সময়ের দাবী-আত্মউপলব্ধি ১০
লিখেছেন লিখেছেন মিশু ০৫ মে, ২০১৫, ০২:৫২:৩৭ দুপুর
আসসালামু’আলাইকুম
আজ স্ত্রী হিসেবে আমাদের ভুলটি তুলে ধরবো ইনশাআল্লাহ।
আমরা নারীরা ভুলে যাই অথবা জ্ঞানের অভাবে বুঝতে অক্ষম থাকি অথবা ইচ্ছে করে মানতে চাই না যে, স্ত্রী হিসেবে আমাকে কেন একজন পুরুষের কাছে সঁপে দিয়েছেন?
অনেক সুন্দর ও মোহনীয় করে মহান আল্লাহ তায়ালা নারীকে সৃষ্টি করেছেন যেন-
তিনি তোমাদের জন্য তোমাদেরই জাতির মধ্য হতে স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন যেন তোমরা তাদের নিকট থেকে পরম প্রশান্তি লাভ করতে পারো আর তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও সহৃদয়তার সৃষ্টি করে দিয়েছেন। নি;সন্দেহে এতে বিপুল নিদর্শন রয়েছে সেই লোকদের জন্য যারা চিন্তা ভাবনা করে।
সূরা রুমঃ২১
হযরত আদম(আ) যখন জান্নাতে একা ছিলেন তখন মহান আল্লাহ মা হাওয়া(আ) কে সৃষ্টি করে দিয়েছেন তাঁর একাকীত্বকে দূর করার জন্য।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লাম যখন হেরা গুহায় জিব্রাঈল(আ) কে দেখে পেরেশান হয়ে ঘরে ফিরে এসেছিলেন হযরত খাদীজা(রা)এর কাছে এবং বিবি খাদীজা(রা) প্রিয় স্বামীকে কিভাবে স্বস্তির বানী শুনিয়ে অস্থিরতা দূর করেছিলেন তা আমরা সকলেই জানি।
এখানে আমাদের জন্য শিক্ষা হলো হযরত খাদিজা(রা) এমন চরিত্র ও আচরন প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন যে স্বামী তাঁর কাছে আসাটাই প্রয়োজন বোধ করেছেন।
আমরা অনেক স্ত্রীরাই সংসারে অনেক কাজই করি,দেখা যায় সংসারের স্বামীর করনীয় কাজটিও অনেক সময় করতে হয় কিন্তু আমাদের আচরনে কি সেই নির্ভরতা স্বামী পায় যে প্রশান্তি লাভের জন্য কষ্ট /বিপদের/অস্থিরতার সময় আমার কাছে আসেন?? আমাদের কথায় কি সেই সুন্দর শিক্ষনীয় আশার বানী যা মহান আল্লাহর বানী থেকে শিখে স্বামীকে শান্তি দিতে পারে সেরকম উদাহরন রাখতে পারছি!!!
রাসূল(সঃ) কে প্রশ্ন করা হলো-কোন নারী সবচেয়ে ভালো?
তিনি বললেন- যে নারী স্বামীকে আনন্দিত করে যখন স্বামী তার দিকে দৃষ্টি দেয়,
যে নারী স্বামীর আনুগত্য করে যখন স্বামী তাকে নির্দেশ দেয়
যে নারী স্বামীর সম্পদ ও নিজ নফসের ব্যপারে এমন কোন কর্মে লিপ্ত হয় না যা স্বামীর অপছন্দ।
সহীহ আবু নাসাঈ-৩০৩০
আমি কি আমার স্বামীর সম্পদকে এমন কাজে ব্যয় করছি যা তিনি জানলে অপছন্দ করবেন এবং যা শরীয়ত সম্মত নয়। অনেক স্ত্রী স্বামীর অনুপস্থিতিতে মোবাইলে ফেস বুকে, ব্লগে বিভিন্ন ভাবে গায়ের মাহরামদের সাথে অবৈধ যোগাযোগ করে থাকেন,একবা্রও কি মনে হয় না মহান আল্লাহ দেখছেন এবং কার তত্ত্বাবধানে থেকে অকৃতজ্ঞের মতো স্বামীকে প্রতারিত করছেন। যে সুন্দর সুন্দর আবেগ মাখা কথা গায়ের মাহরামদের সাথে বলছেন বা লিখছেন অথচ এই নারী নিজের সংসারে সুন্দর কথা দূরে থাক মেজাজের ভারসাম্যটা রক্ষা করে কথা বলতে পারে না অনেকক্ষেত্রে। সংসারের অনেক কাজ গুছিয়ে রাখাতে সময় দিতে পারে না অথচ বসে টিভি/কম্পিউটারে বসে সময় নষ্ট করে চলেছেন।
আল্লাহ বলেছেন-
সেইদিন তাদের জিহবা,তাদের হাত এবং তাদের পা তারা যা কিছু করেছে সেই সম্পর্কে সাক্ষ্যদান করবে।
সূরা নূরঃ২৪
দুইজন লেখক ডান ও বাম দিকে বসে প্রতিটি কাজের বিবরন লিপিবদ্ধ করছেন।কোন শব্দই মুখ থেকে উচ্চারিত হয় না যা সংরক্ষনের জন্য পর্যবেক্ষক উপস্থিত থাকে না।
সুরা কাফঃ ১৭-১৮
আমরা নারীরা যখন কোথাও বেড়াতে যাই তখন খুব ভালো দামী পোষাক পরে সেজে গুজে যদিও পর্দার মধ্যে করা হয় কিন্তু আমরা কি ঘরে স্বামীর চোখকে তৃপ্ত করার জন্য নিজেকে সাজিয়ে নেই এটা একটা ইবাদাত মনে করে??? পুরুষেরা বাইরে যখন বেগানা বেপর্দা নারীদের মধ্যে অবস্থান করতে বাধ্য থাকেন এবং যখন ঘরে ফিরে আসে তখন নিজ স্ত্রীকে অগোছালো দেখাটা নিশ্চয়ই মনপূত হবে না। তারচেয়ে বড় কথা- স্বাভাবিক চাহিদা যা আল্লাহ দিয়েছেন তাকে পবিত্র রাখার দায়িত্ব যেমন স্বামীর তেমনি বড় ভুমিকা রাখতে পারেন স্ত্রী। মা আয়েশা(রা) ভাষ্য থেকে জানা যায় রাসূল(সঃ) যেদিন তাঁর ঘরে যেতেন তিঁনি নববধূর মত সেজে থাকতেন। আমরা কি এই আমলটি করে নেকীর পাল্লা ভারী করে সংসারে পবিত্র ভালোবাসার নমুনা রাখতে পারি না!!! চলবে---
বিষয়: বিবিধ
৯৪০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ তোমাকে সুপ্রিয় বোন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন