***** চ্যানেল ৭১****** এবং তার চেতনা !!!!!
লিখেছেন লিখেছেন লিচু চোর ০০৭ ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০১:৪৭:০৭ রাত
টেলিভিশন মানে দূরদর্শন। এখানে ধর্ষণ ছাড়া সবকিছুই দেখানো জায়েজ। এখানে গভীর রাতে টাকওয়ালারা টাকাওয়ালাদের হয়ে টকশোতে গলাবাজি গালিবাজি করেন। এখানে নাটকে প্রেমক্রীয়ার নামে পরকীয়া শেখানো হয়। সাংবাদিকেরা সংবাদ পরিবেশনের সময় হলুদের পুকুরে ডুব দিয়ে নেন। রিয়েলিটি শোর এসএমএস কন্টেস্টের নামে আমজনতাকে বোকা বানিয়ে ধোকা দেওয়া হয়। ব্লেড থেকে শুরু করে ব্লাড পর্যন্ত সকল বিজ্ঞাপনেই নারীদের সজ্ঞান অংশগ্রহণ!
৭১ নামে এমনই এক টেলিভিশন চ্যানেল আছে। ১৪ সন্তানের জননী আমার নানীর বয়সও একাত্তুর। নানীবাড়িতে একটা একাত্তুর বছরের পুরোনো তালগাছে আছে। সেই তালগাছের তাল বিক্রি করে এখনও ভালো ব্যাবসা হয়!
হ্যাঁ, ৭১ একটি ব্যাবসার নাম। ৭১ একটি জাদুকরী মন্ত্রের নাম। ৭১ একটি মুখোশের নাম।
৭ খুন করে লাশ ভাসিয়ে দিয়ে আপনি এই মন্ত্রটা পাঠ করলে নিষ্পাপ পীর হয়ে যাবেন। এই মুখোশ পড়ে ৭১ টা নারীকে জোরপূর্বক ভোগ করেও আপনি "পবিত্র" "দেশপ্রেমিক" থাকবেন। প্রতিদিন একাত্তুর টা মিথ্যা বলেও এই ব্যাবসার জোরে আপনি হবেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান।
(রতনে রতন ছিনে আর রেন্ডি ছিনে রেন্ডি ------- আমার অশ্লীল কথাটির জন্য ক্ষমা চাচ্ছি, এর চেয়ে ভাল কথা আমার কাছে নেই, তাদের জন্য । শুধু মাত্র এই দুটি লাইন লিচু চোরের )
যাই হোক, সম্প্রতি এই ৭১ এ একটা নট আর নটির আদিরসাত্মক সেমিন্যুড ফোনালাপ প্রচার করা হয়েছে। কারো ব্যাক্তিগত ফোনালাপ প্রচার!
এই প্রজন্ম রেকর্ড করতে পছন্দ করে। হয়ত পৃথিবীর বুকে এটাও একটা নতুন রেকর্ড।
হ্যাপি নাজনীন নামের নটিটা, যে কী না বাংলাদেশী সিনেমার এক অখ্যাত অভিনেত্রী, রুবেল নামের নটটার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, "বিয়ের প্রলোভন" দেখিয়ে ৯ মাস ধরে ধর্ষণ করেছে রুবেল। ৯ মাস অনেক সময়। এসময়ে ভ্রুন থেকে মানবশিশু জন্মাতে পারে। ৯ মাসের যুদ্ধে একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হতে পারে। সেই ৯ মাস ধরে ধর্ষিতা হয়েও ধর্ষণের ঘর্ষণ টের পাননি সার্কাসের জোকারটা।
ধর্ষণ শব্দটা আমাকে স্মৃতিকাতর করে ছোটবেলায় ফিরিয়ে নেয়। টিভিতে দেখতাম, স্বাস্থ্যবতী নায়িকাকে দৌড়াচ্ছে ভিলেন। নায়িকাও দৌড়তে দৌড়তে বুক ফুলিয়ে গলা ফাটিয়ে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছে। শুরু হয় নায়িকার সাথে ধস্তাধস্তি, কুস্তাকুস্তি, গেন্জী ধরে টানাটানি। অতঃপর নায়কের আগমন!
না, টিভিতে হ্যাপি গেন্জী পড়ে আসেননি। হিজাব পড়ে এসেছেন। ভার্সিটির মেয়েদের হিজাব পড়ে ছেলেদের সাথে তাস খেলা, দোস্ত দোস্ত বলে হাতাহাতি আমাকে ভাবিয়ে তুলতো। ২ বছর আগে একদিন রাত সাড়ে এগারোটায় বন্দরবাজার পয়েন্টে মধুবন সুপারমার্কেটের সামনে বোরখা পড়া ৪/৫ জন ভদ্রমহিলাকে দেখে অবাক হয়েছিলাম। আমার এক বন্ধু জানিয়েছিলো, এরা দেহপসারিণী। সেদিন বিশ্বাস করি নি। আজ বিশ্বাস করি। আজ বাদে কালও যে হ্যাপি হাফপ্যান্ট পড়ে শ্যুটিংয়ে নামবে, সে পড়েছে হিজাব! আমাদের সৌভাগ্য যে সে নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়ে, এই দাবি করে নি।
রুবেল যদি এখন টুপি পান্জাবী পড়ে টিভিতে হাজির হয় ভন্ডামির ষোলকলা পূর্ণ হবে!
জানি, এদেশে এই দুই নট/ নটির ব্যাভিচারের বিচার হবে না। এমনটা দাবিও করছি না। আমি বলতে চাই কোন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে যদি ব্যাক্তিগত সঙ্গম কাহিনীর অডিও প্রচার করা হয়, সেটা নিঃসন্দে চরম উদ্বেগজনক, সভ্য সমাজের জন্য সেটা বিপজ্জনক। টিভি চ্যানেলে ব্যাক্তিগত আদি রসাত্মক আলাপ প্রচার মানেই অশ্লীলতাকে নষ্টামিকে ন্যুডিটিকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেবার চেষ্টা!
ইজ দিস চেতনা ৭১?
( সকল ক্রেডিট ফেসবুক সেলিব্রেটি কাউসার আলম ভাইয়ের )
বিষয়: বিবিধ
১১৮০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর এখানেই প্রয়োগ করতে হবে চুরি বিদ্যা----- তাই সকল লিচু চোরদেরকে আজ একত্রিত হতে হবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন