Corruption and Human Rights (দুর্নীতি এবং মানবাধিকার)

লিখেছেন লিখেছেন অপলা অতসী ১১ জুন, ২০১৫, ০১:৫৭:৩২ দুপুর

ভূমিকা

মানুষের মানুষ হিসাবে বেঁচে থাকার জন্য যে সব অধিকার অপরিহার্য্য সেটাই মানবাধিকার, যা কোন রাষ্ট্র তার নাগরিকদের দিয়ে থাকে। রাষ্ট্রে সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টা থাকে যাতে করে মানবাধিকার লংঘিত না হয়। রাষ্ট্র বা সরকার নয় প্রত্যেক নাগরিকের নিজ নিজ মানবাধিকারে সর্বদা সচেতন থাকতে হয়। কিন্তু দূভার্গ্যবশত আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত মানবতা বিপর্যস্থ আর মানবাধিকার হচ্ছে লংঘিত। মানবাধিকার অনেক কারণেই লংঘিত হতে পারে তার মধ্যে প্রধানতম হল দুর্নীতি। দুর্নীতি অক্টোপাসের মত আমাদের সমাজকে আকরে ধরে আছে। যার ফলে আজ প্রতিটি সেক্টরই কমবেশি দুর্নীতিগ্রস্ত।

বর্তমানে দেশের সবোচ্চ আইন সংবিধান এর কথা বারবার উচ্চারিত হলেও সংবিধানে বর্ণিত নাগরিক ও মানবিক অধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটে চলছে বেপরোয়াভাবে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির যে চিত্র পাওয়া যায়, তা একইসঙ্গে ভয়াবহ ও উদ্বেগজনক। মানবাধিকার লংঘনের ক্ষেত্রে আইনশৃংখলাবাহিনীর সম্পৃক্ততা, দুর্নীতির ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের দায়মুক্তি, জবাবদিহিতার অভাব, বাক-স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সরকারের বাধা মানবাধিকারের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

রাজনৈতিক নেতৃত্বে মহানমুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একটি দেশ ও জাতির জন্ম হয়েছে। আর আজ সেই বাংলাদেশেই সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত সেক্টর হিসেবে রাজনৈতিকদলকে চিহ্নিত করা হয়েছে। (গ্লোবালকরাপশনব্যারোমিটার-২০১২)।

আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী সংস্থ্যা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল টিআইবি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- রাজনৈতিক দল দুর্নীতিতে শীর্ষে অবস্থান করায় নতুন করে ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে ভাবনা শঙ্কামুক্ত নয়। রাজনীতি ছিল একসময় মানবসেবার মহান ব্রত। রাজনীতি পেশা হিসাবে কখনোই বিবেচিত ছিল না। দেশ, জাতি ও মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করার এক উন্নত মাধ্যম ছিল রাজনীতি। গত চারবছরে সর্বাধিক আলোচিত দুর্নীতি সময়ের ক্রমানুসারে যথাক্রমে কুইকরেন্টাল, শেয়ারবাজার, রেলেরকালোবিড়াল, ডেসটিনি, পদ্মাসেতু এবং হলমার্ক। যার পেছনে রয়েছে প্রতক্ষ বা পরোক্ষ রাজনৈতিক লেজুড়বৃ্ত্তি ফলে কোননাকোনভাবে মানবাধিবার হচ্ছে লংঘিত। দুর্নীতিই যেহেতু মনবাধিকারকে পদদলিত করছে, তাই প্রথমে এর বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়াতে হবে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার ও দারিদ্রবিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাগদালেনা সিপুলভেদা এবং পানি ও স্যানিটেশন বিশেষজ্ঞ ক্যাটারিনা আলবরে বলেছেন, “মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে সব ধরণের বৈষম্য ও দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। সেটি করতে পারলেই দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব হবে।”

মানবাধিকার কি?

মানবাধিকার প্রতিটি মানুষের এক ধরণের অধিকার যেটা তার জন্মগত ও অবিচ্ছেদ্য। মানুষ এ অধিকার ভোগ করবে এবং চর্চা করবে। তবে এটা অন্যের ক্ষতিসাধন ও প্রশান্তি বিনষ্টের কারণ হতে পারবে না। মানবাধিকার সব জায়গায় সবার জন্য প্রযোজ্য। এ অধিকার একই সাথে সহজাত ও আইনগত অধিকার। স্থানীয়, জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আইনের অন্যতম দায়িত্ব হলো এসব অধিকার রক্ষণাবেক্ষণ করা।

Robert L. Barker বলেন, Human Rights are the opportunity to be accorded the some progressive and obligations as to race, sex, language, or religion. [Robert L. Barker (edit): The Social work Dictionary, NAS, New York, 1995, p.- 173]

জীবনধারণ ও বেঁচে থাকার অধিকার এবং মতামত প্রকাশের অধিকার, অন্ন বস্ত্র ও শিক্ষা গ্রহণের অধিকার, ধর্মীয়-সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণের অধিকারকে মানবাধিকার বলেন।

মানবাধিকার প্রত্যেক ব্যক্তির মর্যাদাকে সম্মান প্রদর্শনেই নিহিত। মানবাধিকার ব্যক্তিকে স্বাধীনতা, সমতা এবং মর্যদা নিশ্চিত করার ক্ষমতা দিয়ে থাকে।

সহজ ভাষায় মানবাধিকার হচ্ছে-মানুষের সহজাত অধিকার যা কোনো মানব সন্তান জন্মলাভের সাথে সাথে অর্জন করে। মূলত যে অধিকার মানুষের জীবন ধারণের জন্য আবশ্যক তাকে সাধারণভাবে মানবাধিকার বলা হয়।

মানবাধিকারের বিকাশ

মানবাধিকার ধারণা কেবল কয়েক দশক নয় বরং কয়েক শতাব্দী ধরে বিকশিত হয়ে বর্তমান রূপ লাভ করেছে। ব্যাবিলনীয় কোড থেকে জানা যায়, ১৭৫০ অব্দে রাজা হাম্বারাবি নাগরিকদের সাহায্য করার জন্য সর্ব প্রথম কিছু বিধান জারি করেন। তার Code of Justice মানবাধিকার সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তবে মানবাধিকার বিকাশে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হল ৬২২ খ্রিষ্টাব্দ। এসময় সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে রচিত হয় মদিনার সনদ।

এরপরে ধারাবাহিকভাবে ১২১৫ সালে ইংল্যান্ডে জনগণের প্রবল আন্দোলনের কারনে Maghna Carta প্রতিষ্ঠিত হয়। এটা ইংল্যান্ডে মানবাধিকার বিকাশে সবচেয়ে বড় দলিল। এরপরে ১৬২৮ সালে পিটিশন অব রাইটস প্রতিষ্ঠা করা হয়। এখানে চারটি ধারা সন্নিবেশন করা হয়। ১৬৮৯ সালে বিল অব রাইটস সংবিধানে সংযোজন করা হয়। ১৭০১ সালে Act of Settlement এর মাধ্যমে রাজতন্ত্রে ও স্বেচ্ছাচারিতা দুর করা এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৭১ সালের আমেরিকার মূল সংবিধান সংশোধন করে American Bill of Rights স্বীকৃতি দেন।

১৯৪৫ সালে ২৪ অক্টোবর ৫১ রাষ্ট্র নিয়ে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। যার সদস্য সংখ্যা ১৯২। বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার রক্ষার জন্যই সর্বোচ্চ এই সংস্থাটি গঠন করা হয়। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে UN Declaration of Human Rights অনুমোদনে করে।

মানবাধিকারের বৈশিষ্ট্য

মানবাধিকারের প্রথম বৈশিষ্ঠ্যর মধ্যে রয়েছে সার্বজনীনতা। এটা পৃথিবীর সব মানুষের জন্য প্রযোজ্য। সব মানুষ এই অধিকারগুলো সমানভাবে ভোগ করতে পারবে।

দ্বিতীয়ত: অবিচ্ছেদ্য নিরবিচ্ছিন্নতা। ন্যায়সঙ্গত কোন কারণ ছাড়া কোন ব্যক্তির কোন ধরণের মানবাধিকার কেড়ে নিতে পারবে না।

তৃতীয়ত: পারস্পারিক মানবাধিকার সমূহ একটি আরেকটির সাথে পারস্পারিক সম্পর্ক যুক্ত ও নির্ভরশীল। একটিকে আপরটি থেকে আলাদা করা যায় না।

চতুর্থত: সমতা ও বৈষম্যতা: মানবাধিকারগুলো জাতি, ধর্ম, বর্ণ গোত্র, রাজা-প্রজা কোনো পার্থক্য করা যাবে না। সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে।

পঞ্চমত: আইনের শাষন ও কর্তব্যপরায়ণতা: ব্যাক্তির ক্ষেত্রে অধিকার পেতে হলে অবশ্যই অন্যের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। আবার রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে অবশ্যই জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে Policy গ্রহণ করতে হবে একই সাথে জবাবদিহীতা নিশ্চিত করতে হবে।

মানবাধিকারগুলো পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়

ক). রাজনৈতিক অধিকার

খ). নাগরিক অধিকার

গ). অর্থনৈতিক অধিকার

ঘ). সামাজিক অধিকার

ঙ). সাংস্কৃতিক অধিকার

মৌলিক মানবাধিকার সমূহ

জাতিসংঘ ঘোষিত সার্বজনীন মানবাধিকার সনদ অনুযায়ী প্রধান প্রধান মানবাধিকার সমূহ নিম্নরুপ-

১. সমতা এবং বৈষম্যহীন অধিকার

২. জীবণ ধারণ এবং স্বাধীনতা লাভের অধিকার

৩. খাদ্যের অধিকার

৪. চিকিৎসার অধিকার

৫. শিক্ষার অধিকার

৬. রাজনৈতিক অধিকার

৭. মতপ্রকাশ ও বাকস্বাধীনতার অধিকার

৮. সমিতি বা সংগঠন করার অধিকার

৯. শান্তিপূর্ণ সভাসমাবেশ করার অধিকার

১০. ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার

১১. ধর্ম পালন ও প্রচারের অধিকার

১২. নিজ সংস্কৃতি চর্চার অধিকার

১৩. তথ্য পাওয়ার অধিকার

১৪. সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ গ্রহণ করার অধিকার

১৫. নির্যাতন ও বন্দিদশা থেকে মুক্তির অধিকার

১৬. আইনের দৃষ্টিতে সমতা ও ন্যায়বিচারের পাওয়ার অধিকার

১৭. স্বাধনিভাবে চলার অধিকার

১৮. গোপনীয়তার অধিকার

১৯. জাতীয়তার অধিকার

২০. বিয়ে ও পরিবার গঠনের অধিকার

২১. কর্মসংস্থান লাভের অধিকার

২২. সামাজিক নিরাপত্তা লাভের অধিকার

মানবাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের বাধ্যবাধকতা

নাগরিকের অধিকারগুলোকে শ্রদ্ধা করা, রক্ষা করা এবং পরিপূর্ণতা করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে সব রাষ্ট্রেরই।

১. শ্রদ্ধা করার বাধ্যবাধকতা বলতে বুঝায় ব্যক্তির প্রাপ্য অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র এমন কিছু করবে না যাতে কোন রকম নাগরিকের অধিকার ক্ষুন্ন হয়।

২. অধিকার রক্ষা করার বাধ্যবাধকতা বলতে বুঝায় তৃতীয় কোন পক্ষ কোন নাগরিকের অধিকার ভোগে বাধা প্রদান করে, রাষ্ট্র সেই বাধা থেকে নাগরিকের অধিকারকে সুরক্ষা দেবে।

৩. পরিপূর্ণ করার বাধ্যবাধকতা বলতে বুঝায় রাষ্ট্র পত্যেক নাগরিকের অধিকারগুলোকে তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে উন্নত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

৪. পদক্ষেপ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা বলতে নাগরিকের অর্থনৈতিক, সামজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের প্রতি সম্মান রেখে যথাযথ পন্থায় ধারাবাহিকভাবে অর্জনের জন্য সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করবে।

দুর্নীতি Corruption

দার্শনিক, ধর্মতাত্ত্বিক, নৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে কোন আদর্শের নৈতিক বা আধ্যত্মিকতা অসাধুতা বা বিচ্যুতিকে নির্দেশ করে। বৃহৎ পরিসরে ঘুষ প্রদান, সম্পত্তির আত্মসাৎ এবং সরকারি ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করাই দুর্নীতির অন্তর্ভুক্ত।

দুর্নীতি শব্দটি যখন বিশেষণ হিসেবে ব্যবহুত হয় তখন সাংস্কৃতিক অর্থে “সমুলে বিনষ্ট হওয়াকে” নির্দেশ করে। দুর্নীতি শব্দটি সর্ব প্রথম ব্যবহার করেন Aristotle তার পরে Sicario যিনি ঘুষ এবং সৎ অভ্যাস ত্যাগ প্রত্যয়ের যোগ করেছিলেন।

রাজনীতি বিজ্ঞানের অধ্যাপক মরিস লিখেছেন, দুর্নীতি হল ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয়

ক্ষমতার ব্যবহার।

অর্থনীতিবিদ আই. সিনিয়র একে সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে বলেছেন, দুর্নীতি এমন একটি কার্য যেখানে গোপনে প্রদানের কারণে তৃতীয় পক্ষ সুবিধা পায়। যার ফলে তারা বিশেষ ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার নিশ্চিত করে, যা দুর্নীতির সাথে যুক্ত পক্ষটি ও তৃতীয় পক্ষ উভয়ই লাভবান হয় এবং এই কাজে দুর্নীতিগ্রস্ত পক্ষটি থাকে কর্তৃপক্ষ।

দুর্নীতি কী?

Chambers 21st Century Dictionary অনুসারে Corrupt শব্দটির অর্থ হচ্ছে To make piutrid or To taind, To Debaize, To Spoil, To Destroy The purity of. আবার এর অর্থ করা হয়েছে পঁচা, ঘুষ, ভেজাল, কৃত্রিম ও নকল হিসেবে। দুর্নীতিকে অনেকেই ঘুষ, কিকব্যাক অথবা বকশিশের আরেক নাম বলে অভিহিত করে থাকেন। সরকারী কর্মকান্ডের পরিসরে দুর্নীতি সংঘটিত হয় যা যখন এর একটি অঙ্গ অথবা এজেন্ট এমন ধরণের সিদ্ধান্ত নেন যেটি অন্যায়ভাবে আর্থিক সুবিধা আদায় অথবা স্বজনপ্রীতি অথবা রাজনৈতিক প্রচারাভিযানে চাঁদা প্রদানকারীর স্বার্থ আদায়ের পথ খুলে দেয়।

তবে সিস্টেমেটিক দুর্নীতি সর্বগ্রাসী কাঠামোবিস্তৃত দুর্নীতিটাই সবচেয়ে মারাত্মক। গোষ্ঠিস্বার্থের সংঘাত, বেশী বেশী নিয়মবহির্ভূত অনানুষ্ঠানিক ক্ষমতা প্রয়োগ, জবাবদিহিতার অভাব, অস্বচ্ছতার বিস্তার, সরকারী চাকুরীর বেতনভাতার দৈন্য এবং ”বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদার” ন্যাক্কারজনক সংস্কৃতি যেথানে প্রবল সেখানে দুর্নীতি বাসা বাধবেই। দুর্নীতি পরিণত হবে নিয়মে, সুশাসন হবে বিতাড়িত।

দুর্নীতির মানদন্ড

দুর্নীতি বিভিন্ন মানদন্ডে ঘটতে পারে, আওতা বা বিস্তৃতি ছোট হলে এবং তাতে যদি অল্পসংখ্যক মানুষ জড়িত থাকে তবে তাকে “ক্ষুদ্রার্থে” (petty corruption) আর যদি সরকার বড় আকারে প্রভাবিত হয়ে পড়ে তবে “ব্যপকার্থে” (grand corruption) দূর্নীতি হিসেবে নির্দেশিত হয়।

ক্ষুদ্র দুর্নীতি

ক্ষুদ্র দুর্নীতি, ছোট মাত্রায় এবং প্রতিষ্ঠিত সামাজিক অবকাঠামো ও প্রশাসনিক নিয়মের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়। অনুগ্রহ বা অনুকুল পরিবেশ নিশ্চিত করতে এই প্রকারের দুর্নীতিতে ক্ষুদ্র উপহার বা ব্যক্তিগত সংযোগকে ব্যবহার করা হয়। মুলত উন্নয়নশীল বিশ্বে এই প্রকারের দুর্নীতি বেশি, সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের তুলনামুলক নিন্মপর্যায়ের বেতন-ভাতা প্রদান যার এওক্টি বিশেষ কারন।

দুর্নীতির পরিনাম

দুর্নীতির কুফল ব্যপক ও সুদুরপ্রসারী। দুর্নীতি একটি বহুমাত্রিক ব্যাধি যেখান থেকে রাজনীতি, সমাজ ব্যবস্থা, প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অবক্ষয়, পচন শুরু, এমনি অব্যহতভাবে তা ধ্বাস নামতে পারে। এর ফলে বিশেষ করে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

দুর্নীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা

একটি স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্ব ও সার্বিক নিরাপত্তা বড় ধরণের ষড়যন্ত্র কারণে হুমকীর সম্মুখীন হতে পারে। আর যদি দেশের অভ্যন্তরে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যে ষড়যন্ত্রে সহায়তা করে তার চেয়ে বড় দুর্নীতি আর কি হতে পারে। বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশের বড় সম্পদ হচ্ছে জনগণ। অথচ জনগণের বরাদ্দকৃত সম্পদ কমিয়ে দেয়া হয়। আবার লুটপাট করা হয়। মানবসম্পদ সৃষ্টির কাজে বাঁধা সৃষ্টি করা হয়। এগুলো সবই মানবাধিকারের লংঘন। কারণ ক্ষমতার বলে মানুষের অধিকারকে খর্ব করা হচ্ছে। জনগণ তার ন্যায্য অধিকার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সহায়ক গ্রন্থাবলী

১. অপরাধ বিজ্ঞান, অধ্যক্ষ মো. আলতাফ হোসেন। মুহিত পাবলিকেশন্স। প্রকাশ ২০০৯। ৪ ইসলামিয়া মার্কেট, নীলক্ষেত, ঢাকা – ১২০৫।

২. The Social work Dictionary, NAS, New York, 1995, p.- 173

৩. মানবাধিকার ও দুর্নীতি বিরোধী একটি গবেষণা, ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

৪. বাংলা উইকিপিডিয়া।

৫. The Foreign Corrupt Practices Act (FCPA) of 1977

৬. দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকীয়, ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, অর্থনীতিবিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য।

৭. First published Fri Feb 7, 2003; substantive revision Sat Nov 8, 2014

৮. প্রথম আলো।

Md.Niaz Makhdum

Department of Sociology



বিষয়: রাজনীতি

১৩৩৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

325171
১১ জুন ২০১৫ দুপুর ০২:৩০
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : অসাধারণ, আপনার পোস্টটি অত্যন্ত ভাল লেগেছে।আমরা জানি বাংলাদেশ ১ম দুর্নীতিতে প্রথম হয় ২০০১ সালে,তখন এই সরকারই ছিল পাওয়ারে। এরপর কয়েক বছর ধারাবাহিকতা বজায় ছিল বর্তমান রাজপথের বিরোধী দলের। ধন্যবাদ আপনাকে।
১৪ জুন ২০১৫ দুপুর ০২:২৫
267936
অপলা অতসী লিখেছেন : লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাসুম।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File