নিজের অজান্তে পরোক্ষভাবে চাঁদাবাজীর স্বীকার হই আমরা
লিখেছেন লিখেছেন এম এ আলিম খান ১৩ মার্চ, ২০১৫, ১০:৪৭:১৭ সকাল
১. যাদের ব্যক্তিগত গাড়ি নাই, তাদের বিভিন্ন সময় ট্যাক্সি বা সিএনজিতে উঠতে হয়। এজন্য সরকারিভাবে ভাড়া ঠিক করে দেওয়া আছে। ঢাকা শহরের কোন ট্যাক্সি বা সিএনজি চালক মিটারে যায় না; ভাগ্যক্রমে গেলেও মিটারের ভাড়ার চেয়ে ২০/৫০ টাকা বেশি দিতে হবে যা আগেই ঠিক করে নেয়। ট্যাক্সি বা সিএনজি চালকরা ৩/৪ গুণ ভাড়া চান, কেন চান? জানতে চেয়েছিলাম সিএনজি চালক রাসেলের কাছে, বয়স কম, খুব ভাল ছেলে, দেশকে ভালবাসে এবং দূর্নীতিকে ঘৃণা করে।
অকপটে রাসেল বলল স্যার, "বিভিন্ন জায়গায় আমাদের চাঁদা দিতে হয়; যেমন-গুলিস্তানে ডুকলে ২০ টাকা, যাত্রাবাড়ী, জুরাইন, এয়ারপোট, আব্দুল্লাহপুরে ১০ টাকা করে, গাবতলীতে ৫ টাকা ।" এসব টাকা কারা নেয়? রাসেল বলল,' এয়ারপোটে নেয় আনসার, গাবতলীতে নেয় টার্মিনালের লোক আর অন্যান্য জায়গায় কারা নেয় তা আপনারা তো বোঝেন।' গুলিস্তানেতো পুলিশ ক্যাম্প আছে, পুলিশকে বলেননা কেন? আর টাকা না দিলেই বা ওরা কি করবে? এ প্রশ্নের জবাবে রাসেল বলল,'যদি টাকা না দিইতো মারধর করে, গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে দেয়। পুলিশকে বলে খুব লাভ হয়না কারণ পুলিশের সামনেইতো টাকা নিচ্ছে। গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে দিলে পুলিশকে অভযোগ করলে দু'এক সময় কিছু ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেয়।
২. দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র ট্রাকে করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নেওয়া হয়। এসব প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র আমরা বাজার থেকে ক্রয় করি। এখানেও প্রতি ট্রাককে পদে পদে চাঁদা দিতে হয়। পত্রিকায় দেখলাম রাজশাহী বিভাগে বাস-ট্রাক মালিক সমিত পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে অনিদিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে। একেতো দেশে হরতাল-অবরোধ লেগেই আছে। তারপর যদি আরার অনিদিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয় !!!
ট্যাক্সি, সিএনজি বা বাস-ট্রাক চালক কিন্তু তার নিজের পকেট থেকে এই টাকা দেয় না; এটি সুদে-আসলে আমাদের কাছ থেকে আদায় করে নেয়। ফলে ট্যাক্সি বা সিএনজিতে ভাড়া ২/৩ গুণ দিতে হয়, অন্যদিকে বাজার থেকে দ্বিগুণ দামে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র কিনতে হয়। স্বল্প আয়ের, সৎ মানুষের পক্ষে জীবনযাত্রার ব্যয়ভার বহন কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
আমরা একটি উন্নত, দূর্নীতিমুক্ত সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। তাই যে যার অবস্থান থেকে সোনার বাংলা গড়তে আমরা সবাই কাজ করি।
বিষয়: বিবিধ
১১৫৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
চাঁদার নামে তারা আমাদের কাছ থেকে যা নেয় তাতে চাঁদা দিয়েও তাদের অনেক বেশী উদ্বৃত থাকে।
এসব নাম ভাঙ্গিয়ে এরা দেদারসে হাতিয়ে নিচ্ছে কারণ এদের নামে পুলিশে অভিযোগ করলে কোন লাভ হয় না । দুই একটা ফাঁপড়বাজি করলেও পরে উল্টো আরও বেশী রেটে রাজি হতে হয়।
মিটারে যেখানে যেতে ৮০-৯০ টাকা খরচ হবার কথা সেখানে তারা কন্ট্রাক্ট হিসেবে ১৫০-২০০ এর কমে রাজী হয় না ।
আর নতুন নামানো হলুদ রংয়ের ক্যাবগুলোতে উঠলে তো গলা কেটে রেখে দেয় । প্রথম দুই কিলোই ৮৫ টাকা । ১০-১২ কিলোর পথ যেতে ৭০০-৮০০ টাকা বিল ওঠে ।
ঢাকা শহরের মত যানজটের শহরে ভাড়ার সাথে যোগ হওয়া ওয়েটিং বিল মাথা আরও নষ্ট করে দেয়।
জ্যামে পড়লে বাস - সিএনজি দুটোই সমান সময় নেয় । পার্থক্য শুধু ভাড়াতেই ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন