সময়ের দাবী-আত্মউপলব্ধি-৮
লিখেছেন লিখেছেন মিশু ৩০ এপ্রিল, ২০১৫, ০৯:৪৯:০৪ সকাল
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
আল্লাহতায়ালার অশেষ মেহেরবানীতে আমরা ৪টি পবিত্র মাসের মধ্যে একটি রজব মাসে অবস্থান করছি। আল্লাহতায়ালা বলেন--
আসমানসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহতায়ালার বিধানে মাসের সংখ্যা লেখা ছিল বারোটি,এই (বারোটির) মধ্যে চারটি হচ্ছে(যুদ্ধ-বিগ্রহের জন্যে) নিষিদ্ধ মাস। এটা (আল্লাহর প্রণীত) নির্ভুল ব্যবস্থা। অতএব এই সময়ের ভিতরে তোমরা নিজেদের উপর যুলুম করো না।
সুরা আত তওবাঃ ৩৬
মহান আল্লাহতায়ালা অন্যান্য মাসের তুলনায় এই ৪টি মাসকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন। একটি হলো যুদ্ধ বিগ্রহ নিষেধ এবং অপরটি হলো নিজেদের উপর যুলুম না করা। গুনাহের কাজে লিপ্ত হওয়া অন্যান্য মাসে যতটা অন্যায় এই মাসগুলোতে তা আরো বেশী গুরুতর।
রমযান মাসকে সামনে রেখে এই মাস থেকেই আমাদের প্রস্তুতি পর্ব শুরু করা প্রয়োজন। সহীহ হাদীসের আলোকে বিশেষ কোন আমলের কথা এই মাসে আসে নাই। তবে পবিত্র মাস হিসেবে মহান আল্লাহ যে বিশেষত্ব দিয়েছেন তা আমাদের অনুসরন করা প্রয়োজন। মহান আল্লাহ বলেছেন-
হে ঈমানদার বান্দারা,তোমরা আল্লাহতাআলার নিদর্শনসমূহের অসম্মান করোনা,সম্মানিত মাসগুলোকে না।
সূরা আল মায়েদাঃ২
আবূ বাকর আল-বালখী বলেছেনঃ
“রজব মাস হলো বীজ বপনের মাস, শাবান মাস হল ক্ষেতে সেচ প্রদানের মাস এবং রামাদান মাস হল ফসল তোলার মাস”।
তিনি আরও বলেছেনঃ
রজব মাসের উদাহরন হলো বাতাসের ন্যায়,শাবান মাসের উদাহরন মেঘের ন্যায়, রামাদান মাসের উদাহরন বৃষ্টির ন্যায়, তাই যে রজব মাসে বীজ বপন করলো না,শাবান মাসে সেচ প্রদান করলো না, সে কিভাবে রামাদান মাসে ফসল তুলতে চাইতে পারে?
এই বীজ বপন এখনই করতে হবে, সময় স্রোতের মতো বয়ে চলে যাচ্ছে। এই দেহ, বুদ্ধি জ্ঞান,মেধা, শক্তি সব মহান আল্লাহতায়ালা তাঁর দেয়া বিধানের আনুগত্যের মধ্য দিয়ে স্রষ্টার কাছে পুর্ণ অবনত হওয়ার জন্য দিয়েছেন। যখনই কেউ এই নি’আমত গুলোকে বিপরীত পথে চালায় তখনি সেটা নিজের উপর যুলুম করা হয়। এই মাস থেকেই চলুন আমরা সে ধরনের কি কি যুলুম করে যাচ্ছি তা থেকে দূরে এসে পুর্ণ আত্মসমর্পনকারী হই। রজব শাবান রমজান এই তিনমাসের একটি সুন্দর পরিকল্পনা নিয়ে নিজেকে তৈরী করি নিষ্ঠাবান খাঁটি মুসলিম যার কথা ও কাজের মিল থাকে।
আজ সারা বিশ্বে কেনো মুসলিম অপমানিত যুলুমের স্বীকার হচ্ছে???
আমাদের কি কোন ত্রুটি নেই????
দেশে এতো কিছু হয়ে যাচ্ছে আমরা কি আমাদের কাজকে ঈমানের সাথে সমন্বয় করতে পেরেছি????
যে সংস্কৃতির উদাহরন আমাদের প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লাম এই যমীনে প্রতিষ্ঠিত করে দেখিয়ে গিয়েছেন ,আজ আমরা প্রযুক্তির উন্নয়নের ধারায় সে আদর্শকে আরো উজ্জিবিত না করে অন্যদের তুলনায় ভালো আছি এই নীতিতে জীবন যাপন করে সন্তুষ্ট আছি।
তবে এখনও অনেকেই আমাদের সামনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লাম এর সেই ধারক হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তবে নিতান্তই সংখ্যা কম। আল্লাহ আমাদের আত্মউপলব্ধি কার্যকরীভাবে করার ও সংশোধনের তৌফিক দান করুন।
মহান রব এইভাবে জানিয়েছেন--
আর নিজের অন্তরকে তাদের সঙ্গলাভে নিশ্চিন্ত করো যারা নিজেদের রবের সন্তুষ্টির সন্ধানে সকাল-সাঁঝে তাঁকে ডাকে এবং কখনো তাদের দিক থেকে দৃষ্টি ফিরাবে না। তুমি কি পার্থিব সৌন্দর্য পছন্দ করো? এমন কোন লোকের আনুগত্য করো না যার অন্তরকে আমি আমার স্মরণ থেকে গাফেল করে দিয়েছি, যে নিজের প্রবৃত্তির কামনা-বাসনার অনুসরণ করেছে এবং যার কর্মপদ্ধতি কখনো উগ্র, কখনো উদাসীন।
পরিষ্কার বলে দাও, এ হচ্ছে সত্য তোমাদের রবের পক্ষ থেকে, এখন যে চায় মেনে নিক এবং যে চায় অস্বীকার করুক। আমি (অস্বীকারকারী) জালেমদের জন্য একটি আগুন তৈরি করে রেখেছি যার শিখাগুলো তাদেরকে ঘেরাও করে ফেলেছে। সেখানে তারা পানি চাইলে এমন পানি দিয়ে তাদের আপ্যায়ন করা হবে, যা হবে তেলের তলানির মতো। এবং যা তাদের চেহারা দগ্ধ করে দেবে। কত নিকৃষ্ট পানীয় এবং কি জঘন্য আবাস! তবে যারা মেনে নেবে এবং সৎকাজ করবে, সেসব সৎকর্মশীলদের প্রতিদান আমি কখনো নষ্ট করি না।
সূরা কাহফ-(২৮-৩০)
বিষয়: বিবিধ
১১০০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন এবং মূল্যবান বিষয়টি তুলে ধরার জন্য শুকরিয়া! ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী মাস এবং দিন তারিখের সংবাদ রাখা দ্বীনি জ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত!
শুকরিয়া!
মন্তব্য করতে লগইন করুন