নাস্তিক্যবাদ নিয়ে কিছু কথা
লিখেছেন লিখেছেন তুষার শুভ্র ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০১:২৫:১১ রাত
নাস্তিক্যবাদ। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত আলোচিত একটি বিষয়। এর আগেও অবশ্য নাস্তিক্যবাদ নামক দর্শনের অস্তিত্ব এদেশে ছিল। এই মতবাদের প্রচার ও প্রসারে ড.আহমেদ শরিফ কিংবা হুমায়ূন আজাদদের অবদান অনেক। তবে বিষয়টা সবচেয়ে বেশি আলোচনা সৃষ্টি করে ২০১৩ সালে শাহবাগ আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে। বলা হয়ে থাকে শাহবাগ আন্দোলনের সাথে জড়িত অনেক নেতাই ছিল নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসী। এদের মধ্যে ব্লগার রাজিব ওরফে থাবা বাবা, ব্লগার আরিফ, আসিফ সহ অনেকের নামই আছে।
নাস্তিক্যবাদ শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ "atheism" এ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ "atheos" থেকে যার মানে হচ্ছে "without god" বা ঈশ্বরের অস্তিত্বহীনতা। সোজা বাংলায় যে মতবাদে ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করা হয় না তাই নাস্তিক্যবাদ।
তাছাড়া wikipedia তে বলা হয়েছে "atheism is, in a broad sense, the rejection of deities (god). In a narrow sense, atheism is specifically the position that there are no deities (god)"
বর্তমান বিশ্বের ২.৩% মানুষ নিজেদের নাস্তিক বলে পরিচয় দেয়।
যে ঈশ্বরের অস্তিত্বে অবিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে নাস্তিক্যবাদ টিকে আছে এখন দেখব সেই ঈশ্বর বলতে কি বুঝায়।
ঈশ্বর মূলত একটি ধারণার নাম। পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্ম ও দর্শনে ঈশ্বর সম্পর্কে নানা রকম ধারণা থাকলেও এদের মধ্যে এক ধরণের মৌলিক সাদৃশ্য আছে। সবাই ঈশ্বরকে সৃষ্টিকর্তা হিসেবে মানে।
ধর্মগুলোতে ঈশ্বরকে বলা হয়েছে সৃষ্টিকর্তা, ত্রাণকর্তা, জন্ম-মৃত্যুর মালিক, সাহায্যকারী, আহারদাতা, নির্দেশদাতা ইত্যাদি। কোথাও ঈশ্বরের গুণাবলি বর্ণনা করে তাঁকে দয়াময়, দয়ালু ইত্যাদি বলা হয়েছে। আবার কোথাও বলা হয়েছে ঈশ্বর ভালো কাজের যেমন পুরস্কার দেন তেমনি মন্দ কাজের জন্য শাস্তিও দেন।
পৃথিবীর বিভিন্ন দর্শনেও ঈশ্বর সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা দেয়া আছে। যেমন প্রকৃতিবাদীরা প্রকৃতিকেই নিজেদের ঈশ্বর বলে মনে করে। দর্শনেও ঈশ্বরের ধারণার মধ্যে পার্থক্য আছে। কেউ বলেছেন ঈশ্বর কেবলই সৃষ্টিকর্তা, কেউ বলেছেন ঈশ্বর পৃথিবীর গতির কারণ, আবার কেউ বলেছে ঈশ্বর অচালিত চালক। ইত্যাদি ইত্যাদি। তার মানে ঈশ্বর সম্পর্কিত এইসব ধারণা যারা স্বীকার করে তারা আস্তিক আর যারা স্বীকার করে না তারা নাস্তিক।
আচ্ছা পৃথিবীতে এমন কিছু কি আছে, যার ধারণা আমাদের মনের মধ্যে আছে কিন্তু তার অস্তিত্ব অতীতে কখনো ছিল না, এখনো নেই এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না। আসলে আমাদের মনে এমন কিছুর ধারণা নেই যার কোন অস্তিত্ব নেই।
কোন লোক তার ছেলেকে বলল, 'তুমি আমার ছেলে নও, আমি তোমাকে ছেলে বলে স্বীকার করি না'। তার মানে 'ছেলে' বলে কিছু একটা আছে। এবং লোকটি তার অস্তিত্ব স্বীকার করে। কেউ যদি বলে ' ওই লোকটি আমার বাবা নয়'। তার মানে বাবার অস্তিত্ব স্বীকার করে নেয়া হয়।
একইভাবে কেউ বলল, 'আমি ঈশ্বর মানি না' তার মানে ঈশ্বর আছে কিন্তু সে মানে না। অর্থাৎ আমাদের মনে অস্তিত্বহীন কিছুর ধারণা থাকতে পারে না।
নাস্তিকরা কোন ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করতে চান না অথচ বাস্তবে তারা একাধিক ঈশ্বরের পূজারী। ব্যাপারটি হাস্যকর হলেও সত্যি। যারা কোন ঈশ্বরেই বিশ্বাস করেন না তারাই আবার একাধিক ঈশ্বরের পূজা করেন।
কোন নাস্তিককে যদি জিজ্ঞেস করা হয়-'তোমাকে কে সৃষ্টি করেছে?' সে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে হলেও একটা উত্তর দিবে। অন্তত এটা বলবে যে তার মা-বাবাই তাকে সৃষ্টি করেছে। তার মানে সে তার মা-বাবাকেই ঈশ্বর বানিয়ে নিল।
কোন নাস্তিককে যদি প্রশ্ন করা হয়-'তুমি কার কথামত চল?' সে অন্তত বলবে যে তার মনমত চলে। তার মানে সে তার মনকেই ঈশ্বর বানিয়ে নিল।
আমি একবার কট্টরপন্থী এক নাস্তিককে জিজ্ঞেস করেছিলাম-'অর্থনৈতিক জীবন কার বিধান অনুযায়ী চলবে? সে বলল- কার্ল মার্ক্সের কথা। তার মানে এখানে কার্ল মার্ক্সই তার ঈশ্বর। আবার জিজ্ঞেস করলাম- রাজনৈতিক জীবন বিধান অনুযায়ী চলা উচিৎ? সে বলল লেলিনের কথা। তার মানে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তার ঈশ্বর লেলিন। এভাবে এক ঈশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকার করতে গিয়ে তারা হাজারটা ঈশ্বর বানিয়ে নিয়েছে।
সহজেই বোঝা যাচ্ছে আমরা কোন পরাক্রমশালী একক সত্ত্বার কাছে আত্মসমর্পণ করি। আর তারা মার্ক্স কিংবা লেলিনের সামনে নিজেদের গর্বিত মস্তকখানা নত করে দেয়। কখনো নিজেদের মতো কোন মানুষ আবার কখনো প্রকৃতি কখনোবা নিজেকেই ঈশ্বর বানিয়ে নেয় এরা।
বৌদ্ধ ধর্মেও দেখা যায় ঈশ্বরের কোন স্থান নেই। কিন্তু সেখানেও তারা গৌতম বুদ্ধকে নিজেদের ঈশ্বরে পরিণত করেছে।
সুতরাং নাস্তিক্যবাদের অসারতা প্রমানে হাজার হাজার তথ্য, তত্ত্ব, উপাত্তের দরকার হয় না। সাধারণ জ্ঞান থেকে চিন্তা করলেই এর অসারতা প্রমাণিত হয়ে যায়।
বিষয়: বিবিধ
১৪৫৭ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ব্যাপারডা হুইন্যা ব্যাপক হাসতাছি !ফাকিং কাওয়ার্ড আরিফ আসিফ ও বিশাল নেতা হৈগেছে কবে?
এই ছাগলগুলা কোনদিন রাজনীতি করেনাই নেতা হইব কবে ?
এরা নিজেরে ফর্মে উঠাইয়া শাহবাগের আন্দোলন কাজে লাগাইয়া ইউরোপ আমেরিকার এসাইলামের লাইগা সারাজীবন কুইকি নাস্তিকগীরি কৈরা গেছে।
আসিপ্পার বেলায় তার প্রমাণ তো পাইছেনই ,আসিপ্পা নিজের কান্ট্রির লোকরে টেরর বানাইয়া জার্মানিতে ফয়দা লুটে ।
আপনার আলোচনা ভাল লেগেছে ,নাস্তিকরা আস্তিকদের চেয়ে অধিক ঈশ্বরে বিশ্বাসী এই ইস্যুর যুক্তিগুলা চরম হইছে ।পোস্টে ++++
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : শুধু ঈশ্বর/ঈশ্বর করে চেঁচাইলে হবে না ভাই। ঈশ্বর তো নানা কিসিমের। ইহুদীর ঈশ্বর আপনার আল্যা নন, খ্রীষ্ট ধর্মের ঈশ্বর যিশুর ট্রিপল এন্টেটি, হিন্দু ধর্মের ঈশ্বর ভগবান স্বয়ং, আরো আছেন দূর্গামাতা, লক্ষি, স্বরশ্বতি, বৌদ্ধ ধর্মে প্রভু গৌতম, আর আছে মুস্লিমের আল্যা, ..........., এ ভাবে বাটি চালান দিলে পরস্পর বিরোধী শত/শত ঈশ্বর জালে আটকাবে। তাই না??ভায়া, আপিনি তো মোহাম্মদের আল্যাবাদী। কে এই আল্যা?? যিনি ৬০০ ডানার জিবরাইল'কে পাঠিয়ে মরুভুমির শিয়ালের গর্তে ওহি নাজিল করেন।
এই বিজ্ঞানের যুগে এসব ভুত/পেত্নির গল্প বিশ্বাস করতে হবে???????
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
ভায়া, আপিনি তো মোহাম্মদের আল্যাবাদী। কে এই আল্যা?? যিনি ৬০০ ডানার জিবরাইল'কে পাঠিয়ে মরুভুমির শিয়ালের গর্তে ওহি নাজিল করেন। এই বিজ্ঞানের যুগে এসব ভুত/পেত্নির গল্প বিশ্বাস করতে হবে???????
মন্তব্য করতে লগইন করুন