মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স ) এর মহানুভবতা :: পর্ব-১(টুডে ব্লগের ভাই বোনদের সৌজন্যে)

লিখেছেন লিখেছেন ইয়াহিয়া খান ০৫ এপ্রিল, ২০১৫, ০৭:২১:৪০ সন্ধ্যা



আমাদের প্রানপ্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (স ) যখন পৃথিবীতে আবির্ভূত হন , তখনকার সমাজে আরবরা নানামুখী ভয় ভীতি আতংকের মধ্য দিনানিপাত করত। তারা ভিত থাকত তাদের প্রতিবেশিকে নিয়ে, ভিত থাকত অন্য গোত্রের লোকদের নিয়ে, এমনকি তারা ভিত সন্ত্রস্ত থাকত তাদের উপাসনার জন্য তৈরী করা মুর্তিগুলোকে নিয়েও। তারা জীবন্ত সমাহিত করত তাদের সদ্যজাত কন্যাদের, ছোটখাটো কথা কাটাকাটি হলেই তলোয়ার খুলে কচুকাটা করত একে অপরকে, মায়ের সাথে, বোনের সাথে সহবাস করাকে গন্য করা হত পুরুষ আরবদের অধিকার হিসেবে ….............

অতপর মহান আল্লাহ পাকের অশেষ মেহেরবানীতে তত্কালীন বর্বর, নিষ্ঠুর আরব সমাজে আবির্ভাব ঘটল শান্তির ধর্ম, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ভালবাসা, মহানুভবতার ধর্ম ইসলামের …..........

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স ) নিজেও ছিলেন একজন অত্যন্ত দয়ালু ও উদার ঋদয়ের ব্যক্তিত্ব , ছোট-বড়, গুনি-অগুনি, ধনী-দরিদ্র, কাফের- মুসলমান নির্বিশেষে ভালবাসতেন সবাইকে ......... ফলশ্রুতিতে নবিজি (স ) ও কাফের-মুসলমান নির্বিশেষে ভালবাসা পেয়েছিলেন সবার .........

নবিজি হজরত মুহাম্মদ (স ) যখন ইসলাম এর সুমহান বাণী প্রচার করা শুরু করলেন মহান আল্লাহ পাককে উপাসনার আহ্বান জানালেন, মূর্তি পূজা পরিহার করার দাওয়াত দিতে লাগলেন তখন তত্কালীন আরব সমাজের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক পরিমন্ডলে নেত্রিবর্গরা হালকা বেকায়দায় পরে গেলেন . তারা দেখতে লাগলেন নবিজি (স ) এর সত্যবাদিতার সুনাম আর উদারতা, সুন্দর চারিত্রিক গুনাবলীর জন্য সাধারণ আরবরা নবিজি (স ) এর প্রতি গভীর ভালবাসায় নিমজ্জিত, ফলশ্রুতিতে সাধারণ আরবরা তাদের পূর্বপুরুষদের পালন করে আশা হাজার বছরে ধর্মীয় অনুশাসন ছেড়ে দিয়ে ইসলাম ধর্মে সমর্পিত হচ্ছ। ফলে তত্কালীন আরব ধর্মীয় গুরুরা ক্রোধের স্ফুলিঙ্গে জ্বলে পুরে খাক হচ্ছিল আর ভেতরে ভেতরে নবিজি (স) এর ক্ষতি করার ধান্দা করতে লাগলো।

নিচের গল্পটি হয়ত আমরা অনেকেই জেনে থাকব ::



ইসলাম প্রচারে কারণে তত্কালীন আরবের অনেক লোক জনই নবিজি (স ) কে অপছন্দ করত এবং ক্ষতি করার তালে থাকত . তেমনি একজন এক বুড়ি প্রতিদিন নবিজি (স ) এর মসজিদ গমনের সময় প্রতিদিন রাস্তায় ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখত . নবিজি (স ) প্রতিদিন ময়লা আবর্জনাগুলো তুলে রাস্তা পরিষ্কার করে দিতেন , বুড়িটা কখনো কখনো নবিজি (স ) এর গায়েও ময়লা আবর্জনা ছুড়ে মারত . নবিজি (স ) চুপচাপ চলে যেতেন, কখনো রাগান্বিত কিংবা বিরক্ত হননি . এটা ছিল নিত্য দিনের রুটিন ….....

হটাত একদিন মসজিদে গমনের সময় নবিজি (স ) খেয়াল করলেন বুড়িটা রাস্তায় সেদিন কোন ময়লা আবর্জনা ফেলে নি ....... নবিজি (স ) সেখানে থামলেন এবং বুড়িটার প্রতিবেশী কাছে গিয়ে বুড়ির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোজ খবর নিলেন . প্রতিবেশীটি জানালেন বুড়ি মহিলাটা অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী আছেন .নবিজি (স ) অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বুড়ি মহিলাটির সাথে সাক্ষাত করার অনুমতি চাইলেন .অনুমতি পাবার পর নবিজি (স ) ভেতরে প্রবেশ করলেন এবং বুড়িটাকে অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় দেখতে পেলেন . নবিজি (স ) কে দেখার পর বুড়িটা বিচলিত হয়ে উঠেছিল এই ভেবে যে লোকটা তার উপর প্রতিশোধ নিতে এসেছে ......... কিন্তু নবিজি (স ) বুড়িটাকে নিশ্চিত করলেন যে তিনি কোন প্রতিশোধ নিতে আসেন নি বরং বুড়ির স্বাস্থের খোজ খবর নিতে এসেছেন, কারণ এবং মহান আল্লাহ পাক মুসলমানদের নির্দেশ দিয়েছেন যদি কেউ অসুস্থ হয় মুসলমানরা যেন তার খোজ খবর নেয় এবং সাহায্য করে .বুড়ি মহিলাটি নবিজি (স ) এর উদারতায় মুগ্ধ হলেন এবং বুঝতে পারলেন ইসলামী সত্যিকার ধর্ম; অতপর মহিলাটি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন ....

নিচের গল্পটি হয়টি অনেকেই জেনে থাকবেন না ::



একদা নবিজি (স ) দুপুর বেলা মরুভূমির মধ্য দিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন . দুপুর হবার ফলে মরুভূমি ছিল অত্যন্ত গরম তপ্ত . এমন সময় নবিজি (স ) একজন বয়স্ক মহিলাকে খুব ভারী একটা বোঝা মাথায় নিয়ে টলতে টলতে যেতে দেখলেন . নবিজি (স ) মহিলাটির বোঝা নিজ কাধে তুলে নিলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন মহিলাটি কোথায় যাচ্ছে এবং কেন ? মহিলাটি বলল আমি শহর ছেড়ে যাচ্ছি কারণ আমি শুনেছি এই শহরে মুহাম্মদ (স ) নাম একজন জাদুকর এসেছে ..আমাদের নবিজি (স ) যথারীতিই ছিলেন শান্ত ও ধৈর্যশীল ব্যক্তি, তিনি (স ) কোন কথা না বলে চুপচাপ শুনতে লাগলেন ….. মহিলাটি গোটা সময়টা তার শহর ছাড়ার ব্যপারে নবিজি (স ) এর নাম বিভিন্ন রকমের অভিযোগ অনুযোগ করে গেলে গেলেন .যখন তারা তাদের গন্তব্যে পৌছালো, নবিজি (স ) বোঝাটি রাখলেন এবং যখন ফিরে যেতে উদ্যত হলেন তখন মহিলাটি দেকে উঠলেন "ও মহান লোক, অন্তত তোমার নামটা ত বলে যাও ! "

নবিজি(স ) উত্তর করলেন " আমিই সেই ব্যক্তি যার জন্য আপনি শহর ছেড়েছেন "

বৃদ্ধা মহিলাটি বিস্মিত হলেন এবং বুঝতে পারলেন ইসলাম ধর্মই প্রকৃত সত্য ধর্ম . তিনি ইসলাম ধর্ম কবুল করলেন ।

আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে নবিজি(স ) এর চারিত্রিক গুনাবলীসমূহ ধারণ করবার তৌফিক দান করুন ।

বিষয়: বিবিধ

১৪০৭ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

313116
০৫ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৮:১৩
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ আমাদের লক্ষে পোস্টার জন্য ,,,গল্প দুটি শুনেছি পূর্বে আজ ও পড়ে অনেক ভালো লেগেছে।
০৫ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৮:৫২
254118
ইয়াহিয়া খান লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাই আব্দুল্লাহ শাহীন ,নবিজি (স ) এর গল্পগুলো সত্যিই অসাধারণ ........ আরো কিছু অসাধারণ গল্প জানা আছে একে একে সেগুলো শেয়ার করব ইনশাল্লাহ Happy
০৫ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৮:৫৭
254120
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : Good Luck Good Luck
313123
০৫ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৮:৫২
ইয়াহিয়া খান লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাই আব্দুল্লাহ শাহীন ,নবিজি (স ) এর গল্পগুলো সত্যিই অসাধারণ ........ আরো কিছু অসাধারণ গল্প জানা আছে একে একে সেগুলো শেয়ার করব ইনশাল্লাহ Happy
313135
০৫ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০৯:৩৪
আবু জান্নাত লিখেছেন : একই লেখা দু'বার পোষ্ট করেছেন কেন? মশাই। কি! অবাক লাগছে.. দেখে নিন Click this link

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File