জান্নাতের পরিচয় ও কি করলে কোন জান্নাত পাওয়া যায়
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ গোলাম ছাকলাইন ১৯ মার্চ, ২০১৫, ১০:৪৬:৫০ রাত
জান্নাত: ইহা আল্লাহ তা‘য়ালার পক্ষ থেকে তাঁর মুমিন-মুমিনা বান্দাদের জন্য আখেরাতে এক শান্তির নীড়।- এখানে আল্লাহ তা‘য়ালার কিতাব কুরআনের আলোকে জান্নাতের বিবরণ দেয়া হলো, তিনিই হলেন এর সৃষ্টিকর্তা, এর সখু -শান্তি ও জান্নাতীদের সৃষ্টিকারী আল্লাহ তা‘য়ালা। আর মুহাম্মাদ [স]-এর সহীহ হাদীসের আলোকে যিনি এই জান্নাতে প্রবেশ করেছিলেন এবং তাঁর পা মোরারক তার মাটিকে পদদলিত করেছিল।
জান্নাতের প্রসিদ্ধ নামসমূহ:
১. জান্নাত *:
আল্লাহ তা‘য়ালা বলেন:
“আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনগুত্য করবে আল্লাহ তাকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত থাকবে, তাতেই চিরস্থায়ী বসবাস করবে, আর ইহাই হচ্ছে বড় সাফল্যতা।”
[সূরা নিসা:১৩]
২. জান্নাতুল ফিরদাউস:
আল্লাহর বাণী:
“নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে আর সৎআমল করেছে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফিরদাউসে মেহমানদারী।” [সূরা কাহাফ: ১০৭]
৩. জান্নাতু ‘আদন:
আল্লাহর বাণী:
“ইহা হলো স্মরণীয় জিনিস এবং মুত্তাকীনদের জন্য সুন্দর আশ্রয়স্থল। ‘জান্নাতু আদন’ যার দরজাগুলো খোলা থাকবে।” [সূরা ¯-^ দ: ৪৯-৫০]
৪. জান্নাতুল খুলদ:
আল্লাহর বাণী:
“বল! ইহা উত্তম না জান্নাতুল খুলদ যা মুত্তাকীনদের ওয়াদা করা হয়েছে, যা তাদের জন্য প্রতিদান ও প্রত্যাবর্তন স্থান।” [সূরা ফুরকান: ১৫]
৫. জান্নাতুন নাঈম:
আল্লাহর বাণী:
“নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং সৎআমল করেছে তাদের জন্য জান্নাতে নাঈম রয়েছে।” [সূরা লোকমান: ৮]
৬. জান্নাতুল মা’ওয়া:
আল্লাহর বাণী:
“আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎ আমল করেছে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতুল মা’ওয়া, ইহা তাদের কর্মের বিনিময়ে মেহমানদারী।”[সূরা সাজদাহ:১৯]
৭. দারুস্সালাম:
আল্লাহর বাণী:
“তাদের জন্যে রয়েছে দারুসসালাম তাদের রবের পক্ষ থেকে, তিনি তাদের বন্ধু তাদের কর্মের বিনিময়ে।” [সূরা আন‘আম: ১২৭]
জান্নাতের স্থান:
১. আল্লাহর বাণী:
“আর আসমানে রয়েছে তোমাদের রিজিক ও প্রতিশ্রুতি সবকিছু ।” [সূরা যারিয়াত: ২২]
২. আল্লাহর বাণী:
“নিশ্চয় সে তাকে (জিবরীলকে) আরেকবার দেখেছিল, সিদরাতুল মুন্তাহার নিকটে, যার কাছে অবস্থিত জান্নাতুল মা’ওয়া।” [সূরা নাজম:১৩-১৪]
৩. আবু হুরাইরা [র] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [স] বলেছেন: “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আনলো, সালাত কায়েম করলো, রমজানের সিয়াম পালন করলো আল্লাহ তাকে জানড়বাতে প্রবেশ করাবেন চাই সে আল্লাহর পথে জিহাদ করুক বা তার জন্মভূমিতে বসে থাকুক।” সাহাবায়ে কেরাম বললেন, হে আল্লাহর রসূল [স]! আমরা কি এ খবরটি মানুষদের বলব না? তিনি বললেন: নিশ্চয় জানড়বাতে একশতটি স্তর রয়েছে যা আল্লাহ তাঁর রাস্তায় জিহাদকারীদের জন্য তৈরী করে রেখেছেন। দু’ টি স্তরের মধ্যে আসমান যমিনের মধ্যের দূরত ¡ সমান। যখন তোমরা আল্লাহর নিকটে জানড়বাত চাইবে তখন জানড়বাতুল ফিরদাউস চাইবে; কারণ ইহা জানড়বাতের মধ্যে ও সর্বোচ্চে এবং তার উপর রহমানের আরশ আর সেখান থেকেই জানড়বাতের নহরগুলো প্রবাহিত হবে।”
৪. আবু হুরাইরা [স] থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ [স] বলেন: “নিশ্চয় মু’মিনের মৃত্যুর সময় তার নিকট রহমতের ফেরেশ্তাগণ উপস্থিত হয়। যখন তার জান কবজ করে নেয়, তখন উহা একটি সাদা রেশমী কাপড়ে করে আকাশের দরজার দিকে নিয়ে যায়। আর তাঁরা বলেন: এর চেয়ে উত্তম আর কোন সগু ন্ধি আমরা পাই নাই।”
নোট:
* লেখক এখানে ৬টি জান্নাতের নাম উলেলখ করেছেন। ইবনে হাজার আসকালানী (রহ) বুখারী শরীফের তাঁর প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যার কিতাব ফাতহুল বারীতে বলেছেন: জান্নাতের ১০টি বা তার অধিক নাম রয়েছে। উপরের নামগুলো ছাড়াও “দারুল মুকামাহ, আল-মাকামুল আমীন, মাক‘আদুসিদক, আল-হুসনা” তিনি উলে্লখ কেরছেন। আর বলেছেন যে, এ নামগুলো কুরআনুল কারীমে উলে্লখ হয়েছে। ফাতহুল বারী: জান্নাত -জাহান্নামের বিবরণের অধ্যায়: ১৮/৩৯৪। প্রসিদ্ধ তাবেঈ মুজাহিদ (রহ) বলেছেন: “তূবা” ও একটি জান্নাতের অন্যতম নাম। -অনুবাদক
সূত্র: কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে ইসলামী ফিকাহ
লেখক- মুহাম্মদ বিন ইব্রাহীম আত তুআইজীরি
বিষয়: বিবিধ
১৬৫৬ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন