১, ২ এবং ৩।অত:পর!
লিখেছেন লিখেছেন সরোজ মেহেদী ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ১১:৪৯:৪৬ রাত
2. বেশ কিছু দিন আগে আপা মারা গেলেন।আমার এ জেঠাতো বোনটির খুব আস্থার মানুষ ছিলাম আমি।মা মুরগী যেমন তার বাচ্চাদের বুকে আগলে রাখে তিনিও আমাকে নানা দুর্যোগের সময় আগলে রাখার চেষ্টা করেছেন, সাহস দিয়েছেন।তার মুখটা দেখলে এক ধরণের প্রশান্তির ছোয়া পেতাম।অথচ আমাকে শূন্য করে দিয়ে কত আগেই না চলে গেলেন।আর হতভাগা আমি তার জানাজা বঞ্চিতও হলাম।
৩. আপার মৃত্যুর খবরটা শুনে দূর প্রবাসে কোনোভাবেই শান্ত হতে পারছিলাম না।এর মধ্যেই খবর পেলাম আমার আট বছর বয়সী ভাতিজা (জেঠাতো ভাই এর ছেলে) মারা গেছে।সৃষ্টির সব রকম সৌন্দর্যই খোদা এ শিশুটির মধ্যে দিয়েছিলেন।আমার চোখের সামনে সারাক্ষণ ওর সারল্যে ভরা হাস্যেজ্জ্বল মুখটি ভাসছে।খুব অস্থির লাগছে।
১. ছোটবেলায় একটি ছেলের সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়েছিল।ওর নাম ছিল মেহেদী।বেশ কয়েক মাসের মধ্যে বন্ধুত্ব এমন পর্যায়ে পৌঁছাল যে একজন আর একজনকে না দেখে একদিনও থাকতে পারতাম না।এক ছুটির দিন মেহেদী ক্রিকেট মাঠে গেল খেলতে, সেখান থেকে মাথায় বলের আঘাত পেয়ে গেল হাসপাতালে।আমি অন্য বন্ধুদের অভয় দিলাম সব ঠিক হয়ে যাবে।নাহ কিছুই হলো না।আমাদের সবাইকে রেখে স্বার্থপরের মতো মেহেদী এরপর গেল গোরস্থানে।ওর মৃত্যুটা আমাকে কাঙাল করে দিয়ে গিয়েছিল।প্রিয় বন্ধুর মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে অনেক দিন পর্যন্ত মানসিকভাবে বিপর্যন্ত ছিলাম।হয়তো মানুষ বলেই সব ভুলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরি।কিন্তু ওর স্মৃতি কখনো ভুলে যেতে পারিনি।যখনই ভোলার চেষ্টা করি, ও ঝাপটে ধরে আমাকে।সামনে এসে শ্লেষভরা মুচকি হাসি হাসে।
সত্যি বলতে কী বহুদিন এসব একরকম ভুলেই ছিলাম।এ সময়ের মধ্যে নানী, ফুসু, খালাসহ অনেক প্রিয়জনকে হারিয়েছি।কিন্তু সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এ দুটি মৃত্যুর খবর আমাকে অনুভূতিহীন করে দিয়েছে।জানিনা নিজের ভেতরে অনুভূত কোনো পরিবর্তন এ দুটি মৃত্যু ত্বরান্বিত করবে কি না।বহু বছর পর আবার নতুন করে তলিয়ে যাওয়ার ভয় পেয়ে বসেছে যেন।
এ প্রশ্নের কোনো উত্তর আমি পাচ্ছি না, প্রিয় মানুষগুলোকে খোদা কেন এত তারাতারি দুনিয়া থেকে নিয়ে যাচ্ছে।একি আমার প্রতি তার দেয়া শাস্তিরই শুরু মাত্র!
চার নাম্বারে কী শাস্তি অপেক্ষা করছে তাহলে…?
বিষয়: বিবিধ
৮০৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন