আন্দোলন কিসের জন্য ?
লিখেছেন লিখেছেন জনগণের কন্ঠস্বর ০৯ জানুয়ারি, ২০১৫, ০১:১৮:৪১ দুপুর
আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। গণতন্ত্র আমাদের অধিকার। ব্যাক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে গনতন্ত্রের চর্চা ও জনগণের শাসন ব্যবস্থা চালু থাকবে এটাই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য। কিন্তু বাংলাদেশে আমরা কি দেখছি ?। বিশেষ করে ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী গনঅভ্যুথ্তানের পর দেশে গনতন্ত্রের একটি সুবাতাস বইতে শুরু করেছিল এবং এরই অংশ হিসেবে সে সময়ে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী প্রধান ২ দলের মধ্যে বিএনপি ক্ষমতায় আসে।এর পর গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ করার জন্য ও সর্বস্তরে গণতন্ত্রের অনুশীলনের দাবীতে আবারও একটি আন্দোলনের সূত্রপাত হলো এবং নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীটি নিয়ে অনেক আন্দোলন হলো পরিনতিতে জনমতের দাবীকে মেনে নিয়ে সংসদে বিল পাশ করিয়ে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার মাধ্যমে নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী সরকার গঠিত হলো । দেশের জনগণ মনে করলো আমরা একটি পরিশিলিত গনতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাবো। পরবর্তীতে আবার কি দেখলাম ? ৫ বছর আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকার পর আবার সেই তত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন দিয়ে হেরে গিয়ে শুরু হলো এই ব্যবস্থা কিভাবে রহিত করা যায় আর বিকল্প্ শক্তির আবির্ভাব ঘটিয়ে তাদের মাধ্যমে কিভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়।এক পর্যায়ে তাদের কুটচা্লই সঠিক হলো ওয়ান ইলেভেনের সরকার যাবতীয় দায়মুক্তির মুছলেকা দিয়ে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়ে আমেরিকার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমালেন আর খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলা গনতন্ত্রের মাজা ভেঙ্গে দিয়ে গনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সমূলে উৎখাত করার পথ প্রসস্থ করলেন। তারই ধারাবহিকতায় আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসেই আজীবন ক্ষমতায় থাকার পরিকল্পনা হাতে নিয়ে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে তত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করলেনএবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করলেন।শুরু হলো বাকশালী একনায়কতন্ত্র।বৃথা গেল দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রামে ঝরা রক্তের,স্বজন হারাদের চোখের জলের।সেই ব্যবস্থা থেকে বেরুতে প্রাণপন চেষ্টার অংশই এখনকার এই আন্দোলন। মজার ব্যাপার হলো এই ধরনের আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে আন্দোলনকারীদের যাদের সহযোগিতা করার কথা তাদের ভূমিকা কি এখন ? আওয়ামীলীগ এর অঙ্গ সংগঠন ও গৃহপালিত জাতীয়পার্টি ছাড়া এমন কোন দল খুজে পাওয়া যাবে না যারা এই বর্তমান শাসন ব্যবস্থা চায় কিন্তু দু:খের বিষয় তাদের বিভিন্ন জোটে অন্র্তভূক্ত হয়ে নিজেদের পরিচয় বাড়ানোর জন্য ছাড়া অন্য কোন ভুমিকা আছে কি ? বিএনপির সঙ্গে যারা জোটে আছে একমাত্র জামায়াত ছাড়া তারা শুধু কথায় ও ক্যামেরা ট্রায়াল ছাড়া কোন কিছু করেছে বলে দেশবাসী দেখেনি।অন্যদিকে বিভিন্ন মিডিয়া ইলেট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় যারা কাজ করেন তাদের বেশিরভাগই এখন প্রকৃত খবর প্রচার না করে সরকার সমর্থিত খবর প্রচার নিয়েই বেশি ব্যস্ত।বাংলাদেশে এখন অনেক সাংবাদিক আছে যারা সরকারের লেজুরবৃত্তি করে চলেছেন। যাদের অতীতে দুমুঠো ভাত জুটতো না তারা এখন বড় বড় সাংবাদিক। গ্রামের লোকজনদের ভাষায় তারা সাংবাদিক নয় সাংঘাতিক। পুলিশ চাঁদবাজি করে জনগণের কাছে আর তারা নাকি পুলিশের কাছে থেকে চাঁদা নিয়ে আসে। এই যদি হয় দেশের অবস্থা তাহলে এই জাতি কার কাছে কি আশা করবে ? ভবিষ্যত প্রজন্ম কাদের কাছ থেকে কি শিক্ষা নিবে ? । দেশের ভবিষ্যত কি হবে ? গনতন্ত্রের কি হবে ? যেকোন দেশের গনতান্ত্রিক আন্দোলন কে সফল করতে আন্দোলনকারীদের পাশাপাশি মিডিয়াই যথেষ্ঠ এবং ব্যর্থ করতেও তারাই যথেষ্ঠ।আশা করি মিডিয়ার ভাইদের সেই সঠিক বুদ্ধির উদ্রেক হবে এবং বর্তমান আন্দোলনকে সফল করতে উদ্যোগী ভুমিকা পালন করবে।বর্তমানে চলমান আন্দোলনের অনেক সফলতার খবর আছে যে গুলো সঠিকভাবে মিডিয়ায় আসছে না আশা করবো সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি ভেবে দেখবেন।আমার মত সাধারন জনগণ ক্ষমতার স্বাদ নিতে চাইনা আমরা চাই আমাদের ভোটাধিকার যার মাধ্যমে সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচন করতে পারবো। গনতন্ত্রের স্বাদ ও গন্ধ নিতে পারবো। এর চাইতে বড় চাওয়া আমাদের নাই।
বিষয়: বিবিধ
১০৫৬ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন