলতে চান তার জন্য কষ্ট হয়ে যায়,ঈমানের দাবীর কারনেই সেই ব্যক্তিটিও অন্যায়ের বিপক্ষে কথা না বলে পারেন না। সমস্যা কিন্তু এখানেই। তাই পরিবারের মূল কর্তাকে তাকওয়া সম্পন্ন আমলদার হয়েই সবাইকে শিক্ষা দিতে হবে।

এ ব্যাপারে আমাদের ভাই/বোনদের অনুরোধ করবো islam QA web site থেকে পরিষ্কার জ্ঞান লাভ করবেন যা সঠিক ভাবে ইসলামের আলোকে দেয়া।

নিজের রক্তের সম্পর্কের ভাই বোনদের মাঝেও মতের অমিল হয়,তাই বলে কি আপনি খারাপ আচরন করে সম্পর্ক খারাপ করে ফেলেন? তাহলে স্ত্রীর বেলায় কথা বা আচরনে কেনো সহনশীলতা আসে না? আবার আপনার বোনটি শশুর বাড়ীতে কাজ করে বলে সেই পরিবারের সদস্যদের খারাপ বলেন বা আপনি মানতে চান না,তাহলে আপনার স্ত্রীর বেলায় কেনো অন্য রকম ধারনা করে থাকেন,এইক্ষেত্রে শাশুড়ীও নিজের মেয়ে সন্তানটির বেলায় যেমন চান ছেলের বউ এর বেলায় অন্যরকম আচরন দেখান,তাহলে কি ভাবে সেই নারী/বউ পরিবারে আপন ভাববে নিজেকে? পরিবারের অনেক ব্যাপার আপনারা বউকে মূল্য না দিয়ে আলোচনার বাইরে রাখেন তাহলে এই সদস্যাটি কি মানসিক ভাবে ভাববেন না যে আমাকে শুধু কাজের সময় প্রয়োজন। রাসূল(সঃ) অনেক ব্যাপারেই স্ত্রীদের সাথে পরামর্শ করেছেন,স্ত্রীদের সাথে কখনো খারাপ আচরন বা রাগা রাগিও করেন নি। দয়ার আচরন দেখিয়েছেন, খেলা ধূলা আনন্দ দিতেও তৎপর ছিলেন। আপনি স্বামী যদি স্ত্রীর সাথে নরম আচরন করেন তাহলে কি আপনার সম্মান চলে যাবে? না ভাই, তাতে সম্মান যাবে না বরং স্ত্রী লজ্জা পেয়ে সংশোধন হয়ে যাবে,মহান আল্লাহর কাছে আপনি সম্মানীত মুমিন হিসেবেই তালিকাভুক্ত হবেন। রাসূল(সঃ)এর চরিত্রের প্রতিফলন আজ খুবই প্রয়োজন তাহলে অন্তত পরহেজগার পরিবারের অশান্তি দূর হবে ইনশা’আল্লাহ এবং broken family সংখ্যা কমে আসবে।

ক্ষন স্থায়ী এই জীবনে যা হাসরের সময়ের হিসেবে হয়তো ১২ ঘন্টা বা ২৪ ঘন্টা। এই অল্প সময় যদি শুধুমাত্র এই নিয়ে, কে কি কাজ করল কি করলো না,সেই বিচার আমরা করতে থাকি তাহলে জীবনের মূল কাজ থেকে বঞ্চিত হয়ে শয়তানের পথেই পা বাড়ালাম। আর এভাবেই কবরেই যাবার সময় চলে আসলো বুঝতেই পারলাম না। মহান আল্লাহ আমাদের বুঝার তাওফিক দান করুন।

রাসূল(সঃ) বলেছেন,কোন মুমিন পুরুষ কোন মুমিন নারীকে ঘৃণা ও অপছন্দ করবে না,যদি সে তার কোন স্বভাবকে অপছন্দ করেও তাহলে সে তার অপর একটি স্বভাবকে পছন্দ করবে।

সহীহ মুসলিমঃ১৪৬৯

তবে এটা ইহসান যে একজন স্ত্রী যদি শশুর শাশুড়ী সহ অন্য সদস্যদের সাথে সহযোগীতা করে সুন্দর একটি পরিবেশ তৈ্রী করার চেষ্টা করতে থাকেন সবরের মাধ্যমে যা আদর্শ হিসেবে অন্যেরাও ইসলামের শিক্ষার আলোকে তাকওয়া সম্পন্ন নারীর মর্যাদা দিবে এই দুনিয়াতেও এবং আখেরাতেও পুরষ্কার পাবে।

মহান আল্লাহ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রসুলের বিরুদ্ধতা করার জন্য কৃত সংকল্প হবে এবং ঈমানদার লোকের নিয়ম-নীতির বিপরীত নীতিতে চলবে-এমতাবস্থায় যে, প্রকৃত সত্য পথ তার নিকট সুস্পষ্টরুপে প্রতিভাত হয়েছে-তাকে আমরা সেই দিকেই চালাইব যেদিকে সে নিজেই চলিতে শুরু করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবো যা নিকৃষ্টতম স্থান।

সূরা আন নিসাঃ১১৫

আমাদের অন্তরকে মূল উদ্দেশ্যের দিকে কেন্দ্রিভূত করতে হবে যেন আমরা দুনিয়ার মায়ার বেড়াজালে ও শয়তানের চালবাজীতে নিজেকে বন্দি না করে ফেলি। মহান আল্লাহ আমাদের কেন এই যমীনে বিভিন্ন ইস্যু দিয়ে পাঠিয়েছেন তা আমাদের মনে রাখতে হবে প্রতি পদক্ষেপে।মহান আল্লাহ বলেছেনঃ

আর যে ব্যক্তি কোন সৎকাজ করবে, সে পুরুষ বা নারী যেই হোক না কেন, তবে যদি সে মুমিন হয়, তাহলে এই ধরনের লোকেরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের এক অণুপরিমাণ অধিকারও হরণ করা হবে না ৷

সেই ব্যক্তির চাইতে ভালো আর কার জীবনধারা হতে পারে, যে আল্লাহর সামনে আনুগত্যের শির নত করে দিয়েছে, সৎনীতি অবলম্বন করেছে এবং একনিষ্ট হয়ে ইবরাহীমের পদ্ধতি অনুসরণ করেছে? সেই ইবরাহীমের পদ্ধতি যাকে আল্লাহ নিজের বন্ধু বানিয়ে নিয়েছিলেন ৷

সূরা নিসা ১২৪-১২৫

আগামীতে কর্মজীবী পরিবারের ব্যাপারে আলোচনা আসবে ইনশা’আল্লাহ

সময়ের দাবী আত্মউপলব্ধিঃ ১৭

আসসালামু’আলাইকুম।

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহতা’আলার নামে।

“একদিন আমার এক কলিগ আমাকে বলছিলেন যে, এতো কষ্ট করে পড়াশুনা করে ডাক্তার হলাম, বিশেষজ্ঞ লাভ হলো কিন্তু এখন স্বামী বলছে চাকরী করা লাগবে না,ছেড়ে দাও,বাসায় থাকো। টাকা পয়সা আমিইতো উপার্জন করি। তোমার বাইরে যাওয়া লাগবে না”

আরেকজন কলিগ বলছেন, বিয়ের আগেইতো স্বামী জানেন যে আমি শিক্ষিত একজন স্ত্রী,আমিতো ঘরে বসে থাকবো না,আমার যোগ্যতাকে কাজে লাগাবো না? আমি কলেজের প্রফেসর হবো,দীনের শিক্ষাও দেবো---।

আরেকজন স্ত্রী বলেন, নিজের বোনকে ঠিকই পড়া শুনা চাকরীর সুযোগ করে দিচ্ছে,আর আমার বেলায় বলবে ঘরে দায়িত্ব পালন করো,বাইরে যেতে হবে না। ছেলে মেয়েকে কে দেখবে,অথচ বোনের বাচ্চাকে নিজের মায়ের কাছে রেখে চাকরিতে যাওয়ার ব্যাবস্থা করে দিচ্ছেন।

দেখা যায় কোন কোন স্ত্রী স্বামীর ডিগ্রী অর্জনে সাহায্য করেন যেন আগে স্বামী প্রতিষ্ঠিত হয়ে যান এরপর স্বা্মীর সহযোগীতায় স্ত্রী ডিগ্রী অর্জন করতে উদ্যোগী হোন।কিন্তু দেখা যায় স্বামী ঠিকই নিজের কাজ আদায় হলে আর স্ত্রীর ব্যাপারে কোন রকম সহযোগীতা করতে নারাজ,অথচ এই লোকটি আবার কর্মক্ষেত্রে অন্য নারী কলিগকে খুব সহযোগীতা করছেন ডিগ্রী নিতে।

অনেক স্ত্রী আছেন কোনভাবেই নিজের ক্যারীয়ারের ব্যাপারে পিছ পা হবেনই না। সংসারের যে কোন অবস্থা হোক না কেনো।

অনেকগুলো বাস্তব অবস্থা তুলে ধরলাম। এই ধরনের সহ আরো অনেকগুলো ঘটনা আমাদের সামনে দেখা যায়।

মহান আল্লাহতা’আলা আমাদের জানিয়েছেনঃ

না, হে মুহাম্মাদ! তোমার রবের কসম, এরা কখনো মু’মিন হতে পারে না যতক্ষণ এদের পারস্পরিক মতবিরোধের ক্ষেত্রে এরা তোমাকে ফায়সালাকারী হিসেবে মেনে না নেবে, তারপর তুমি যা ফায়সালা করবে তার ব্যাপারে নিজেদের মনের মধ্য কোনো প্রকার কুণ্ঠা ও দ্বিধার স্থান দেবে না, বরং সর্বান্তকরণে মেনে নেবে।

সূরা আন-নিসা: ৬৫

আল্লাহ তা'য়ালা বলেন:

নিজেদের গৃহের মধ্যে অবস্থান করো এবং পূর্বের জাহেলী যুগের মতো সাজসজ্জা দেখিয়ে বেড়িও না। নামায কায়েম করো, যাকাত দাও এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করো। আল্লাহ তো চান, তোমাদের নবী-পরিবার থেকে ময়লা দূর করতে এবং তোমাদের পুরোপুরি পাক-পবিত্র করে দিতে।

আল্লাহর আয়াত ও জ্ঞানের যেসব কথা তোমাদের গৃহে শুনানো হয়, তা মনে রেখো। অবশ্যই আল্লাহ সূক্ষ্মদর্শী ও সর্ব অবহিত।

সূরা আহযাব: ৩২-৩৪

এই আয়াতে নিশ্চিন্তে ও স্থির হয়ে ঘরে অবস্থানের কথা বলা হয়েছে। নারীর আসল কর্মক্ষেত্র হচ্ছে তার গৃহ। নারীর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা, সৌন্দর্য ও প্রশান্তি আসে এই গৃহে অবস্থানের মাধ্যমে কারণ মহান আল্লাহ তা'য়ালা সৃষ্টিগতভাবেই তাকে এই পরিবেশের উপযোগী করেছেন। এই বৃত্তের মধ্যে অবস্থান করে সে নিশ্চিন্তে নিজের দায়িত্ব সম্পাদন করে যেতে পারবে। কেবলমাত্র প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সে গৃহের বাইরে যাবে এবং এ কারণেই পর্দার বিধান এসেছে। নারী যেন প্রয়োজনে বাইরে যেতে পারে সেজন্যেই পর্দার নির্দেশনা এসেছে। নারী শিক্ষাঙ্গনে, কর্মক্ষেত্রে, সফরে, বেড়াতে যাবে আর তার জন্যই প্রয়োজন মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশনা, যা নারীকে সম্মানিত করবে, হেফাজত করবে।

আমাদের সময় মহিলা মেডিকেল ছিল না। আমি যখন প্রথম সহশিক্ষাতে মেডিকেলে গিয়েছিলাম তখন মহান আল্লাহর কাছে এটা ভেবে ক্ষমা চেয়েছিলাম যে, হে আল্লাহ আজ বৃহত্তর স্বার্থ(নারী ডাক্তার,নারীদের জন্য আলাদা মেডিকেল) কে সামনে রেখেই এই সহশিক্ষায় এসেছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করো।

অথচ আজ অনেক অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভালো লেখাপড়ার নামে সহশিক্ষা কার্যক্রমে দিয়ে দিচ্ছেন যদিও সুযোগ থাকে আলাদা ব্যাবস্থায় পড়াশুনা করার।

আজ আমি আপনি মহিলা চিকিৎসক,শিক্ষিকা খুজি যেন বেপর্দার অবস্থা থেকে নিজেরা সহ পরিবারের নারী সদস্যা ও মেয়ে সন্তানটিকে হেফাজত করতে পারি,আল্লাহ সাহায্যকারী।

নারী তার যোগ্যতাকে কাজে লাগাবে তবে অবশ্যই শরীয়তের সীমানা রক্ষা করেই করতে হবে।

আজ অনেক পরিবারেই বাস্তবতায় বাধ্য করে নারীকে চাকরী করতে। হালাল ভাবে থাকতে হলে, চলতে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই এটা জরুরত হয়ে যায়। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে স্বা্মী ও নিজ পরিবারের হক নষ্ট করে করতে হবে।

ইবনে উমার(রা) থেকে বর্ণিত। নবী সা: বলেন: তোমাদের প্রত্যেকেই রাখাল (অভিভাবক) এবং নিজ অধীনস্থ লোকদের ব্যপারে সে দায়ী। শাসক একজন অভিভাবক এবং কোন ব্যক্তি তার পরিবারের লোকদের অভিভাবক (দায়িত্বশীল)। কোন মহিলা তার স্বামী, গৃহের ও তার সন্তানদের অভিভাবক(রক্ষক)। অতএব তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং নিজ অধীনস্থ লোকদের ব্যপারে তোমাদের প্রত্যেককেই জবাবদিহি করতে হবে।

বুখারী: ৪৮১৮

আগামীতে চলবে ইনশা’আল্লাহ

বিষয়: বিবিধ

১১৫৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

327992
৩০ জুন ২০১৫ সকাল ০৬:২৮
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : জাজাকাল্লাহু খায়রান। অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন। এরকম আলোচনা বেশি বেশি দরাকার। চালিয়েযান এভাবেই।

Rose Rose Rose শুভেচ্ছা
328002
৩০ জুন ২০১৫ সকাল ০৯:৫৯
মিশু লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ।পুরনো লেখা ব্লগে হারিয়ে গিয়েছিল তাই নতুন করে সিরিয়াল রাখার জন্য পোষ্ট করেছিলাম। ধন্যবাদ। আল্লাহ আমাদের বাস্তবে আমলদার বানিয়ে দিন।জাযাকাল্লাহী খাইরান।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File