বর্তমান প্রেক্ষাপটঃ জামায়াত শিবিরের করনীয় …
লিখেছেন লিখেছেন কমরেড মাহমুদ ৩১ মে, ২০১৫, ০৪:৪৪:৫৫ বিকাল
যুদ্ধের ময়দানে প্রথম নিরাপদ করতে হয় পিছু হটার পথ। নিশ্চিত বিজয় যেনেও যে যুদ্ধ হয় সেখানেও একটি এক্সিট পথ কন্টকমুক্ত করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়। কারন যদি কখনও যুদ্ধের কৌশলে পিছু হটতে হয় সেটা যেন নিরাপদ ভাবে করা যায়। এই যায়গাটায় জামায়াত শিবির কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। কোন প্রকার নিরাপদ এক্সিট না রেখেই তারা আওয়ামী বিরুধী আন্দোলনে সকল শক্তি ক্ষয় করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে…!! তাঁদের অনেকের সাথে কথা বলে আমার মনে হয়েছে তাঁরা ঠিকমত জানেনা তাঁদের এখন কি করা উচিৎ। আমার আশংকাটা এখানেই…!! এদেশে জামায়াত শিবির যদি পরাজিত হয় মনে করতে হবে বাংলাদেশে ইসলামের কথা বলার মত, ইসলাম প্রতিষ্ঠার মত কোন সম্ভাবনা এদেশে আর থাকেনা। জামায়াত এদেশে ইসলামী বিপ্লবের এক বৃহত্তর আন্দোলন আর শিবির ছাত্রদের নিয়ে সেই আন্দোলনের সাহায্যকারী হিসাবে আঞ্জাম দিচ্ছে। এমন সুশৃঙ্খল, আদর্শিক দল বাংলাদেশে আর একটিও কেউ দেখাতে পারবেনা। এমন একটি দল যখন কোন ভুল সিদ্ধান্ত নেয় বা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারে তখন এদেশের টোটাল মুসলিম জনগোষ্ঠী ভুক্তভুগী হয়ে যায়।
জামায়াত শিবিরের হাজার হাজার ছেলে আহত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে…!! সাতক্ষীরার পরে মিঠাপুকুর ধ্বংসস্তূপে পরিনত হয়েছে…!! গাইবান্ধার পলাশবাড়ী এক নির্যাতিত জনপদের নাম..!! জামায়াত শিবির ট্যাগ খেয়ে সেখানকার সাধারন জনতাকেও সব কিছু হারাতে হয়েছে। সরাকারী অত্যাচারে এলাকাবাসী নিজ ভুমি ছেড়ে অন্য এলাকায় পাড়ি জমিয়েছে। এভাবে সারা দেশের টোটাল জনশক্তি ফেরারি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে…!! সারাদেশে শিবিরের ছেলেদের লেখাপড়া, ক্যারিয়ার সব তছনছ হয়ে গিয়েছে। বিনা চিকিৎসায় আহত হয়ে অনেকে জেলে পড়ে আছে…!!
মানবতাবিরুধী মামলায় ক্যাঙ্গারু ট্রাইবুনালে জামায়াতের প্রথম সারির নেতাদের ফাঁসি দেওয়া হচ্ছে এবং একে একে সবাইকে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। ৭১ এর খুনের মামলায় উপর সারির নেতাদের ফাঁসি দেওয়া হবে আর তাঁর পরের সারি নেতাদের এই সরকার পেট্রোল বোমায় পুড়িয়ে মানুষ হত্যার অভিযোগে ফাঁসির দড়িতে ঝুলাবে। জামায়াত শিবিরের নেতৃবৃন্দ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় তাঁকে সামনে আরো বড় মুল্য দিতে হবে। এই সরকার বা যেকোন সরকার ক্ষমতায় থাকতে জামায়াত শিবিরকে হত্যার এই রাজনীতি অব্যাহত রাখবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলেও আটককৃত একজন নেতাকেও ছেড়ে দিতে পারবেনা। আওয়ামী রাজনীতির সামনে এই কাজ বিএনপির পক্ষে অসম্ভব। বড়জোড় বিচার বিলম্বিত করে ফেলে রাখতে পারবে, তারমানে বিএনপির আমলেও জামায়াত নেতাদের জেলেই পচে মরতে হবে। তাহলে আমরা কি হিসাব করে চলছি, বিএনপিকে ক্ষমাতায় আনার জন্যে আমরা যে আন্দোলন করে নিজেদের সব হারাচ্ছি এতে আমাদের বেনিফিট কি?? কিভবে হবে?? তাঁদের সাথে কি আপনাদের কোন লিখিত চুক্তি আছে?? কি আছে সেই চুক্তিতে?? তাঁরা ক্ষমতায় গেলে কোন কোন শরীয়া আইন সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করবে?? আছে কিছু এমন?? তাঁদের সাথে জামায়াতের জোট ছিলে কিসের?? শুধুমাত্র নির্বাচনী জোট, আন্দোলন করে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার কোন জোট কি হয়েছিল?? আপনারা লড়ছেন কিসের জন্য? বিএনপিকে ক্ষমতায় আনাতে নাকি ইসলামের বিজয়ের জন্য?? ইসলামের জন্য এই লড়ায় হলেতো আপনারা ক্ষমতায় যাওয়ার কথা ভাববেন? কেন এখনও ভাবেন বিএনপি ক্ষমতায় যাবে, আর আমরা কিছু বেনিফিট যদি পাই…!! কেন ভাবছেন বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আপনাদের নেতাদের ছেড়ে দিবে?? কোয়াইট ইম্পসিবল এই কাজ বিএনপির পক্ষে..!! চিন্তাধারায় পরিবর্তন আনা জরুরী হয়ে পড়েছে…
এখন যতই সাহসী কথা বলে বা এই করবো সেই করবো বলে মনে মণে শান্তনা খুজেন আর যাই করেন জামায়াত শিবিরের সামনের সময় খুব ভালনা। ভালনা বলতে তাঁদের ভাল থাকতে দিবেনা আমি এটা বুঝাতে চাইনি। ইসলামী আন্দোলন করতে আসলে ইসলামের শত্রুরা ভাল থাকতে দিতে চাইবেনা এটাই স্বাভাবিক। বাতিল গোষ্ঠী ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ভাল থাকতে দিবে এটা আমি যেমন বিশ্বাস করিনা আবার এটাকে আমি কোন সমস্যাও মনে করিনা। বাতিলের মোকাবেলায় জামায়াত শিবিরের করনীয় কি তাঁরা সেটা নিজেরাই জানেনা। এই না জানার জন্য সামনের সময়ে তাঁদের চড়া মুল্য দিতে হবে। আমি চিন্তিত শুধু এতটুকু নিয়ে …
এখন হয়তো নেতারা বলবে- হ্যাঁ হ্যাঁ … আমরা এগুলো নিয়ে এখন কাজ করছি, ভাবছি কি করা যায়, ইনশাআল্লাহ্ সব ঠিক হয়ে যাবে .. !! আসলে যেভাবে তাঁরা চলছে, ইনশাআল্লাহ্ মোটেই ঠিক হবেনা। রিজিকের মালিক আল্লাহ্, কিন্তু তাঁর জন্যে রিজিকের সন্ধান করতে হয়। আল্লাহ্ আপনাকে বাসায় এসে খাবার দিয়ে যাবেনা…!! এমনিভাবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে সামনের দিন সব ঠিক করার জন্যে বেশ কিছু কর্মপন্থা গ্রহন জরুরী হয়ে পড়েছে।
ঢাবির এক মেধাবী ছাত্রের সাথে দেখা হলো, এখন ঢাকা জেলায় শিবিরের একটি বড় দায়িত্বে আছে। তাঁর মাথার উপর এখন ৩০ টা মামলা ঝুলতেছে। নিজ বাড়ি ছেড়ে আজ এখানে কাল ওখানে করে দিন পার করছে সাথে নিষ্ঠার সাথে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করছে। তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলার অলরেডি চার্চশিট দেওয়া হয়ে গেছে। সে জানেনা এখন তাঁর করনীয় কি??? এখন প্রশ্ন হলো এই ছেলের করনীয় কি এটাকি এই ছেলের চিন্তা করার বিষয়?? একজন নামাযী, শান্ত, ভদ্র ছেলে আজ ফেরারী আসামী হয়েছে কার জন্যে?? এই সংগঠনকে ভালবেসে ইসলামী আন্দোলণে শরীক হয়ে সংগঠনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে যেয়ে সরকারের রোষানলে পড়তে হয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সংগঠনের পরিকল্পনা কি?? কেউ জানেনা, কারন কোণ পরিকল্পনা নেই। কাওকে কাওকে প্রশ্ন করলাম-
– কেন পরিকল্পনা নেই?
উত্তর- আমরা বুঝতে পারিনি এমন পরিস্থিতি আসবে…!!
– এটা বুঝার জন্যে কি আপনাদের কোন ফরকাষ্ট রিসার্চ সেল আছে?? কি করলে কি হতে পারে, তখন কি করনীয় এসব চিন্তা করেই তো একটি সিদ্ধান্ত হয়, নাকি??
উত্তরঃ আমরা আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিই, এখন আমরা খারাপ পরিস্থিতি থেকে কিভাবে বের হওয়া যায় এটা নিয়ে কাজ করছি। তো আপনার এই ফরকাষ্ট রিসার্চ সেল সেটা কি?
মনে মনে ভাবলাম সব ধরনের জনশক্তিকে মিছিলে হাজির করিয়ে যারা আজ সবাইকে ফেরারী বানিয়ে দিয়েছে তাঁদের পক্ষে সাংগঠনিক ফরকাষ্ট রিসার্চ সেল কি সেটা জানা বা জ্ঞান থাকার কথা না … ! মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিভিন্ন ভার্সিটির সেরা ছাত্র সবাইকে নিয়ে রাজপথে হরতালের পিকেটিং করিয়েছি। নিজেরাই ধ্বংস করে দিয়েছি সামনের কিছু ইসলামী বুদ্ধিজীবী শ্রেনীকে।
-তাকে বললাম, এখন ভাবছেন কেন?? ভাবনার বিষয়টা শেষ করতে হয় কোন কাজ করার আগে!!! আর এখন কিভাবে করছেন? কারা আছে এই কাজের সাথে? কোন কমিটি বা সেল গঠন করেছেন? তাঁরা কোন রিপোর্ট দিয়েছে? কি আছে সেখানে? কতদিনের ভিতর এগুলো ঠিক হয়ে যাবে বলে মতামত দিয়েছে?
উত্তর- না মানে … আর কি … আমরা কয়েকজন মিলে আলাপ করেছিলাম।
-তারমানে এখনও যেটা বলছেন আমরা কাজ করছি এটাও নিজের সাথে নিজেরাই প্রতারনা করছেন। কার্যকরী কিছুই করছেন না। ভাবছেন কিছু করা দরকার, কিন্তু জানেন না সেইটা করনীয়টা কি?? সব জানা যে আল্লাহ্ আপনাকে দিয়েছে এটা মনে করা ঠিক না মুহতেরাম। সবাইকে আল্লাহ্ সব জ্ঞান দেন না। এই কারনেই সেল করে, কমিটি করে, দেশের সেরা বেধা গুলোকে কাজে লাগিয়ে যেকোন কাজের আগে টোটাল রিসার্চ করতে হয়। আর আপনারা সেটা বাদ দিয়ে সেই সেরা মেধাটাকেও জোড় করে মিছিলে টেনে নিয়ে তাঁকেও ফেরারী করে দিয়েছেন …!! এখন কাকে এই রিসার্চের দায়িত্বে দিবেন?
আসলেই যে সব কিছুই বাতাসে চলছে তাঁর কিছু নমুনা দেখুন। আমার বড় ভাই একটি স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপ্যাল হিসাবে আছেন। একদিন কথায় কথায় ঢাকা মহানগরীর একটি উচুমানের নীতি নির্ধারককে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ভাই ৭ দিন তো হয়ে গেল, এই অবরোধ আর কয়দিন করবেন? উত্তরে তিনি বললেন, পতন না হওয়া পর্যন্ত…. !! ভাইয়া অবাক হয়ে বললো যদি এক বছরেও পতন না হয় আপনারা এক বছর অবরোধ করবেন?? তিনি তাচ্ছিল্যের সাথে বললেন, ধুর মিজান ভাই আপনারা যে কি ভাবেন..!! দেখেন সামনের ৭ দিনের ভিতর সরকারের পতন ঘটবে…
আজ কোথায় আছেন এই ঢাকা মহানগরীর নীতিনির্ধারক কেউ জানেনা। তিনি নিজে আত্বগোপনে আছেন। উনার কথায় নির্ভর করে যারা ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল অনেকে গুলি খেয়েছেন, কেউ ফেরারী আর কেউ বা রিম্যান্ডে রয়েছে। উনার নিজ পুত্রও দিনের পর দিন রিম্যান্ডে রয়েছে। এতে আমার বা ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের কোন অভিযোগ নেই। অভিযোগ এই জায়গায় তিনি কিসের উপর নির্ভর করে বললেন ১৫ দিনের ভিতর সরকার পতন হবে?? কোন হাইপোথিসিসে নির্ভর করে সরকারের পতন নিশ্চিত যেনে আন্দোলনে যাওয়া হলো?? ধরলাম যেভাবে চিন্তা করা হয়েছিল সেইভাবে বাস্তবে হয়নি। ওকে, হাইপোথিসিস ফেইল করতে পারে কিন্তু যদি হাইপোথিসিস ব্যর্থ হয় তখন এক্সিট পয়েন্ট কোনটা রাখা হয়েছিল?? কোন কাজের এক্সিট পয়েন্ট না রেখে কি কোন কাজ করা হয়?? যুদ্ধের ময়দানে সব সময় নিরাপদ রাখা হয় পিছু হটার জায়গা। আপনাদের পিছু হটার যায়গা কোথায় রাখছেন?? অবরোধ নাই কিন্তু সেইটা যে নাই সেই ঘোষনাও দিতে পারেন নাই আপনারা …!! আর এখন টোটাল জনশক্তিকে নিয়ে পালাতক একটি মানবেতর জীবন যাপন করছেন..!!
ঢাকা জেলা দক্ষিনের এক রাজপথের লড়াকু শপথের কর্মীর সাথে আলাপ হলো। ঢাবিতে এক বছর লেখাপড়া করে এখন আর সেখানে যেতে পারেনা। মিছিল মিটিং ময়দান সব এক সাথে করতে যেয়ে ক্যাম্পাসে সে পরিচিত হয়ে গেছে। এখন ভাবছে প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়া যায় কিনা! এই ভাবনাটা কে ভাববে?? এই ভাবনা শতভাব সংগঠনকে নিতে হবে। দেশে যে লেখাপড়া করতে পারবেনা তাঁকে দেশের বাইরে সংগঠনের তথ্যাবধানে, নিজেদের লবিং এ বিশ্বের যেকোণ মুসলিম দেশে পড়ালেখা করার ব্যবস্থা নিন। অনেকে বলে সংগঠনের অনেক ভাই আমাদের দেশের বাইরে লেখাপড়া করছে। হ্যাঁ, করছে। সেটা তাঁরা নিজেদের তথ্যাবধানে যোগার করেছে। কয়জনকে সংগঠন ব্যবস্থা করে দিয়েছে। বিপ্লবের আগ পর্যন্ত আপনাকে যোগ্য জনশক্তি তৈরি করা অব্যাহত রাখতে হবে। এতবছর ধরে এই উপমহাদেশ ইসলামী আন্দোলন করছেন আপনাদের বিশ্বে এমন কোন লবিং নেই??
আমি কিছু ভাইকে নিয়ে সারা দেশে আন্দোলনে আহত ভাইদের একটা সমীক্ষা করেছিলাম। সাথে তাঁদের চিকিৎসা কেমন পাচ্ছে সেটা খুজতে যেয়ে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। আমার কথা বিশ্বাস করুন, যারা আহত হয়েছে, গুলিবিদ্ধ হয়েছে তাঁদের ভিতর বড় একটা অংশকে সংগঠন ঠিকমত চিকিৎসাও দিতে পারছেনা। এখন হয়তো সংগঠন নিজেও আর্থিক সমস্যায় আছে। সাতক্ষীরার এক সাথীকে পুলিশ ধরে হাতের প্রতিটা নখ টেনে টেনে তুলে দিয়েছে। তাঁর প্রতিমাসে ঔষুধ বাবদ পাঁচ হাজার টাকা খরচ হয়। এই ছেলের ঘরে চাল কেনার পাঁচ টাকা নেই সে কিভাবে পাঁচ হাজার টাকার ঔষুধ খাবে? একদিন সাতক্ষীরা জেলা সভাপতিকে ফোন দিতে বলেছিলাম। জেলা সভাপতি জানালো পরিস্থিতি আরো খারাপ, সেখাণে শতশত পরিবার খোলা আকাশের নীচে বসবাস করে শুধুমাত্র ইসলামপন্থী হবার অপরাধে। সেখানকার জামায়াতের আর্থিক অবস্থাও খুব নাজুক। আমি একজনকে বলে এই ছেলের চিকিৎসা বাবদ মাসে পাঁচ হাজার করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। যে এলাকাটা শুধুমাত্র ইসলামকে ভালবেসে সাংঠনিক সিদ্ধান্তে আপনাদের বিশ্বাস করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে সারাদেশ থেকে মাসের পর মাস বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। আপনাদের অবরোধ তুলে নেওয়ায় সেই তাঁদের উপর নিপীড়ন শুরু হলে কি করেছিলেন?? কোণ খোজ খবর সাহায্য সহযোগিতা কেন্দ্রীয়ভাবে কি কি করা হয়েছিল বলে আমি খবর পাইনি। সাতক্ষীরার আন্দোলন ভবিষ্যতে আর দেখতে পাবেন বলে ভুলেও ভাববেন না। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের ঘরবাড়ি সাথে চুরমার হয়ে গেছে আপনাদের প্রতি সেখানকার ইসলাম প্রিয় সাধারণ জনতার বিশ্বাস…
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ীর জেলা সেক্রেটারীর সাথে একবার দেখা হয়েছিল। শতভাগ যোগ্য একজন ব্যাক্তি, পোড় খাওয়া ছাত্রনেতা। সেখানকার গুলি খাওয়া দু ভাইয়ের চিকিৎসার ব্যপারে আমার সাথে কথা বলেছিল। আন্দোলনের সময় আমাদের পলাশবাড়ীর কথা মনে আসে। আন্দোলন না থাকলে আর খবর নিই না তাঁদের এখন কি দরকার। দিনে দিনে ইসলামের এই উর্বর ভুমিকে আমরাই নষ্ট করে ফেলবো কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে…
চট্রগ্রামের দক্ষিন জেলার গুলি খাওয়া এক ভাইকে দেখেছি টাকার অভাবে অপারেশন করতে পারছিলোনা। জেলা সেক্রেটারীকে জিজ্ঞেস করলে বলেছিল ভাই আর্থিক সংকোটে আছি। আমরা কজন ভাই এগিয়ে আসলে তাঁর অপারেশন সম্ভব হয়। দুদিন পরেই জানতে পারলাম দক্ষিন জেলা নতুন তিনটা মটর সাইকেল কিনেছে। আমার মাথায় আসেনা, সব যদি পঙ্গু হয়ে পড়ে থাকে এই মটর বাইক কে চালাবে???
আমাদের এই মুহূর্তে দরকার –
=কেন্দ্রীয় চিকিৎসা সেল
=কেন্দ্রীয় আইনী সহায়তা সেল
=কেন্দ্রীয় পুনর্বাসন সেল
=ক্যারিয়ার পুনর্গঠন সেল
=কেন্দ্রীয় শরীয়া সেল
=কেন্দ্রীয় ফতোয়া সেল
=কেন্দ্রীয় রিসার্চ সেল
আরো কিছু দরকার হলে সেটাও চিন্তাভবনা করে এড করে নিন….
আমাদের আজ থেকেই দরকার ছিল চিকিৎসা কমিটি করে দিয়ে ফান্ড কালেক্ট করা। এই টাকার একটা পয়সাও অন্যদিকে যাবেনা। প্রতিজেলায় থাকবে এই কমিটির শাখা কমিটি। তাঁদের রিপোর্ট নিয়ে কেন্দ্রীয় চিকিৎসা কমিটি তাঁদের চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা নিবে। আমি দেখেছি প্রবাসে অনেক ভাই আছে সাহায্য দেওয়ার জন্য বসে আছে, শুধু বুঝতে পারছেনা কোথায় কিভাবে দিবে??? অনলাইনেও কালেকশন কমিটি করে দিন, দেশের বাইরের ভাইদের মাঝে তাঁরা এই খাতে টাকা দিতে উৎসাহিত করবে। নাহ, কিছুই নাই। আছে শুধু বৈঠক আর রিপোর্ট পেশ, যেদিন কামারুজ্জামান সাহেবের ফাঁসি হয়েছে সেদিনও শিবিরের রিপোর্ট পেশ বৈঠক চলেছে বলে আমার কাছে খবর আছে।
এভাবে প্রতি ইউনিটে চিকিৎসা, আইনী সহয়তা, বাড়িঘর হারানোদের পুনর্বাসন, ক্যারিয়ার পুনর্গঠন, আলেম ওলামাদের নিয়ে শরিয়া ও ফতোয়া সেল, রিসার্চ সেলের সাব কমিটি করে দিতে হবে। সারা বাংলাদেশের রিপোর্ট নিয়ে কেন্দ্রীয় যথাযথ কর্তৃপক্ষ তাঁদের সামনের পদক্ষেপ নিবে। এভাবেই ইসলামী আন্দোলন তাঁর কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
সাঈদী সাহেবের মামলার রায়ের আগে শিবিরের কেন্দ্রীয় বড় নেতা এক শিক্ষা শিবিরে বললেন এক বছরেও এই মামলার রায় দিবেনা। তাঁরপরের দিন রায় ঘোষিত হলো…!! তাঁর এমন কথায় তিনি কতটুকু লজ্জা পেয়েছেন আমি জানিনা, তবে তাঁর কথা যারা শুনেছেন তাঁরা সেই দিনের কথা মনে করলে আজো লজ্জা পান। তারমানে আমরা যা করছি, যা বলছি, যা ভাবছি সব নিজেদের ধারনাগত বিশ্বাস থেকে বলছি, করছি, কর্মীদের দিয়ে বাস্তবায়ন করাচ্ছি। কোথায় আমাদের বিশ্বমানের লবিং, কোথায় আমাদের বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়?? কোথায় সরকারের প্রশাসনের ভিতরে নিজেদের লোক?
কিছুই নেই? যদি তাই হয় তাহলে ধরে নিতে হবে আমাদের এদেশে কিছু করার যোগ্যতা এখনও হয়নি। সব বন্ধ করে দিয়ে সামনের ২৫ বছরের প্ল্যানিং করে ফেলুন। ঝেড়ে ফেলে দিন পিছনের সব, জনশক্তিকে পড়ালেখার ব্যবস্থা করুন, চিকিৎসা দিন, ভিটা মাটিতে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন। সামাজিক কাজে ঝাঁপিয়ে পুড়ুন, আপনার এলাকায় জামায়াত নেতাকে কেউ চিনেনা এইটা কি জানেন?? এলাকার কোন বিচারে আপনাকে ডাকেনা, ডাকে আওয়ামীলীগ বিএনপির চোঁর নেতাগুলকে। আপনি সৎ কিন্তু আপনাকে কেউ পুছেনা…!! কারন দিনে দিনে আপনি অসামাজিক প্রানীতে পরিনত হয়েছেন। এক কাপ চা খেতে নিজে কোনদিন মোড়ের চায়ের দোকানে পর্যন্ত যাননা, দোকানের চা খাওয়ার দরকার হলে জামায়াত অফিসে বসে পিয়নকে দিয়ে চা কিনিয়ে এনে খান। কিভাবে রিক্সা চালক শ্রেনী আপনাকে চিনবে? সামাজিকভবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করুন। সমাজে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলেই রাষ্ট্রীয়ভাবে সেটি প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন।
আল্লাহ্ আমাদের ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী মুজাহিদদের সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার তৌফিক দান করুন।
বিষয়: বিবিধ
১৯১২ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে আমাদের এলাকার পরিস্থিতি ভিন্ন, কোন ভাই আহত হলে নিজেরা না খেয়েও চিকিৎসা করান, মা-বোনেরা তাদের ঘরের চাউল পযন্ত সংগঠনের ভাইদের জন্য বিলিয়ে দেন।
নেতাদের মধ্যে হিংসা , স্বজনপ্রিতি , ইজমপ্রিতি মহামরাীর মত , তারা মনে করে তারা যেটা ভাবে এটা সরাসরি আল্লাহর কাছ থৈকে আসে এর বাহিরে আর কিছু ভাবা পাপ
কিছু গুরুত্তুপূর্ন বিষয়ে আপনার সাথে একমত। কেন্দ্রীয় চিকিৎসা সেল ও আইনী সহায়তা সেল সবচেয়ে জরুরি। আপনি ঠিক বলেছেন, 'প্রবাসে অনেক ভাই আছে সাহায্য দেওয়ার জন্য, শুধু বুঝতে পারছেনা কোথায় কিভাবে দিবে??? অনলাইনেও কালেকশন কমিটি করে দিন, দেশের বাইরের ভাইদের মাঝে তাঁরা এই খাতে টাকা দিতে উৎসাহিত করবে।'
ইনশাআল্লাহ আমরা সাহায্য দিব আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।
জাযাকাল্লাহ খায়ের
আসলে ভাই, জামাতে ইসলামীর জন্য যে কোন কর্মপন্থাই অবলম্বন করা হোক না কেন? তাতে হয়তো জামাতে ইসলাম অনেক উন্নত হবে,অনেক জনবল হবে, আরো অন্য কিছু উপকার আসবে, কিন্তু ইসলাম আসবে না।
আমার পোষ্টে আমন্ত্রন রইল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন