আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ধনীর দুলাল-দুলালী কেন জঙ্গি হচ্ছে?

লিখেছেন লিখেছেন এম এ আলিম খান ২৩ জুলাই, ২০১৬, ০৯:৪২:০৫ রাত

গুলশানের ঘটনার আগ পর্যন্ত দাড়ি টুপি ওলায়া গরিব মাদ্রসার ছাত্রদের জঙ্গি আখ্যা দিয়ে অনেকের উপর নির্মম অত্যাচার করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতা মাদ্রাসাকে জঙ্গি তৈরির কারখানা আখ্যা দিয়ে মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। গুলশানের ঘটনায় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল বা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় না হয়ে যদি কোন একটি মাদ্রাসার ছাত্ররা জড়িত থাকতো তাহলে ঐ মাদ্রাসাতো নিশ্চিত বন্ধ হতো, পাশাপাশি দেশের মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধের জন্য আন্দোলন করা লোকের অভাব হতো না।

আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ধনীর দুলাল-দুলালী কেন জঙ্গি হচ্ছে?

এই প্রশ্নের উত্তর এক কথায় দেয়া কারও পক্ষে সম্ভব নয়। সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, ভৌগলিক, ধর্মীয়সহ অনেক কারণে ধনীর আদরের দুলাল-দুলালীরা জঙ্গি হচ্ছে। আমার জ্ঞানের গভীরতা খুবই কম। তবুও আমার স্বল্প জ্ঞানে আমি যা বুঝি সেটাই লিখছি। আপনারা আমার সাথে একমত নাও হতে পারেন; আর না হওয়াটাই স্বাভাবিক।

খুব সংক্ষেপে কারণগুলো তুলে ধরছি।

সামাজিক কারণঃ সমাজ বা পরিবারে মানুষ একে অন্যের সাথে একটি পারস্পরিক বন্ধনে আবদ্ধ থাকে। যেখানে একে অন্যের প্রতি দায়িত্ব, কর্তব্য ও দায়বদ্ধতা রয়েছে। পরিবারের সদস্যরা একটি ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ থাকে। ধনীর আদরের দুলাল-দুলালীদের এই বন্ধন খুব সুদৃঢ নয়। আর দায়িত্ব, কর্তব্য ও দায়বদ্ধতা নেই বললেই চলে। এদের গন্ডিটা খুব ছোট। এরা সাধারণতো একই শ্রেণীর লোকের সাথে চলাফেরা করে এবং বাস্তব জগৎ সম্পর্কে এদের জ্ঞান খুব কম। এরা বাবা-মায়ের ভালবাসা খুব বেশি পায় না। অর্থের প্রয়োজন ছাড়া পারত পক্ষে বাবা-মায়ের কাছে যায় না। এর ব্যতিক্রম রয়েছে তবে সংখ্যা খুবই কম। এদেরকে খুব সহজে ব্রেনওয়াশ করা যায়।

অর্থনৈতিক কারণঃ যেহেতু এদের অর্থের কোন অভাব নেই; তাই এরা জীবন নিয়ে ভাবে কম। এই সময়টা বন্ধু বান্ধব বা ইন্টারনেটের পিছনে ব্যয় করে। আর যেহেতু ইংরেজিতে একটু ভাল তাই অন্য দেশের মানুষের সাথে বনধুত্ব করে। বিদেশে খুব সহজেই আনন্দ ভ্রমনে যেতে পারে। এরা দামী ফোন ব্যবহার করে এবং প্রযুক্তিতে দক্ষ হতে চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে জঙ্গি নেটওয়ার্কে জড়িয়ে যায়।

রাজনৈতিক কারণঃ দেশে প্রতিহিংসা ও দোষারোপের রাজনীতি চলছে। যখনই কোন সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটে সাথে সাথে কোন রকম তদন্ত ছাড়াই একটি রাজনৈতিক দলকে দোষী করা হয়। আর ঐ ঘটনার সঠিক তদন্তও হয় না; হলেও দোষীরা শাস্তি পায় না। এই সুযোগটা জঙ্গিরা কজে লাগায়। অনেকের পরিবার খুব পাওয়ারফুল; এরা মনে করে তারা যা কিছু করুক না কেন তাদের কিছুই হবে না।

ভৌগলিক কারণঃ বাংলাদেশের ৩ দিকে ভারত আর এক দিকে বঙ্গোপসাগর। সুতরাং আকাশপথ ছাড়া দেশে ঠুকা বা বের হওয়ার দুটি পথ আছে; সমুদ্রপথ ও স্থলপথ। কোন পরিস্থিতিতে তারা কি করবে এবং কি করলে দেশকে অস্থিতিশীল করা যাবে এটা খুব সহজে করতে পারে।

ধর্মীয় কারণঃ এসব আদরের দুলালদের ধর্মীয় জ্ঞান খুব কম। ঠিকমত নামাজ পড়ার সূরা-কালাম জানে কি সন্দেহ আছে। সবাই ইহকাল ও পরকালে শান্তি চাই।কতিপয় বিপথগামী শর্টকার্টে জান্নাতে যাওয়ার লোভ দেখিয়ে এদের দিয়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে। ইসলাম ধর্মকে সন্ত্রাসী ধর্ম হিসেবে মানুষের মনে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিধর্মীরা কোটি কোটি টাকা বিনিযোগ করছে। আর এক্ষেত্রে মুসলমানদের দিয়েই তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।

বিষয়: বিবিধ

১৪৯০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

375138
২৩ জুলাই ২০১৬ রাত ১০:৪২
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : হুম আপনার কথাই ঠিক,,
375140
২৪ জুলাই ২০১৬ সকাল ০৫:৩০
সাদাচোখে লিখেছেন : আস্‌সালামুআলাইকুম!
আপনার লিখা পড়লাম। ভাবছি কিভাবে আপনি এই মর্মে নিশ্চিত হয়েছেন যে,

'আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ধনীর দুলাল-দুলালী জঙ্গি হচ্ছে'।

এটা কি এই কারনে যে,
১। আপনি এমন এক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আস্থায় নিয়েছেন - যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা জজ মিয়া কিংবা নারায়নগন্জ এর ৮ মার্ডার কিংবা সম্প্রতি এক পুলিশ অফিসারের স্ত্রী হত্যার বিপরীতে কয়েক হাজার আসামীকে বন্দী করার কৃতিত্ব দেখিয়েছে?

২। আপনি এমন এক সরকারকে আস্থায় নিয়েছেন - যে সরকার বাংলাদেশে ফ্রি এন্ড ফেয়ার নির্বাচন নিশ্চিত করেছে! গনতন্ত্র স্টাবলিশ করেছে! যে কোন ইনসিডেন্ট এর পেছনে কারা তারা ২৪ ঘন্টার আগেই খোঁজ পেয়ে যায়?

৩। আপনি এমন এক মিডিয়াকে আস্থায় নিয়েছেন যারা দিন কে রাত আর রাত কে অহরহ দিন বানিয়ে চলেছেন যেমন হেফাজত এর শাপলা চত্ত্বর কিংবা জয়নুল আবেদিন ফারুকের মোবাইলকে ঢিল বানানো সহ অসংখ্য অসংখ্য উদাহরন সৃষ্টি কারী

৪। নাকি আপনি তথাকথিত সোশ্যাল মিডিয়া ফেইসবুক, টুইটার, ইউটিউব ইত্যাদিকে আস্থায় নিয়েছেন - যার না কোন নিয়ন্ত্রন, না কোন ভ্যারিফিকেশান এর মেকানিজম আপনার কিংবা আর কোন সাধারন মানুষের আছে এবং যেখানে যে কোন কিছু যে কোন ভাবেই উপস্থাপন সম্ভব।

৫। না কি আপনি আপনার দুনিয়াবী চোখে যা দেখেছেন, কানে যা শুনেছেন, লিমিটেড ব্রেইন এ যা প্রসেস করতে পেরেছেন - তার আলোকে উপরোক্ত উপসংহারে এসেছেন?

ব্যাক্তিগতভাবে আপনি কি এভাবে চিন্তা করে দেখতে পারেন না - উপরোক্ত এ সোর্স কিংবা উৎস সমূহের প্রতিটি র সীমাবদ্ধতা প্রচুর এবং তার সত্যতা অসম্ভব রকমের প্রশ্নবিদ্ধ। এবং আপনার আশে পাশের মানুষ সহ বেশীর ভাগ মানুষই প্রতারিত হচ্ছেন সামহাউ এ সোর্স সমূহের উপর নির্ভর করার জন্য।

এবং অন্যায় ভাবে, ভুল ভাবে এবং হয়তো অজ্ঞতার বশবর্তী হয়ে কিংবা প্রতারিত হয়ে -

ভুল মানুষকে ভুল ভাবে অপরাধী সাভ্যস্থ করছেন, না জেনে অন্যের লেভেল অব ধর্মীয় শিক্ষাকে, ধর্মীয় আন্ডারস্ট্যান্ডিংকে কটাক্ষ করছেন।

একজন মুসলিমকে তার ধর্ম বরং বলেছে এটাই যে,

সে তার সামনে উদ্ভুত বিষয়াবলীকে কোরান (যা সত্য ও মিথ্যার প্রভেদকারী) ও হাদীস দিয়ে বিচার বিশ্লেষন করবে প্রথমে। আপনি কি তা করেছেন? কেন তা করছেন না? কেন তা করতে মানুষকে উদ্ভুত করছেন না? কে জানে আপনি তা করলে এবং অন্যকে করতে উদ্ভুত করলে

উপসংহার টি ভিন্ন হত। আপনি নিজে প্রতারিত হতেন না আবার অন্যদেরকে ও প্রতারিত হওয়া হতে রক্ষা করতে পারতেন।
375143
২৪ জুলাই ২০১৬ সকাল ০৫:৪৫
শেখের পোলা লিখেছেন : শেষের কারণটার উপর আমি বেশী জোর দিতে চাই। ধনবাদ।
375147
২৪ জুলাই ২০১৬ সকাল ১১:৪৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ। আসলে তথাকথিত এই ধনি পরিবারের সন্তান রা নিজেদের উদ্ভট লাইফষ্টাইলে মানবতাকে হারিয়ে ফেলে।
375160
২৪ জুলাই ২০১৬ দুপুর ০২:২৫
হতভাগা লিখেছেন : এসব ধনীর দুলালেরা জীবনে অনেক কিছুই পেয়েছে ।

তবে যেটার খামতি ছিল সেটা হল - এরা হল থ্রিল সিকারস্‌ । এমন কিছু করতে চাচ্ছিল যাতে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেওয়া যাবে ।

তদূপরি বেহেশতের হুরপরি পাবার জন্যও এরা শর্ট কাট রাস্তা খুঁজতে ছিল ।
375215
২৫ জুলাই ২০১৬ রাত ০৩:৪৩
কুয়েত থেকে লিখেছেন : মাদ্রসার ছাত্রদের জঙ্গি আখ্যা দিয়ে অনেকের উপর নির্মম অত্যাচার করা হয়েছে অনেক ধন্যবাদ ভালো লাগলো

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File