পুলিশ জনগনের বন্ধু না শত্রু ?

লিখেছেন লিখেছেন আমিনুল হক ১১ মে, ২০১৫, ০১:৪৫:২৫ রাত



‘পুলিশ কখনো অন্যায় করে না, সে যতক্ষণ আমার পুলিশ’ কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতার এই চরণ কতবার যে সংবাদ শিরোনাম হয়েছে হিসাব নেই। এটা বুঝতে পারি কবিতার এই চরণ মাঝেমধ্যে রাজপথের পুলিশের বেহিসাবি আচরণ দেখলেই মনে পড়ে। কিছু কিছু কবিতা পোস্টার হয়ে উঠে আসে। কখনো স্লোগান কখনো বা ছবির ক্যানভাস। পহেলা বৈশাখ পুলিশের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেও মা-বোনেরা টিএসসির কাছে উৎসবমুখর মানুষের ঢলে লাঞ্ছিত হয়েছে। পুলিশ নারী সম্ভ্রম রক্ষা করতে পারেনি।

এ নিয়ে তাদের কারো কারো লাজ-লজ্জা বলে কিছু নেই। এ নিয়ে কারো কারো গ্লানি নেই। গোটা দেশে নিন্দার ঝড় উঠেছে। গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওইসব বিকৃতি নষ্ট পুরুষের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ঘৃণার সঙ্গে। সিসিটিভি ক্যামেরায় সেই ফুটেজ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু প্রায় এক মাস পার হতে চলল পুলিশ অপরাধীদের গ্রেফতার করা দূরে থাক শনাক্তই করতে পারেনি।

অবাক হতে হয়েছে মা দিবসের এই দিনে পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের লাঞ্ছনার ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর পুলিশের কার্যালয় ঘেরার করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ ও মারধর করে পুলিশ। একজন নারী যখন ভয়ে রেলিংয়ের পাশে আশ্রয় নিয়েছিল তিনজন পুলিশ তাকে তেড়ে গেছে, এমনকি ওই নারীর ওপর পুলিশ বুট চালিয়েছে, লাথি মেরেছে। আরেকজন চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়েছে। মনে হয়েছে হায় সেলুকাস, কি বিচিত্র এই দেশ। সাগর-রুনির মতো নিরীহ সংবাদকর্মী ঘরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। পুলিশ ঘাতক ধরা দূরে থাক রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। তাদের সন্তান মেঘের কান্না শোনে বাংলাদেশ। পহেলা বৈশাখের লাঞ্ছিত নারীর ওপর হামলে পড়া অপরাধীদের গ্রেফতার করতে পারে না পুলিশ।

প্রতিবাদী মেয়েটির চুলের মুঠি ধরে টেনে নিতে পারে। এই ঘটনায় যেসব পুলিশ সদস্য বাড়াবাড়ি করেছে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। সেই সঙ্গে পুলিশকে মানুষের বন্ধু হিসেবে জনগনের কাছে ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে এগিয়ে আসা উচিত। মনে রাখা উচিত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায় কল্যাণ রাষ্ট্র। পুলিশি রাষ্ট্র নয়। পুলিশ মানুষের জানমাল, সম্ভ্রমের হেফাজত করবে, নিরাপত্তা দেবে, হরণ নয়। হরণকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করবে।

বিবেকের কাছে প্রশ্ন করি, আজ কোথায়, কোন দেশে বাস করছি আমরা। যে দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন নারী, বিরোধীদলীয় নেত্রী একজন নারী, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার একজন নারী, এমনকি পুলিশের প্রধান অর্থাৎ স্বরাষ্টমন্ত্রী একজন নারী, যিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী, অথচ আজ সেই দেশের নারীকে লাথি দিচ্ছে বর্তমান সরকারের পুলিশবাহিনী। তোমরা হয়ত ভুলে গেছ, এই নারীই তোমার মা, বোন, বউ এবং মেয়ে। যারা আজ এই কাজ করেছ তাদের কে বলছি, সাবাশ পুলিশ বাহিনী সাবাস, তোমরা প্রমান করলে তোমরা অমানুষ, তোমরা আজও পাকিস্তানের মত মা-বোনদের নির্যাতন করতে যান।

বিষয়: বিবিধ

১৬৫৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

319340
১১ মে ২০১৫ রাত ০২:২২
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : ভালো লাগলো । অনেক ধন্যবাদ
319374
১১ মে ২০১৫ সকাল ১১:২৫
একটি সকাল লিখেছেন : ছিলে ভালো শাহাবাগে কেনো এলে অধিকার আদায়ে। সরকারে সত্রছায়ায় থেকে শাহাবাগে নর্তন-কুরদন করা যায়, ফাঁসি ফাঁসি করে বিরানি, টাকা পয়সা ভোগবিলাস সবই করা যায়, এমন কি মাস্তানি ও করায়ায় কিন্তু সরকারের বিপক্ষে গিয়ে নিজের গায়ে কাপড় রাখার অধিকার ও আদায় করা যায়না। কেন বুঝ না।
319399
১১ মে ২০১৫ দুপুর ০৩:১৪
খান জুলহাস লিখেছেন : পুলিশ আওয়ামী লীগের বন্ধু।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File