সময়ের দাবী আত্মউপলব্ধিঃ ১৯

লিখেছেন লিখেছেন মিশু ১৬ জুন, ২০১৫, ১০:০৭:৩৫ সকাল

আসসালামু’আলাইকুম।

দয়াময় মেহেরবান আল্লাহতা’আলার নামে।

মহান আল্লাহ বলেছেন

তাদের সাথে মিলে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। তারা যদি তোমাদের মনোমত না হয়, তবে হতে পারে যে, কোন জিনিষ তোমাদের পছন্দ নয় কিন্তু আল্লাহ তাতেই তোমাদের জন্য অফুরন্ত কল্যান নিহিত রেখেছে।

সূরা আন নিসাঃ১৯

মহান আল্লাহর শিক্ষাকে বাস্তবে আমল দিলেই সংসার শান্তিময় হতে পারে। একজন মানুষের চরিত্রে সব গুনের সমাহার না থাকতে পারে কিন্তু অন্তরের সুন্দরতম দিকটি পুরুপুরি থাকা সম্ভব যদি ব্যক্তি সেটা আত্মস্থ করতে চান।

ইবলিশ শুধুমাত্র অহংকার করার কারনে,নিজের আমিত্ব বোধের জন্যই মহান আল্লাহর নির্দেশে অনুগত হতে পারে নি এবং ভুল স্বীকার করে ক্ষমাও চায় নি। এতো ইবাদাত করার পরও সে বিতাড়িত অর্থাৎ শয়তান বলে গণ্য হয়েছে ও চির জাহান্নামী হয়েছে।

অনেক স্বামী এই ধারনা করেন যে, ভুল স্বীকার করে স্ত্রীর নিকট ক্ষমা চাইলে স্ত্রী আর তার আনুগত্য করবে না, সম্মান করবে না। অনেক সময় স্বামী ভাবেন এর মাধ্যমে বুঝি নিজেকে ছোট করে ফেললেন ।

রাসূল(সঃ)এর চাচা আবু তালিব এতো ত্যাগ তিতিক্ষা দেখিয়েছেন ভাতিজার জন্য যে, শিয়াবে আবুতালিব যা ৩টি বছর সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে খোলা আকাশের নীচে,পাহাড়ে রাসূল(সঃ) সহ সব ঈমানদারদের সাথে এই চাচাটিও ঈমান না এনেও কষ্ট করেছেন। কিন্তু শুধুমাত্র বংশীয় আভিজাত্যের কারনে দুনিয়ার তথাকথিত যশের জন্য ঈমান আনতে ব্যর্থ হয়ে জাহান্নামের সর্বনিম্ন শাস্তি লাভ করবে।

দেখা যায় অনেক পরিবারেও এই বংশীয় বড়ত্বের দোহাই দিয়ে স্বামী স্ত্রী পরস্পরের মাঝে সমঝোতায় আসা কষ্টকর হয়ে যায় ,এমনকি অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। এইভাবে দেখা যায় বংশের নামে গালি গালাজ শুরু করে দেন বিভিন্ন অকথ্য ভাষায় যা শুনলে মানুষ কেনো শয়তানও লজ্জা পেয়ে যাবে।

আবার অনেক স্বামী স্ত্রীর কোন ভুল হলে বা আচরনে ত্রুটি পেলে সংশোধন সুন্দর ভাবে না করে দেখা যায় ছেলে মেয়ের সামনেই অপদস্থ করতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে স্ত্রীর মা-বোনদের উদাহরন টেনে নিয়েও খারাপ কথা বলতে থাকেন।

মহান আল্লাহ বলেছেনঃ

অতএব তোমাদেরকে যা দেয়া হয়েছে তা পার্থিব জীবনের কয়েকদিনের ভোগ মাত্র। আর আল্লাহর কাছে যা রয়েছে,তা উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী তাদের জন্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও তাদের পালন কর্তার উপর ভরসা করে,যারা বড় বড় গুনাহ ও অশ্লিল কাজ থেকে বিরত থাকে এবং ক্রোধান্বিত হয়েও ক্ষমা করে, যারা তাদের পালনকর্তার আদেশ মান্য করে,নামায কায়েম করে, নিজেদের যাবতীয় সামগ্রিক ব্যাপারে পারস্পরিক পরামর্শক্রমে কাজ করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে,আর যখন তাদের উপর অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করা হয় তখন উহার মুকাবিলা করে।

সূরা শূরাঃ৩৬-৩৯

যে পরিবার গঠন হয় তাকওয়া সম্পন্ন (quality+activity) নারী ও পুরুষের সমন্বয়ে সেখানে দুনিয়ার জীবনের চাওয়া পাওয়া নিয়ে সময় নষ্ট না করে পরিকল্পিত ভাবে পরিবারকে এগিয়ে নিয়ে যায় স্থায়ী জীবনের সুখের প্রত্যাশায়।

এখানে প্রয়োজন পারস্পরিক মমতা, সহমর্মিতা, নিজেদের মধ্যে নিবিড় অগাধ বুঝ ও বিশ্বাস,ত্যাগ করার মানসিকতা, সহযোগীতা করার মন, সংকীর্ণতা থেকে দূরে থাকা এবং সব কিছুর উপরে মূল ভিত্তি হবে তাকওয়াপূর্ণ জীবন যাপনে পরস্পরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মনোভাব। তাহলে চাকরি করবে কি করবে না,কখন করবে, কিভাবে করবে ইত্যাদি সবই সহজ হয়ে যায়।

আলহামদুলিল্লাহ অনেক নারী আছেন খুবই পরিশ্রমী। তারা পরিবার সামলে রেখেও বাইরে কাজ করতে পারেন শরীয়াকে ঠিক রেখে, এইক্ষেত্রে স্বামীর সহযোগীতা দিতে পারে পরিবারের এই স্ত্রীকে একটু শান্তি,আরাম যার বিনিময়ে কিন্তু স্বামীও দেখবে ঘরে সুন্দর একটি পরিবেশ বিরাজ করছে।

মুসলিম পরিবারের অবকাঠামো হবে –

আল্লাহর উপর পূর্ণ ঈমান ও তাকওয়া অবলম্বন দ্বারা তাহলে মহান আল্লাহ যা দিবেন তাহলো (সূরা আত তালাক ২-৩ আয়াতের আলোকে--

• সব সমস্যার উত্তরনের পথ করে দেবেন

• ধারনাতীত উৎস হতে রিযিক দান করবেন

• মহান আল্লাহর উপর ভরসা বা তাওয়াক্কুল যথেষ্ট করে দিবেন।

আগামীতে চলবে ইনশা’আল্লাহ

বিষয়: বিবিধ

১০২২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

326118
১৬ জুন ২০১৫ দুপুর ১২:২৪
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : চমৎকার পোস্ট....ধন্যবাদ।
১৭ জুন ২০১৫ সকাল ০৯:২২
268675
মিশু লিখেছেন : জাযাকাল্লাহী খাইরান প্রিয় বোন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File