মহান শহীদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস
লিখেছেন লিখেছেন সাজেদুল ইসলাম ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৯:৫৫:০৭ সকাল
আজ মহান শহীদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস।মাতৃভাষা হচ্ছে কোনো জাতির স্বদেশী ভাষা,যার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট জাতি স্বীয় ভাব আদান-প্রদান করে।আর পৃথিবীতে একমাত্র আমাদেরকেই ভাষার জন্য জীবন হয়েছিল।এই ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয় ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে।ডিসেম্বরে করাচিতে কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্মেলনে সর্ব সম্মতিক্রমে উর্দূকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।এ অধিবেশনে বাংলাকে অন্যান্য ভাষার সাথে অন্যতম ভাষা হিসেবে ব্যবহার করার দাবি উত্থাপন করা হয়।কিন্তু মুসলিমলীগের নেতারা এর বিরোধীতা করেন।১৯৪৮সালের২১মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবং ২৪মার্চ কার্জন হলে মি.জিন্নাহ দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেন “উর্দূই হবে পাকিস্থানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা”এখান থেকেই ছাত্রসমাজ প্রতিবাদ মুখর হয়ে ওঠে এবং তীব্র প্রতিবাদ জানায়।১৯৫২সালের ০৪ফেব্রুয়ারি সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ একটি সভায় ২১ফেব্রুয়ারি প্রদেশব্যাপী এক সাধারণ ধর্মঘটের আয়োজন করে।এবং ঐদিন ভাষা দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।অবস্থা অনুধাবন করতে পেরে ঢাকার জেলা ম্যাজিস্টেট ২০ফেব্রুয়ারি থেকে৩০ দিনের জন্য১৪৪ ধারা জারি করেন,মিছিল ও গণজমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা ১৪৪ধারা ভঙ্গ করে“রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই” শ্লোগান দিয়ে রাজপথে বেরিয়ে আসে পুলিশ তাদের উপর গুলিবর্ষণ করে।ফলে সালাম.বরকত,রফিক জব্বার,শফিউর সহ আরো অনেকে শহীদ হন।
১৯৯৯সালের১৭নভেম্বর প্যারিসে জাতিসংঘের শিক্ষা,বিজ্ঞান,সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবসকে ‘‘আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।বাঙালি জাতির জন্য এ এক বিরাট গৌরব।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি আজ আমরা ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযোদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
১৯৫২সালের২১ফেব্রুয়ারি যে বাংলা ৮ই ফাল্গুন রোজ বৃহস্পতিবার ছিল তা আমরা অধিকাংশেই জানি না।তাই আমরা ভাষা সৈনিকদেরকেও যথাযোগ্য সম্মানদিতে পারিনি।কাউকে জীবনের শেষ মুহুর্ত জেলের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছিল।এমনকি তিনি সেখানে শেষঃনিশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
আজ অনেক মুক্তিযোদ্ধা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।আমরা তাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারছি না।আবার অনেক চিহ্নিত রাজাকারের হাতে একুশে পদক তুলে দিচ্ছি যা আমাদের জন্য বড়ই কষ্টের ও লজ্জার।
তাই আমাদের প্রত্যেককেই ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযোদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে।
পরিশেষে যারা এই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
বিষয়: বিবিধ
১০৫৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন