বাল ভাষার জন্ম কথন!

লিখেছেন লিখেছেন সরোজ মেহেদী ২২ জানুয়ারি, ২০১৫, ১১:৩৩:৫৯ রাত

১. তুর্কিস্থানে কম্পিউটার সাইন্সে পিএইচডি করতে এসেছে আতিক নামের এক পাকিস্তানী।আতিকের মাতৃভাষা পাশতুন।পাকিস্তানের রাষ্ট্র ও দাপ্তরিক ভাষা উর্দু।সুতরাং পাশতুনের বাইরে তাকে উর্দু শিখতে হয়েছে।উর্দু সূত্রে হিন্দিও তার জানা।আতিক যে অঞ্চলে বড় হয়েছে সেখানকার একটি বিশাল জনগোষ্ঠী ফার্সিতে কথা বলে।তাদের সাথে চলাফেরা করতে করতেই সে ফার্সি শিখেছে।এছাড়া নিজের আগ্রহ থেকে শিখেছে আরবি।পাকিস্তানের মানুষ মোট চারটি আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে।এর সবগুলোই সে কমবেশি জানে।আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজিতে বেশ দক্ষতা রয়েছে।এখন শিখছে তুর্কি।

২. আফ্রিকার দেশ আইভোরিকোস্টের জনগণ ৬৫টি আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে।ওদের অফিসিয়াল ভাষা হচ্ছে-ফ্রেঞ্চ।আর দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজি।স্কুল পাশ করতে হলে একজন ছাত্রকে স্প্যানিশ বা জার্মান পড়তে হয়!দেশটিতে রয়েছে আরবির ব্যাপক প্রভাব।উপরে বর্ণিত সবকটি ভাষায় দক্ষ তুর্কিস্থানে পড়তে আসা আলিম নামের এক আন্ডারগ্রেড শিক্ষার্থী।

৩. ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনে অনার্স করবে নিজার থেকে আসা ইসমাইল নামের এক ছাত্র।ফ্রেঞ্চে অগাধ দক্ষতা তার।আঞ্চলিক ভাষার বাইরে জানে ইংরেজি ও রুশ।

৪. বাংলাদেশ থেকে তুর্কিতে বাইচান্স সরকারি স্কলারশিপ পেয়ে পড়তে এসেছে মেহেদী নামের একজন।ওর দেশের ছাত্রদের স্কুল পাশ করতে হলে কয়টি ভাষায় দক্ষ হতে হয় বলতে পারেন নাকি?অগত্যা মেহেদী নিজের ও দেশের মান বাঁচানোর তাগিদে কয়েকটি শব্দের সমন্বয়ে নতুন একটি ভাষার জন্ম দিয়েছে।আর সে ভাষার নাম দিয়েছে ‘বাল’ (তুর্কিতে বাল মানে মধু) ভাষা।বিদেশী বন্ধুদের সাথে দেখা হলে বা আড্ডার সময় মেহেদী মজা করে বলে ‘কানকা বামবো’।ওরা হাসি দিয়ে শব্দদ্বয়ের মানে কী, কোন দেশের ভাষা জানতে চাইলে সে উত্তরে বলে-এর মানে হচ্ছে তোমাকে স্বাগতম।এটা বাংলাদেশের একটা আঞ্চলিক ভাষা।

এরপর সে সুযোগ পেলেই চোখ বন্ধ করে ওদের শোনায়-বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর একটি দেশ।বাংলা ভাষা অনেক মধুর।আমাদের সব জনগণ ইংরেজি জানে এবং নিজস্ব ঢংয়ে ইংরেজিতে কথা বলে।

৫. মেহেদীর দেশে অদ্ভূত টাইপ ভুল উচ্চারণে ইংরেজি শেখানো হয়।কারো সাথে এই উচ্চারণে ইংরেজি বলার চেয়ে চুপ থাকাটাই অপেক্ষাকৃত কম লজ্জ্বার।সংখ্যাহীন ‘সোনা কারবারীদে’র এই দেশে শিক্ষার উন্নতি, মানব সম্পদ ও মানুষের উন্নতি নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই।

বঙ্গদেশে সবাই ব্যস্ত চেতনা নিয়ে।পয়সায় টন টন চেতনা কিনতে পাওয়া যায় দেশটিতে।সুতরাং পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে তার নিজস্ব গতিতে আর মেহেদীর দেশ পড়ে আছে সকালে কারো পেট লাগালোতো বিকেলে নিজেই নিজের পুংগা মারা নিয়ে।

তবে ভাগ্যবান দেশটিতে বাস করা পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর।ওরা অন্তত মাতৃভাষার বাইরে বাংলা ও ইংরেজি নামক দুটি ভাষায় দক্ষতা ও শুদ্ধতা অর্জন করার সুযোগ পায়!

বিষয়: বিবিধ

১৭৮১ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

301336
২২ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ১১:৫০
মাটিরলাঠি লিখেছেন : "তবে ভাগ্যবান দেশটিতে বাস করা পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর।ওরা অন্তত মাতৃভাষার বাইরে বাংলা ও ইংরেজি নামক দুটি ভাষায় দক্ষতা ও শুদ্ধতা অর্জন করার সুযোগ পায়!" -কথা সত্য।
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১১:৫৪
245693
সরোজ মেহেদী লিখেছেন : বলে কোনো লাভ নাইরে ভাই।
301337
২৩ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:০৪
মোতাহারুল ইসলাম লিখেছেন : এ দেশে বিনা পয়সায় হিন্দি শেখানো হয়, তবে উর্দু শেখাটা চেতনার পরিপন্থি, আরবী শেখাটা পশ্চাদপদতা। আর ইংরেজি শিখলে কেউ বাঙ্গালী থাকেনা, হয়ে যায় বোগাস, রাবিশ।
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১১:৫৬
245694
সরোজ মেহেদী লিখেছেন : যাদের জাতীয়তা এখনো নির্ধারিত হয়নি তাদেরতো এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। আমাদের পরিচয় আসলে কি!
301388
২৩ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ১০:১৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : মাদ্রসা শিক্ষিত রা কিন্তু এই দিকে এগিয়ে! তারা আরো দুটি চলতি ভাষা উর্দু ও আরবি শিখে এবং এই দুটি ভাষা জানলে ফার্সি ভাষা এমনিতেই শিখা হয়ে যায়।
সঠিক বা ভুল বলতে পারিনা কিন্তু আমরা ইংরেজি উচ্চারন নিয়ে বাড়াবাড়ি করি। নিউক্যাসল এর অধিবাসি এক ইংরেজ এর সাথে কাজের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি আমার সহকর্মি আইইএলটিএস এ ৮.০০ স্কোর এর অধিকারির ইংরেজি তিনি বুঝতে পারেননি!কিন্তু আমার ইংরেজি বাংলা মিশান কথা থেকে আসল কথাটি বুঝে নিয়েছিলেন।
303722
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১১:৫৮
সরোজ মেহেদী লিখেছেন : আমাদের ইং উচ্চারণ কোনো উচ্চারণের জাতের মধ্যে পড়েনা। এখন এটা হারে হারে টের পাচ্ছি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File