সময়ের দাবী- আত্মউপলব্ধি
লিখেছেন লিখেছেন মিশু ২৫ মার্চ, ২০১৫, ১২:০৯:৪২ দুপুর
দয়াময় আল্লাহতা’আলার নামে।
আসসালামু’আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
ব্যস্ততার জন্য নিয়মিত লেখা নিয়ে বসা সম্ভব হয় না তাই দুঃখিত।
জীবনের কাজগুলোকে (দায়িত্বের জবাবদিহিতা)অগ্রাধীকারের ভিত্তিতে সাজাতে গেলে সময় নিয়ে হিমশিম খেতে হয়। আল্লাহ আমাদের শক্তি ও সুস্থতা দান করুন।
আজ প্রফেশনাল হালাল রুজি কিভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে হারাম রুজি হয়ে যায় সেই উদাহরনে যাবো ।
প্রথমে আসি শিক্ষকতা নিয়ে---মানব জাতিকে আলোর পথে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে উনারা হলেন অগ্রপথিক। যারা সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালন করছেন আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু নিজেকে প্রশ্ন করি---
যে চুক্তি নিয়ে আমি এই পেশাতে এসেছি তা ঠিক মতো আদায় হচ্ছে কি না? যে সময়ে হাযির হতে হবে এবং যে সময় পর্যন্ত থাকতে হবে তা আমি করি কি না? এই ক্ষেত্রে অনেকে দেখা যায় মিথ্যা অজুহাতে অনেক সময় দেরী করে আসেন বা তাড়াতাড়ি চলে যান । আবার ক্লাশে পড়ানোর বুঝানোর যে দায়িত্ব ছিল তা সংক্ষেপে বা অনেক ক্ষেত্রে না পড়িয়ে বলে দেন বাড়ি থেকে পড়ে আসবে। অনেক সময় ২/১ বার সুন্দর করে বুঝান যেন তার কাছে প্রাইভেট পড়তে আগ্রহী থাকে ছাত্র/ছাত্রীরা। ক্লাশের সময় দেখা যায় মোবাইলে টুকিটাকি বা ফোনালাপে ব্যস্ত থাকেন অথচ সেই ক্লাশের পুরু সময়টা কিন্তু সেই ক্লাশের ছাত্র/ছাত্রীদের অধিকার।
আরো অনেক কিছু বলা যাবে যা আমাদের দায়িত্ব থেকে দূরে রেখে শয়তান আমাদের মাসের শেষে বেতনটা হারাম করে দিচ্ছে। কারন আমি আমার চুক্ত মত কাজ না করে,প্রতারিত করে মাসের শেষে পুরু টাকা নিতে জোর অধিকার খাটিয়ে যাচ্ছি। আবার দেখা যায় তথাকথিত সামাজিকতার নামে বা স্মার্ট থাকার অযুহাতে শরীয়তের পর্দাকেউ এডিট করে নিয়েছি। তাহলে এইভাবে কি আমার জান্নাত পাওয়া সম্ভব??????? আর যে মুসলিম মডেল দেখে অন্যরা আগ্রহী হবে তা কি এই ভাবে সম্ভব???? আবার বাইরেও যে কোচিং পদ্ধতি চালু করেছে-সেখানে ছাত্র ছাত্রীদের একসাথে পড়িয়ে থাকেন ছোট একটি রুমে।
আমি একবার একজন খুব ভালো কলেজের স্যার কে ফোন করে বলেছিলাম ,আপনারতো ছাত্র ছাত্রীর অভাব নেই,আপনিতো ইচ্ছে করলে আলাদা ব্যবস্থা করে কোচিং চালাতে পারেন।তাহলে অন্তত কিছুটা অঘটন রোখা যাবে। তিনি বললেন,আপা এইভাবেতো চিন্তা করিনি,আবার অনেক ছেলে মেয়েরা একসাথেই পড়তে চায়।আমরা সহশিক্ষায় অভ্যস্ত। আমি উনাকে বললাম অনেক অভিভাবকতো কলেজ সহশিক্ষায় দেন নি কিন্তু কোচিং এ এসে বাধ্য হয়ে যাছেন।তাহলে আপনাদের সহযোগিতা পেলে অন্যরা আগ্রহী হবেন।এর পরের সপ্তাহে জানতে পারলাম তিনি ছাত্রীদের জন্য আলাদা একটি গ্রুপ করেছেন।আলহামদুলিল্লাহ। ক্লাশে সময় দিয়ে যত্ন নিয়ে পড়ালে এই বাইরে (কোচিং) বের হবার তেমন প্রয়োজন পড়তো না। তাহলে এইভাবে ফরয লঙ্ঘন করে পড়াশুনায় কি বরকত হচ্ছে????? অনেক ছাত্র/ছাত্রী – শিক্ষিকা/শিক্ষকদের সাথে যে সম্পর্ক সৃষ্টি করছেন, বিপরীত লিঙ্গের সাথে শরীয়ত যেভাবে কথা বলার যোগাযোগের নির্দেশনা দিয়েছেন তা মেনে চলছেন না-আর যার পরিনতি আজ আপনারা পত্রিকায় দেখছেন।
আল্লাহ আমাদের শয়তান সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছেন—
হে বনী আদম! শয়তান যেন তোমাদের আবার ঠিক তেমনিভাবে বিভ্রান্তির মধ্যে নিক্ষেপ না করে যেমনভাবে সে তোমাদের পিতামাতাকে জান্নাত থেকে বের করেছিল এবং তাদের লজ্জাস্থান পরস্পরের কাছে উন্মুক্ত করে দেবার জন্য তাদেরকে বিবস্ত্র করেছিল। সে ও তার সাথীরা তোমাদেরকে এমন জায়গা থেকে দেখে যেখান থেকে তোমরা তাদেরকে দেখতে পাও না। এ শয়তানদেরকে আমি যারা ঈমান আনে না তাদের অভিভাবক করে দিয়েছি।
সূরা আল-আরাফ: ২৭
রাসুল সা: বলেছেন:
কোন ব্যক্তি পাপ কাজে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় যে সব কাজে গুনাহ নেই তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত আল্লাহভীরু লোকদের শ্রেণীভুক্ত হতে পারে না।
তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ
রাসুল সা: বলেছেন: হে আয়েশা! ছোট-খাটো গুনাহর ব্যাপারেও সতর্ক হও। কেননা এজন্যও আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে।
ইবনে মাজাহ
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো এবং হুকুম শোনার পর তা অমান্য করো না। তাদের মতো হয়ে যেয়োনা, যারা বললো, ‘আমরা শুনেছি’ অথচ তারা শোনে না। অবশ্যই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ধরনের জানোয়ার হচ্ছে সেই সব বধির ও বোবা লোক, যারা বিবেক-বুদ্ধি কাজে লাগায় না।
সূরা আনফাল: ২০-২২
আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। আগামীতে আরেকটি উদাহরন দিবো ইনশা’আল্লাহ।
বিষয়: বিবিধ
১০৫৭ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
াআল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক সময়ে আত্মউপলব্ধি করার তৌফিক দিন । আমীন ।
অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন