&&&& একজন ক্রীড়া বালক (প্লে বয় নয়)&&&&&& ( লিখেছেন: আবুল মাল )
লিখেছেন লিখেছেন লিচু চোর ০০৭ ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৬:৪৫:৪০ সন্ধ্যা
জীবনে প্রথম যখন প্রেম আসে তখন আমি ক্লাশ ফোরে পড়তাম।
পারুল আপা তখন ইন্টারে পড়ত।আমি তার কাছে প্রাইভেট পড়তে যাই। পারুল আপাকে দেখতে হবুহু নায়িকা দিতির মত লাগত। একদিন পারুল আপাকে সাহস করে বলে ফেলি- আপা আমি না আপনাকে ভালবাসি। আমার কথা শুনে পারুল আপা আমার দিকে যতক্ষন হা করে তাকিয়েছিল ততক্ষনে আমার দুইটা অংক করা হয়ে যেত।
পারুল আপা আমাকে একটা শর্ত দেয়। তিনি আমাকে প্রতিদিন একটা করে কাগজ দেবে আর সেই কাগজ আমাদের বাড়ির পাশে মিলন ভাইকে দিতে হবে।এই শর্তে রাজি হলে তিনি আমাকে ভালবাসবে। আমি রাজি হয়ে গেলাম। পারুল আপা আমাকে প্রতিদিন একটা কাগজ দেয় আর আমি সেই কাগজ মিলন ভাইকে দিয়ে আসি।
প্রতি রাতে আমি পারুল আপাকে স্বপ্নে দেখি,তিনি আমার গাল টেনে দেন,চুল টেনে দেন।পারুল আপাকে নিয়ে পাহাড়ে সাগরে গান গাই।
এ ভাবে ১ মাস চলে গেল,একদিন বিকেলে পারুল আপার কাছে প্রাইভেট পড়তে যাই।পারুল আপার বাড়িতে অনেক লোকজনের ভীড়। পারুল আপার মা কাঁদছেন। পারুল আপার বাবা কাকে যেন জোরে জোরে গালি দিচ্ছেন,খুন করার হুমকিও দিচ্ছেন। কিছুই বুজতে পারছিনা। পরে শুনলাম পারুল আপা আমাদের মিলন ভাইর সাথে পালিয়ে গেছে।
পারুল আপা আমাকে কাগজ দিত মিলন ভাইকে দেয়ার জন্য। সেই কাগজের মানে আমার ছোট্ট এন্টেনায় ধরত না। কিন্তু পরে বুজতে পারলাম সেই কাগজের অর্থ কি ছিল…
২য় প্রেমের কাহিনি এত বড় না।তখন ক্লাশ ফাইভে পড়ি,তুলি নামে এক মেয়ে আমাদের ক্লাশে পড়ত। খুব পছন্দ হল,একদিন সাহস করে বলে ফেল্লাম - তুলি তোকে না আমি ভালবাসি। আমার কথা শুনে হরিণের মত তুলির চোখ দুটো ফার্মের লাল মুরগীর ডিমের মত হয়ে গেল। আমি এর কারন বুজতে পারলাম না।
আমার সেই কারন বুজতে ১ ঘন্টার বেশি লাগে নাই। আধা ঘন্টা পর হেড স্যার আমাকে তার রুমে ডেকে পাঠালেন।
স্যার দুইটা বেত নিলেন,আমি ৩ দিন জ্বরের কারনে স্কুলে যেতে পারি নাই।
৩য় প্রেম আসে যখন হাই স্কুলে ক্লাশ সিক্সে উঠি। এত সুন্দর মেয়ে জীবনে কম দেখেছি। হেড স্যারের বেত আমার সাহস একটুও কমাতে পারেনি। একদিন মেয়েটির কাছে গিয়ে চুপি চুপি আমার ভালবাসার কথা বলে ফেল্লাম।
মেয়েটি আমাকে বলল - তোর সাহস তো কম না,জানিস আমার বাবা পুলিশ।
আমি ভেবে দেখলাম স্যারের বেতের চেয়ে পুলিশের ডান্ডা অনেক মোটা হয়।
আমি আর ওই মেয়ের দিকে ফিরেও তাকালাম না।
এর পরের প্রেম ক্লাশ সেভেনে যখন উঠি তখন।
একটা মেয়েকে দেখে আবার ক্রাস খাইলাম। তখন শুনতাম ১৪ ই ফেব্রুয়ারিতে নাকি প্রোপজ করলে কেউ ফিরায় না। তাই ওই মেয়েকে প্রোপজ করার জন্য ১৪ ই ফেব্রুয়ারি তারিখ ঠিক করলাম। অবশেষে ভালবাসা দিবসে মেয়েটিকে প্রোপজ করলাম।
মেয়েটি আমাকে বল্ল - আমাকে সত্যি ভালবাস? আমি একটু বেশি বলে ফেল্লাম - হুম তোমার জন্য আমি বিষ খেয়েও মরতে পারি।
মেয়েটি বলল - ও তাই? আচ্ছা বিষ খাওয়া লাগবেনা,রাস্তার পাশে শীম গাছ দেখাইয়া আমাকে বল্ল ওই যে শীম পাতা আছে না,ওইটা এখন খাইয়া দেখাও।
আমি শীম পাতা খাই নাই, ওই দিন থেকে আর কোন মেয়ের দিকে তাকাই না।তবে অপেক্ষায় আছি,জীবনে এমন কেউ আসবে যে নিম পাতা খাইতে বললেও আমি সহজ সরল বালকের মত খেয়ে ফেলব।
বিঃ দ্রঃ আবুল মাল ক্রীড়া বালক (প্লে বয় ) নয়।
বিষয়: বিবিধ
১৭১১ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কি ব্যাপার অসময়ে প্রেম হলো আর সুসময়ে কোন খবর নাই !!!!!!!!!!
শিম পাতা রাইধা খেয়ে দেখালেই পরতেন!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন