নিজের ঢোল, বিশ্বকাপ ও একটু চাওয়া…
লিখেছেন লিখেছেন সরোজ মেহেদী ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৩:১৮:২৫ রাত
১. টানা চারটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেললাম।গুরুত্ব বিবেচনায় এক একটা ম্যাচ একজোড়া বিশ্বকাপ ফাইনালের সমান।বিশ্বকাপেতো ছোট একটা কাপের লোভে দুইটা দেশের প্লেয়াররা খেলে।আর আমরা কাপ ছাড়াই, শুধু ক্রিকেটের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে পাঁচ পাঁচটা দেশের পোলাপান(পাক-ভারত, আফগান-কেনিয়া এন্ড বাংলাদেশ) দুইটা টিমে ভাগ হয়ে এসব ম্যাচ খেলি।শুধু তাই নয় আফ্রিকার কয়েকটা দেশের পোলাপান খেলার জন্য মাঠের বাইরে অপেক্ষা করছিল।তবে যোগ্যতা বিবচেনায় ওদের সুযোগ দেয়া যায়নি।যাই হোক চার ম্যাচের তিনটাতেই আমার দল জয়ী হয়েছে।যার কৃতিত্ব আমি নিতেই পারি।
বি,দ্র-এসব জয়ে আমার ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স কেমন ছিল তা বলা যাবে না।অবশ্য সেই আদিকাল থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বিগ শট খেলতে চেয়ে শূন্য রানে আউট, ম্যাচের অন্তিমমুহূর্তে ইজি ক্যাচ ছেড়ে দিয়ে উত্তেজনা তৈরির একটা সুনাম আমার ছিল।তুর্কিতে এসেতো আর আমি সে সুনাম বিসর্জন দিতে পারি না।
যাইহোক টিমগতভাবে আমাদের একটা অর্জন হচ্ছে তুর্কিদের ক্রিকেট চেনানো।যে তুর্কিরা ক্রিকেট শব্দটাই জানে না সেই তারাই বারান্দায় দাঁড়িয়ে আমাদের খেলা উপভোগ করছিল।যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যহারে নন্দিনীরা ছিল।আমিতো ওই মনোহারিনীর দিকে চাইতে গিয়েই বলের দিকে তাকানোর…
২. ২০০৭ এর কথা।মিনি বিশ্বকাপ এর ফাইনাল খেলছে ভারত-পাকিস্তান।তখন আমি সরকারি বিজ্ঞান কলেজের সম্মানিত ছাত্র মহোদয়!অন্য সরকারি হলগুলোর মতো বিজ্ঞানের হলের খাবারও খুব সুস্বাদু ছিল।তাই প্রায়ই আমরা বাইরে খেতাম।ওইদিনও মেসবাহময় খেলা দেখার হাত থেকে বাঁচতে আমরা কয়েকজন হল ছেড়ে বাইরে চলে যাই খেতে।খাওয়া তখনো শেষ হয়নি।মানুষের চিল্লাফাল্লা কানে আসা শুরু হয়।বুঝলাম কিছু একটা হচ্ছে।আমরাও খাওয়া ফেলে হলের দিকে দৌড়াই।এসে দেখি আশ্চর্যজনকভাবে জয়ের দাঁড়প্রান্তে পাকিস্তান।যেই আমরা টিভি রুমে ঢুকেছি অমনি আরও বেশি আশ্চর্যজনকভাবে আউট হয়ে গেলেন মিসবাহ।থেমে গেল সব উত্তেজনা।
ব্যাপারটা শুধু ক্রিকেটিয় হলেও মাঝে মধ্যে আমার মন খারাপ হয় দুটি দেশের জন্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এত এত উত্তেজনা দেখে।আসলে দল হিসেবে ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখনো ধারাবাহিক না হতে পারায় আমরা অন্যদলকে নিয়ে আগ্রহ দেখাই।যদি বাংলাদেশ ভাল খেলে তাহলেতো অন্যরা কে কেমন খেলল তা দেখারও ফুরসত পাবে না মানুষ।
৩.এখন চলছে বড় বিশ্বকাপ।বাংলাদেশ আর কয়েক ঘন্টা পর মুখোমুখি হবে আফগানিস্থানের।আফগানিস্থান থেকে আসা আমার এক বন্ধু গতকাল মন খারাপ করে বলল- মেহেদী তোমরাই জিতবে।আমরা পারব না।আমি তার পিঠে থাপ্পর মেরে বললাম-কে জিতবে জানি না।তবে আমরা সবাই একসাথে খেলা দেখব।ওই সময় কেনিয়া থেকে আসা আর এক বন্ধু ওকে বলল-টেনশন করো না, বাংলাদেশ হারবে।আফগানিস্থানই জিতবে।এটা শুনে আফগান বন্ধুটি একটা মুচকি হাসি দিল।আর আমি নিজের ভেতরের অস্থিরতাকে ঢাকার চেষ্টা করলাম।
সত্যিই জিতবেতো বাংলাদেশ!যদি না জিতে আমি অন্তত পরদিন লজ্জ্বায় ক্লাসে যেতে পারব না।নিউজিল্যান্ড থেকে আসা আর এক বন্ধু আমাকে দেখে মুচকি হাসবে।তার সাথে ক্রিকেট নিয়ে প্রতিদিনই টুকটাক তর্ক হচ্ছে।হয়তো তর্কের জের টেনে আমাকে দুই চার কথা শুনাবেও।কথা প্রসঙ্গে টেনে আনতে পারে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা।
শেষ করছি এই আবেদনে-অন্তত এ ম্যাচটিতে জয় নিয়ে মাঠ ছাড় বাংলাদেশ।আফগানিস্থানের বিপক্ষে একটি জয় চাওয়া খুব বেশি কিছু নয়।মায়ের মুখে হাসি দেখতে সন্তানের করা আবদারের মতো বড়জোর।
সবাইকে ক্রিকেটিয় শুভেচ্ছা।বাংলাদেশ দলের জন্য অযুত, লক্ষ, কোটি শুভকামনা।ভালোবাসি বাংলাদেশ।
বিষয়: বিবিধ
৮৬৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ ঐ বিশ্বকাপে মিসবাহ ভালই খেলেছিল । বেশ কয়েকটি ম্যাচে সে অপরাজিত ছিল এবং দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছে ।
সে সময়ে মিসবাহ অনেক দিন পর মাঠে নেমেছিল । মিসবাহের বয়স হলেও ক্রিকেটের সব ভার্সনে তার খেলার সংখ্যা কিন্তু বেশী না ।
আমার কাছে ঐ সময়ে টি টুয়েন্টি মানেই ছিল মিসবাহ এখন যেমন গেইল । সে সময়ে প্রথম আইপিএলে মিসবাহকে নিয়ে ছিল রয়াল চ্যালেন্জারস্ ব্যাঙ্গালুরু (সম্ভবত)।
ঐ ফাইনালে মিসবাহের সাথে সোহেল তানভীর ভালই সঙ্গ দিয়েছিল যেখানে ৭৫-৫ হয়ে গিয়েছিল ইরফানের বোলিং তোপে।
আপনি মনে হয় সোহেল তানভীর আর মিসবাহের জুটি দেখেন নাই ।
http://stats.espncricinfo.com/ci/engine/records/team/match_results.html?class=3;id=2007;type=year
এখন বাংলাদেশের স্কোর ১১৩-৩ (২৮.২)।
৩০০ না করতে পারলে জেতা কঠিন হবে
যাক শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ জয় পেল। অনেক ভাললাগছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন