বলা না বলা

লিখেছেন লিখেছেন সরোজ মেহেদী ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৮:২০:৪৫ রাত

১. বাদল ও রুহী কলিকালের বন্ধু।স্কুল জীবনে রুহী বাদলের সাথে বরাবরের মতোই তার মেয়েসুলভ আচরণ করেছে। আর এটাকেই সেটা ভেবে বেচারা বাদল মন দিয়ে বসে আছে মেয়েটিকে। ধীরে ধীরে বড় হয় ওরা।যতটা গতিতে বড় হচ্ছিল তারচেয়েও বেশি গতিতে একজন আর একজন থেকে দূরে সরে যায়।এক পা দু’ পা করে ওই সময়টাতেই শুরু হয় যৌবনবতী সুন্দরী রুহীর পুরোদস্তুর প্রেমময় জীবন। একসময় স্কুল ছেড়ে ওরা পা দেয় কলেজের আঙিনায়। বাদল সরকারি বিজ্ঞান কলেজের হোস্টেলে। আর রুহী কোডা (মহিলা) কলেজের।

কলেজ জীবনে এসে বাদল বুঝতে পারে-রুহী আসলে হাত বাড়িয়ে ধরা তথা ছোয়ার বাইরে চলে গেছে।হাজরো প্রতিষ্ঠিত কাকের ভীড়ে ওকে কোনোভাবেই পাওয়া সম্ভব না।তাই সে রুহীর সাথে কোনো রকম যোগাযোগ না করার সিদ্ধান্ত নেয়।তবু মন বলে কথা।মাঝে মধ্যে ভুলে বাদলের ফোন থেকে মিসকল চলে যায় রুহীর ফোনে।অবশ্য এমন নানা ছুতোয় বহু ছেলেই কল দিত রুহীকে, তাদের দেবার শখ ছিল রকমারি গিফটও।

২. কলেজের হোস্টেলে বাদলের সাথে এক রুমে উঠে মেহেদী নামের একটি ছেলে। বাদলকে পড়ে নেয় মেহেদী, সুবিধাবাদী একটি চরিত্র তার মধ্যে থাকা সত্বেও ভাল লাগে। সায় দেয় বাদলের যে কোনো কাজে।শুরু হয় ওদের দূরন্ত এবং উড়ন্ত পথচলা।যা এখন মাটিতে।

৩. রুহীর বাবা আবুল একজন দাঁতের ডাক্তার।কোনো রোগী তার কাছে গেলে খারাপ দাঁতটা রেখে ভাল দাঁত ফেলে দেয়ার বিশেষ সুনাম ছিল তার। একদিন দুপুরে মেহেদী ফোন দেয় আবুল ডাক্তারকে। ফোন রিসিভ করেন আবুল ডাক্তার সাহেব।তারপর যা হলো।

আবুল: হ্যালো কে

মেহেদী: স্লামালাইকুম আঙ্কেল, আমি মেহেদী

আবুল: বলেন

মেহেদী: আঙ্কেল কেমন আছেন? রুহী কোথায়

আবুল: জ্বি জ্বি জ্বি, মাশাআল্লাহ ভাল।কি রোগী

মেহেদী: আঙ্কেল রোগী না রুহী কোথায়।ঢাকায় না বাড়িতে

আবুল: কি বললেন বুঝলাম না ভাই। রোগী কোথায় আছে, হে…

মেহেদী: ওহ আঙ্কেল, রোগী না। আপনার মেয়ে রুহী আছে না রুহী।

আবুল: (গম্ভীর হয়ে) হে কি হয়েছে বলো (সরাসরি আপনি থেকে তুমি)

মেহেদী: আঙ্কেল রুহী কোথায়

আবুল: এটা দিয়া তুমি কি করবা। বেদ্দব ছেলে। তুমি কি এইটা জানতে আমারে ফোন দিছ।

মেহেদী: আঙ্কেল বলেন না রুহী কোথায়। ওরে আমার দেখতে ইচ্ছে করতেছে।

আবুল: (একটা গুঙানি দিয়ে)এহ ওনার দেখতে ইচ্ছে করতেছে। ওনি কুয়াড়া

পাইছে। বেত্তমিজ ছেলে কোথাকার। অসভ্য।ভাল হইব না বলতেছি।

মেহেদী: আহ আঙ্কেল আপনি বুঝেন না কেন আমি রুহীকে ভালবাসি। আপনি যেমন

আন্টিকে ভালভাসেন। বিয়ের আগেতো নাকি তার জন্য পাগল হয়ে গেছিলেন?

আবুল: (খেকিয়ে উঠে) ওরে আমার ভালবাসাওয়ালারে। তোরে আমি পুলেশ দিমু।ফোন

রাখবি তুই অসভ্য ছেলে।বেত্তমিজের মতো কথা বলে।কত্ত বড় সাহস। ফো…ন রাখ(আবার দাঁত কিড়মিড়ি)।

মেহেদী: ওহ আঙ্কেল আপনি যা খুশী আমারে বলেন। কিন্তু আমার ভালবাসারেতো...

এ পর্যায়ে লাইন কেটে দিলেন আবুল ডাক্তার। সুতরাং সেদিনের মতো তার সাথে

মেহেদী নামক ছেলেটার সংলাপ অসমাপ্তই রয়ে গেল...

৪.

রুহী এখন রংপুর মেডিকেল থেকে পাশ করা বিকামিং(গুড) ডাক্তার। বাদল

এশিয়া প্যাসিফিক থেকে ট্রিপল-ই ইঞ্জিনিয়ার।আর মেহেদী আছে আগের মতোই ভবগুরে…

বিষয়: বিবিধ

১০৪৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

304680
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৮:২৬
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৮:৪০
246459
সরোজ মেহেদী লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।
304716
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:৫৮
আফরা লিখেছেন : গল্পটা আর একটু মনে হচ্ছে আগোছালো ।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:৫৬
246610
সরোজ মেহেদী লিখেছেন : ওকে নতুন প্লট নিয়ে হাজির হওয়ার চেষ্টা করব।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File