সময়ের দাবী আত্মউপলব্ধি-১১
লিখেছেন লিখেছেন মিশু ০৬ মে, ২০১৫, ০৯:১৮:৪১ সকাল
আসসালামু’আলাইকুম
আল কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-
আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন নির্দেশ দিলে কোন মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজেদের ব্যপারে অন্য কিছু করার এখতিয়ার থাকে না,আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।
সূরা আহযাবঃ৩৬
রাসূল(সঃ) বলেছেন,আমার প্রত্যেক উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে,তবে যে অস্বীকার করবে তারা ছাড়া।সাহাবারা প্রশ্ন করলেন,কে অস্বীকার করবে? তিঁনি বললেন-যে আমার অনুসরন করল সে জান্নাতে প্রবেশ করবে আর যে আমার অবাধ্য হলো সে অস্বীকার করল।
সহীহ আল বুখারী
আজকের এই সমাজ ব্যবস্থাতে আমরা পারিবারিক জীবনে নানা ভাবে শান্তির পদ্ধতি বের করে যাচ্ছি অথচ শান্তির ধারা কি ভাবে আসতে পারে তা মহান সৃষ্টি কর্তা খুব সুন্দর করেই আল কোর’আনে জানিয়ে দিয়েছেন।
আমরা কি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এবং নিজের আল্লাহর দেয়া পদ মর্যাদাকে (যা আগের পর্বে আলোচিত) মনে রেখে নিজ ও স্বামীর আত্মীয়দের ব্যপারে কি আমরা একইরকম নীতি বজায় রাখছি!!!
শাশুরী বা ননদ/ননাস/জা এদের সাথে সম্পর্কের তিক্ততার কারনই কিন্তু আমাদের বৈষম্যমূলক চিন্তা এবং কথা ও কাজের মিল না থাকার কারনে।
স্বামীর বিশ্বাস ও নির্ভরতা স্ত্রীর উপর কমে আসে যখন চরিত্রের দ্বিমুখীতা লক্ষ্য করে। আমি যেমন খুশী হই আমার মা বাবা ভাই বোনদের সাথে ভালো সুন্দর আচরন করলে তেমনি আমার স্বামীও খুশী হবেন তাঁর রক্ত সম্পর্কের আত্মীয়দের সাথে ভালো ব্যবহার করলে। আমরা কি ভেবে দেখেছি শুধুমাত্র স্বামীর খুশী নয় আল্লাহর খলিফা হিসেবে আমাকে তাদের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করে দীনের ভীত প্রতিষ্ঠিত করতে হবে এই পরিবারেও।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-
ভালো ও মন্দ সমান নহে।তুমি অন্যায় ও মন্দকে দূর কর সেই ভালো দ্বারা যা অতীব উত্তম।তুমি দেখতে পাবে যে তোমার সাথে শত্রুতা ছিল সে প্রানের বন্ধু হয়ে গিয়েছে। এই গুন কেবল তাদের ভাগ্যেই জুটে থাকে যারা ধৈর্যধারন করতে পারে।
সুরা হামীম আস সেজদা ৩৪-৩৫
সুতরাং পূন্যবতী নারীরা অনুগত,তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে হেফাজতকারিনী ঐ বিষয়ের যা আল্লাহ হেফাজত করেছেন।
সূরা নিসাঃ৩৪
আমরা নারীরা অনেক সময় একটু কোন কারনে স্বামীর কথায় বা কাজে কষ্ট পেয়ে বলে ফেলি সারাজীবনই কোন শান্তি দিলে না বা কিছুই পেলামনা ইত্যাদি নানারকমভাবে অকৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ দেখাই যা অত্যন্ত গর্হিত।
জাহান্নামের নারীর সংখ্যা বেশী হবে (সহীহ মুসলিম৪৬৫) সবামীর নাশোকরী (অকৃতজ্ঞ) আচরনের জন্য যা রাসূল(সঃ) জানিয়ে দিয়েছেন, তাই আমাদের আরো বেশী সচেতন হয়ে রাগ অভিমানকে একটি নির্দিষ্ট শরীয়তের সীমার মধ্যে রেখে চলতে হবে।
সহীহ হাদীস থেকে জানা যায়- রাসুল(সঃ) হযরত আয়েশা(রা) কে বলেছিলেন, হে আয়েশা তুমি কখন আমার উপর রাগ হও তা আমি বুঝতে পারি। রাসূল(সঃ) বললেন তুমি স্বাভাবিক অবস্থায় বলো মুহাম্মদের আল্লাহ বলে কিন্তু রাগ হলে বলো ইব্রাহীম(আ)এর আল্লাহ । কি সুন্দর আচরন স্বামী ও স্ত্রী দুজনার।
আবার অনেক স্ত্রী স্বামীকে অসন্তুষ্টি করা না করাকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনেন না যা অনেক ধনী স্ত্রী বা প্রফেশনাল বেশী যোগ্যতা সম্পন্ন নারীদের চরিত্রে দেখা যায় । অনেক স্ত্রী আমিত্ব বোধের কারনে দুঃখিত কথাটুকু বলতে ও পারেন না। একটু নরম হয়ে আদর দিয়ে কথা বলে স্বামীর রাগ কমাতেও যেন আত্মস্মমানে লাগে। স্বামী ব্যক্তিটিতো স্ত্রীর নিজের আপন একজন মানুষ।অত্যন্ত কাছের একজন।যার জন্য ভালোবাসা আল্লাহই স্ত্রীর অন্তরে দিয়ে দিয়েছেন।
যে যত তাকওয়া সম্পন্ন হবেন, যে যত নিজের মানকে আল্লাহতায়ালার দিকে এগিয়ে নিতে পারবেন সে তত আদর্শ মুমিনা স্ত্রী হতে পারবেন যিনি স্বামীর কাছে দুনিয়ার সবচেয়ে উত্তম সম্পদ হিসেবে থাকবেন(হাদীসের আলোকে)।
যখন স্বামী অন্যায়ভাবে খারাপ ব্যবহার করলেও তখন আমরা কতজন নারী ঠাণ্ডা মাথায় ধৈর্য ধারন করি!! তাহলে অন্তত বড় ধরনের অঘটন থেকে বাচতে পারে অনেক পরিবার। রাগের বশে তালাকের কথাও চলে আসে।
অনেক স্ত্রীও কথায় কথায় বলে ফেলেন তালাক দিয়ে দাও।
অথচ –যে নারী কোন কারন ছাড়া স্বামীর কাছে তালাক তলব করল,তার উপর জান্নাতের ঘ্রাণ পর্যন্ত হারাম-
সহীহ জামে আত তিরমিযী,আবু দাউদ।
আবার তিরমিযী শরিফ ২৯৫ নং হাদীসে জানা যায়- ৩ ব্যক্তির নামাজ মাথার উপরে উঠে না।তাদের মধ্যে একজন হলো সেই নারীর নামাজ যে নিজের স্বামীকে রাগান্বিত রেখে রাত যাপন করে।
তবে আবার অবৈধ কাজে সহযোগীতা করা যাবে না। তবে আমাদের আরো নমনীয় হতে হবে। আমরা আমাদের চরিত্রকে সুন্দর করে সাজিয়ে নেই। --চলবে
বিষয়: বিবিধ
১০০০ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ভাল লেখা । আল্লাহ আমাদের নারী জাতিকে হেদায়াত দান করুন ।
ঝাজাকাল্লাহ খাইরান আপু ।
গুরুত্বপূর্ন এবং চমৎকার পোস্টএর জন্য আন্তরিক শুকরিয়া!
নারীদের জাহান্নামে বেশি দেখা গেছে আবার নারীদের জন্য জান্নাত পাওয়া খুব সহজ করা হয়েছে !
জাযাকিল্লাহু খাইর!
জাযাকাল্লাহী খাইরান সুপ্রিয় আপু। আল্লাহ আমাদের জান্নাতের পথে প্রতিযোগীতা করার তৌফিক দান করুন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন