আন্দোলনের পার্টনার যখন ভূমিদস্যু
লিখেছেন লিখেছেন রহমান আযাদ ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১১:১৫:৩৭ সকাল
ভুমিদস্যু শাহ আলমের পত্রিকার অবস্থা দেখুন।
বিএনপি ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি না পেলে সরকারকে এক হাত নেবে। রাজনীতি মারমুখী। বাংলাদেশের রাজনীতিতে অশনি সংকেত। গত কয়েক দিন ধরেই এমন ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছে বসুন্ধরা গ্রুপের পত্রিকা কালের কণ্ঠ। রাজনীতি উত্তপ্ত করার আর সরকারকে বিপদে ফেলার মিশন নিয়ে নেমেছে পত্রিকাটি। সরকারের সুবিধাবাদী সিনিয়র কয়েক জন নেতাকে খুশি করে ড্যাপকে অকার্যকর, পদ্মা সেতুতে সিমেন্ট সাপ্লাইয়ের কাজ বাগিয়ে নিয়েছে বসুন্ধরা। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে যাতে ওই গ্রুপটির স্বার্থে কোনো আঘাত না আসে সেজন্য এখনই উঠে পড়েছে লেগেছে বসুন্ধরা।
পত্রিকায় আওয়ামী লীগের সংবাদ সংগ্রহকারী রিপোর্টারকে বিনা নোটিশে ছাটাই করা হয়েছে। বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে ওই দলটির নেতাদের পরামর্শেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে একজন রিপোর্টারকে। ওই রিপোর্টার গত জানুয়ারি মাসে নির্বাচনের পর থেকেই তার রিপোর্টে অনবড়ত লিখে যাচ্ছেন, দু’মাসের মধ্যেই সরকার পতন হবে।
এখন সরকার এক বছর পর করতে চলেছে। উল্টো ওই রিপোর্টার তার আগের প্রতিষ্ঠান (যুগান্তর) ছাড়া হয়েছেন। এখন তিনি কালের কণ্ঠের মাধ্যমে বিএনপির হয়ে জনসংযোগের কাজ করছেন।
কালের কণ্ঠের টপ ম্যানেজমেন্টের প্রায় সবাই বিএনপি ঘরানার। সম্পাদক ইমদাদুল হকের কোনো চরিত্র নেই। তিনি কখনোই সাংবাদিক ছিলেন না। তিনি বসুন্ধরার গোলাম। বসুন্ধরায় তার অ্যাপার্টমেন্ট হলো নষ্টামির আখড়া। যেখানে তার তোষামোদকারীরা নিয়মিত নারী জোগান দেন।
উপদেষ্টা সম্পাদক অমিত হাবিব বিগত বিএনপি সরকারের সময় ওই সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট যায় যায় দিনের শীর্ষ পদে ছিলেন। তিনি শফিক রহমানের শিষ্য। সারাক্ষণ মদে বুদ হয়ে থাকেন। তিনিও নারী আসক্ত।
নির্বাহী সম্পাদক মুস্তফা মামুন বিএনপি সরকারের সময় দলটির চাটুকার ছিলেন। পত্রিকাটির সাংবাদিকরা সরকারি, বেসরকারি অফিসে বসুন্ধরার হয়ে হুমকি আর চাদাবাজিতে ব্যস্ত। বাড়তি মূল্যে বিজ্ঞাপন না দিলেও রিপোর্ট করে দেওয়ার হুমকি দেয় বসুন্ধরা সাংবাদিক ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধিরা। বসুন্ধরা গ্রুপের সাংবাদিকরা অবৈধ গাড়ি ব্যবহার করেন 'প্রেস' লাগিয়ে। পুরা বসুন্ধরা গ্রুপের গাড়িতে এখন প্রেসের স্টিকার।
আদালতের আদশের পরও পা্ওনা না দেয়না কালের কণ্ঠ, ডেইলি সান। সাংবাদিকদের প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করতে হয়।
বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকের পরিবারের সদস্যদের মামলার রায় ঘুরাতে ওই গ্রুপের পত্রিকার সাংবাদিকরা তদবির ও টাকার বস্তা পৌঁছে দেন। সাব্বির হত্যা মামলার রায় কী হয়েছে? বসুন্ধরা চেয়ারম্যানের পলাতক ছেলে খালাস।
বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা আবু তৈয়ব, যিনি মিডিয়ার ওপর খবরদারি করেন তিনিও বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করছেন। নিজের মেয়েকে তিনি বসুন্ধরার মালিকের ছেলের পেছনে লাগিয়ে ডেইলি সানে চাকরি ও গাড়িও আদায় করেছিলেন।
সরকারের ওপর বসুন্ধরা ক্ষুব্ধ টিভির লাইসেন্স না পাওয়ায়। এই বসুন্ধরা গ্রুপই হেফাজত নেতা শফিকে বগুড়ার সমাবেশে যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টার দিয়েছিল। ঢাকায় হেফাজতের সমাবেশের আগে কর্মীদের বড় একটি অংশ বসুন্ধরার ভেতর আশ্রয়ে ছিল। বসুন্ধরার ভেতর একাধিক উগ্রবাদী মাদ্রাসা আছে। বসুন্ধরা ওই মাদ্রাসার ছাত্রদের দিয়ে অতীতে যমুনা গ্রুপের বিরূদ্ধে মানববন্ধন করিয়েছে। ওই মানববন্ধনের আয়োজক কালের কণ্ঠের সাংবাদিক উগ্রবাদী লিফলেটসহ পুলিশের কাছে ধরাও পড়েছিল। পরে কালের কণ্ঠ তাকে মস্তিস্ক বিকৃতির অভিযোগে ছাটাই করে।
সরকারের নেতাদের প্রয়োজনে ব্যবহার করে আবার ছুড়ে ফেলে দেওয়া বসুন্ধরার জন্য নতুন কিছু নয়। সাবেক গণপূর্ত মন্ত্রী মান্নান খানের সঙ্গে কী খাতিরই না ছিল বসুন্ধরার! অথচ তিনি ক্ষমতা হারানোর পরই বসুন্ধরার পত্রিকাগুলো মান্নান খানের পেছনে খরচ করা টাকার যন্ত্রনায় একের পর এক রিপোর্ট করে ভিলেন বানানোর মিশনে নামে। একই অবস্থা আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, এইচ টি ইমামের। ক্ষমতায় থাককালে স্বার্থের জন্য তাদের তোষামদ, আর তারা বিপদে পড়লেই চেপে ধরা বসুন্ধরার নীতি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও একাধিক বার এমন ক্ষতিকর গ্রুপ সম্পর্কে বলেছেন যে ওদের বিরূদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে গেলেই ওরা ‘চোর’ বানিয়ে ছাড়ে।
বসুন্ধরার গাড়িগুলো চেক করা জরুরি। সেগুলোতে অস্ত্র, ইয়াবা থেকে শুরু করে অবৈধ আরো অনেক কিছু মিলতে পারে।
বিষয়: বিবিধ
১১৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন