বাচ্চাদের প্রতি সমাজের এই বৈষম্য দূর হওয়া প্রয়োজন....

লিখেছেন লিখেছেন দিল মোহাম্মদ মামুন ২৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১০:৫৪:১৪ রাত

একজন বিত্তবান পিতা যখন মসজিদে আসার সময় তার বাচ্চাকে নিয়ে আসেন, তখন দেখা যায় সমাজের অন্যান্য লোকেরা ঐ বাচ্চাটির সাথে নানানভাবে ভাব জমানোর চেষ্টা করে। যেমনঃ আঙ্কেল কেমন আছো, তোমার জামাটি অনেক সুন্দর, মাশ আল্লাহ তোমাকে অনেক সুন্দর লাগতেছে, দোয়া করি তুমি অনেক বড় হও, তোমার আম্মু আজ কি রান্না করেছে, নিয়মিত মসজিদে আসবা, কেউ কিছু বললে আমাকেই বলবা, আজকে আমার সাথেই বসো, তুমি অনেক ভালো ছেলে, দুষ্ট ছেলেদের সাথে মিশিওনা...ইত্যাদি। মূলত ছোট বাচ্চার সাথে কথাগুলো বলা হয় বাচ্চার বাবার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। বাচ্চার বিত্তবান বাবার সাথে একটু ভাব জমানোর জন্যই।

হয়তো আশেপাশে আরোও অনেক গুলো বাচ্চা রয়েছে, যাদের বাবা বেকার, অথবা অন্যের কাজ করে দিনাতিপাত করে, দিনমজুর, অথবা বাচ্চাটি গরিব পরিবারের, অথবা এতিম। কিন্তু এই বাচ্চা গুলোকে তাদের মমতাময়ী মা অনেক আদরযত্ন করে, নানান উৎসাহ দিয়ে, সুন্দরভাবে পরিপাটি করেই মসজিদে পাঠিয়েছেন যেন বাচ্চাটি মসজিদে গিয়ে কিছু শিখতে পারে, যেন নামায পড়ার অভ্যাসটি ছোটকাল থেকেই গড়ে উঠে। অথচ সমাজের লোকগুলো এদেরকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখে। কেউ বাচ্চা গুলোর প্রতি একটু উদারতার পরিচয় দিয়ে, নিয়মিত মসজিদে এসে নামায পড়ার প্রতি বাচ্চা গুলোকে উৎসাহ দিয়ে বাচ্চা গুলোর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়না। অথচ কেউ যদি এই বাচ্চাগুলোর সাথে একটু হাসি মুখে কথাবলে তখন তাদের ছোট্ট হৃদয় আনন্দে আপ্লুত হয়। আবার অনেক সময় মসজিদের ভিতরে এদের জায়গাও হয়না, মসজিদের বারান্দা এদের জন্য নির্ধারিত জায়গা।

কোনো বাচ্চা একটু শব্দ করলেই সাথে সাথে কতিপয় মুরব্বী এমন আচরণ করে যেন বাচ্চাগুলোকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করতে পারলেই উনাদের মনের ঝাল মিটবে! মুরব্বীদের এই ধরণের আচরণে বাচ্চাগুলো মসজিদে আসার আগ্রহটাই হারিয়ে ফেলে। অথচ প্রত্যেক কাতারে মুরব্বীদের পাশাপাশি বাচ্চাগুলোকেও যদি বসার সুযোগ করে দেওয়া হতো তাহলে তারা দুষ্টুমি করার সুযোগই পেতোনা, হুজুরের কথা গুলো মনযোগী হয়ে শুনতো! বাচ্চাগুলো একদিন বড় হয়, কিন্তু সমাজের এই মুরব্বিদের আচরণ গুলো তাদের স্মৃতিপটে অক্ষত থাকে।

প্লিজ সমাজের এই নোংরা বৈষম্য দূর করুন, আল্লাহকে ভয় করুণ। বাচ্চাদেরকে প্রিয় রাসূল(সঃ) অনেক বেশি ভালোবাসতেন, আমাদের উচিত এই বাচ্চাগুলোর প্রতি ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেওয়া, তাদের সাথে উত্তম আচরণ করা। মসজিদের প্রতি তাদেরকে আকৃষ্ট করে তোলা।

লেখকঃ দিল মোহাম্মদ মামুন

সংযুক্ত আরব-আমিরাত।

বিষয়: বিবিধ

১২৬৫ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

384283
২৪ অক্টোবর ২০১৭ রাত ১১:২৯
সন্ধাতারা লিখেছেন : Salam. Excellent analysis mashallah. Jajakallahu khair.
২৪ অক্টোবর ২০১৭ রাত ১১:৪১
316999
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : ওয়াইলাইকুম আসসালাম, প্রিয় আপু কেমন আছেন? উৎসাহ মূলক সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। জাজাকাল্লাহ
384288
২৫ অক্টোবর ২০১৭ রাত ০১:০০
সন্ধাতারা লিখেছেন : Alhamdulillah valo achi Vhai
২৫ অক্টোবর ২০১৭ দুপুর ১২:০৩
317003
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ
384294
২৫ অক্টোবর ২০১৭ রাত ০৮:১০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এই সব তথাকথিত মুরুব্বিদের মাইর দেওয়া এখন জরুরি হয়ে গেছে।
২৮ অক্টোবর ২০১৭ বিকাল ০৫:৩৩
317022
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম, ভাইয়া আপনার সাথে একমত। কিন্তু মুরুব্বীদের দিকে ঢিল মারলে উল্টা কিছু হবার প্রবল সম্ভাবনা.....তাই বাচ্চাদের ব্যাপারে মসজিদের হুজুরকে একটু বেশি উদার ও মনোযোগী হতে হবে এবং মুরুব্বিদেরকে কেবল হুজুরই বুঝিয়ে লাইনে আনতে পারেন।
ধন্যবাদ আপনাকে
384409
১০ নভেম্বর ২০১৭ রাত ০২:১৮
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : জ্বি, সচেতনতা মুলক লেখা। ভালো লাগলো
১৯ নভেম্বর ২০১৭ সন্ধ্যা ০৭:০০
317107
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম, রহিম ভাই কেমন আছেন?
ধন্যবাদ আপনাকে
২৪ নভেম্বর ২০১৭ দুপুর ০১:৩৭
317133
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : ওয়ালাইকুম সালাম ওয়ারাহামতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। ভিসা সংক্রান্ত সমস্যাও আছে।
384495
২৪ নভেম্বর ২০১৭ দুপুর ০১:৩৭
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : ওয়ালাইকুম সালাম ওয়ারাহামতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। ভিসা সংক্রান্ত সমস্যাওও আছে।
২৬ নভেম্বর ২০১৭ সন্ধ্যা ০৭:২৭
317152
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : দোয়া রইলো।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File