অপমূত্যুর ১৬ বছরে জামলাবাজ - নোয়াখালী বাজার সেতু
লিখেছেন লিখেছেন আমিনুল হক ০৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ০৫:৫৯:৪৭ বিকাল
সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিন সুনামগঞ্জ উপজেলার জয়কলয়স ইউনিয়নের অর্ন্তভুক্ত জামলাবাজ, হাসনাবাজ, মির্জাপুর গ্রাম। জামলাবাজ গ্রামে প্রায় ১০ হাজার লোকের বসবাস। এছাড়া হাসনাবাজ এবং মির্জাপুর গ্রামে প্রায় ৮০০০ হাজার লোকের বসবাস।
এলাকার মধ্যে একটি মাত্র বাজার। তার নাম নোয়াখালী বাজার। গাড়ি চলাচলের সংযোগ সড়কটি নোয়াখালী বাজারের উপর দিয়ে অবস্থিত। এলাকার একমাত্র হাইস্কুল নোয়াখালী বাজারে অবস্থিত। এছাড়া কলেজ, মাদ্রাসা, আদালত বা কোথায়ও যেতে হলে নোয়াখালী বাজারে গিয়ে যেতে হয়। কিন্তু মধ্যে রয়েছে বিশাল সুরমা নদী।
সুরমা নদীর পশ্চিম প্রান্তে নোয়াখালী বাজার আর পূর্ব প্রান্তে জামলাবাজ, হাসনাবাজ এবং মির্জাপুর গ্রাম। প্রায় ১৮০০০ হাজার লোকের চলাচলের একমাত্র উপায় হচ্ছে ফেরিনৌকা। জামলাবাজ গ্রামের ফেরিঘাট থেকে ফেরিনৌকা করে নোয়াখালী বাজারে যেতে হয়।
১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগের ৫ বছর শাসনামলের শেষদিকে অর্থাৎ ২০০০ সালে বিশাল এই জনগোষ্টীর সুবিধার কথা চিন্তা করে তৎকালীন এমপি, ভাটিবাংলার সিংহপুরুষ, প্রয়াত জাতীয় নেতা, সফল পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদ সুরমা নদীতে জামলাবাদ-নোয়াখালী সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ৪ দলীয় জোট ক্ষমতাসীন হলেও এমপি নির্বাচিত হন আব্দুস সামাদ আজাদ। কিন্তু আওয়ামীলীগ সংসদ থেকে দুরে সরে থাকায় সেতুটির স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটা শুরু হয়। ২০০৪ সালের শেষের দিকে আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদ ইন্তেকাল করেন। পরে উপনির্বাচনে ১৪ মাসের জন্য এমপি নির্বাচিত হন জমিয়তের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ৪দলীয় জোট প্রার্থী এডভোকেট আলহাজ্ব মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী। শাহীনুর পাশা চৌধুরী এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর সেতুটি নির্মাণে নতুন মাত্রা পায়। তিনি সেতুটির প্রস্থ বৃদ্ধি করে এর নির্মানের অনুদান বাড়িয়ে সুনামগঞ্জ এলজিইডির নিয়মিত নির্মান কাজের তালিকাভুক্ত করেন।
এরপর ২০০৬ সালের শেষের দিকে বিএনপির মেয়াদ শেষ হলে পরবর্তি সরকার নির্বচিত করার জন্য তৎথাবদক সরকার গঠন করা হয়। তখনকার ক্ষমতায় ছিলেন ১/১১ নামে পরিচিত এর মইন-ফখর উদ্দিন সরকার। তৎথাবদক সরকার ক্ষমতায় বসলে সেতুটির চুড়ান্ত অপমৃত্যু ঘটে।
তারপর ২০০৮ সালের নির্বাচনে সাবেক সচিব এম.এ মান্নান আওয়ামী মহাজোট থেকে এমপি নির্বাচিত হন। নির্বাচনের আগে তিনি জামলাবাজ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্বাচনী প্রচারনায় বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে আমার প্রথম কাজ হচ্ছে জামলাবাজ-নোয়াখালী বাজার সেতু। আমি ওয়াদা করছি আপনাদের স্বপ্নের সেতু খুব তাড়াতাড়ি তৈরি হবে, আপনারা নৌকায় ভোট দিন। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তিনিও এই সেতুটির নির্মানের উদ্যোগ নেন। তবে তার কচ্ছপ গতির নির্মান পরিকল্পনার কারনে সেতুটি আজও আলোর মুখ দেখতে পারিনি।
২০১৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রাক্কালে তৎকালিন এমপি এম.এ মান্নান আবারও এলাকাবাসীকে স্বপ্ন দেখান। তিনি নির্বাচিত হলে বুয়েট-এর প্রকৌশলীদের নিয়ে সেতুটি নির্মানের জন্য মাটি পরীক্ষা সহ বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের প্রতিশ্রুতি দেন। ঐ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর এম এ মান্নান বর্তমান সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। কিন্তু এরপর এই সেতু নির্মান নিয়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন গুরুত্বপুর্ন মন্ত্র্রীর আগ্রহ অনেকাংশে কমে যাওয়ায় এলাকাবাসী হতাশ।
এলাকাবাসীর প্রশ্ন বিগত ১৬ বছরে মন্ত্রী-এমপিরা একটি পাকা সেতু নির্মান করতে পারলেন না, তাহলে দেশের উন্নয়ন কিভাবে করবেন আর ডিজিটাল বাংলাদেশ কিভাবে গড়বেন।
উল্লেখ্য সরকারী অুনদানে পাকা সেতুটি নির্মান না হওয়ায় প্রতিবছর নদীর পানি কিছুটা কমে গেলে এলাকার মাঝি সম্প্রদায় মিলে বাশেঁর সাকোঁ নির্মান করে থাকেন। ফলে এলাকার হাজার হাজার মানুষের দুঃখ-দুর্দশা কিছুটা লাগব হয়।
বিষয়: বিবিধ
১৬২৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ঢাকা বিমান বন্দরে বেশ কিছু হোটেল ও শপিংমল বানানোর কাজ করছে এরা । পুরাই মাথানষ্ট কনস্ট্রাকশন চালাচ্ছে ।
বলে দেখতে পারেন ফাটাকেষ্টকে
মন্তব্য করতে লগইন করুন