কৃষ্ণ করলে লীলাখেলা, মোল্লায় কইলেই পাপ (১৮+) !
লিখেছেন লিখেছেন দিল মোহাম্মদ মামুন ১৯ এপ্রিল, ২০১৫, ১১:২৪:১৫ সকাল
বাংলা নববর্ষ ১৪২২, বাংলাদেশিদের আনন্দময় একটা দিন। এই দিনে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে সবাই যার যার মত করেই প্রস্তুত হয়। এই দিনে পান্তা-ইলিস না খেলে মনে হয় যেন নতুন বছরকে যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়ে বরণ করাই হলো না!! পডন্ত বিকেলে বাসন্তী রংয়ের শাড়ী ও খোঁপাতে বেলিফুল দিয়ে নববর্ষের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ললনাদের অংশগ্রহন উল্লেখযোগ্য। মঙ্গল শোভাযাত্রা না করলেই নয়, এই শোভাযাত্রায় নানান রকমের মুখোশ, ইয়া বড় সাপ, পেঁচা, হাতি, ভূত-পেত্নী ও নানার রকমের জীব-জন্তুর মূর্তি থাকতেই হবে কারণ এই শোভাযাত্রায় সবধর্মের লোক অংশ গ্রহন করে। যেহেতু উপ-মহাদেশের পুরাতন ধর্মের মধ্যে বৌদ্ধধর্ম ও হিন্দুধর্মই উল্লেখযোগ্য, তাই ঐসব ধর্ম ও তাদের সংষ্কৃতিই আবহমান কাল থেকেই নববর্ষের শোভাযাত্রায় শোভা পাচ্ছে। আর বাংলার সেকুলার মুসলিমরা এই অনুষ্ঠানকে হৃদয়ের মাঝেই ধারন করেছে।
এই বর্ষ বরণের অনুষ্ঠানে আগত ললনাদের পোষাক দিন দিন এতই ছোট ও টাইট হচ্ছে, মনে হয় যেন শরিলের লোভনীয় অংশ গুলো প্রদর্শন করাও এই অনুষ্ঠানের একটা অংশ। আগেকার যুগে তারা বাবা-ভাইয়ের সাথে মেলায় আসলেও এখন বয়ফ্রেন্ড ও প্রেমিকের হাত ধরে না আসলেই নয়, খুব কমই পরিবারের সাথে আসে। তাই এক সেকুলার শিল্পী তার গানটা এইভাবেই গেয়েছে...
"মেলায় যায়রে...মেলায় যায়রে, বাসন্তীরং শাডি পরে ললনারা হেটে যায়। ঐ বখাটে ছেলের ভীড়ে ললনাদের রেহাই নাই...মেলাই যায়রে.."
তার মানে পহেলা বৈশাখের মেলায় ললনা-রা বখাটেদের হাত দিয়ে দলিত-মলিত হয়, এটা অনেকটা ইউনিভার্সাল ট্রুথ! যেটা ললনারা ও খুশি মনেই মেনে নিয়েছে। এই গানটার কিছু বাস্তব প্রমাণ আমরা দেখতেই পাচ্ছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ললনারা নিজেদের যোনি প্রদর্শন করে নববর্ষ উদযাপন করতেছে...
সুশিলদের কু-রুচি থেকে বাচ্চা ছেলের নুনুও রক্ষা পেলনা!
এই হলো নৈতিকতা বিবর্জিত আদর্শ ও ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থার সুফল।এরাই আগামি দিনের ঐশির ফটোকপি, এরা ঢাবির ছাত্রী, ধর্মহীন শিক্ষার এক ঝলক। ওদের মা বাবা গর্বিত কিন্তু জাতি লজ্জিত ...
২০১৪ এর শেষের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ জন ছাত্র-ছাত্রীকে একটা আবাসিক হোটেলে পর্ণ ভিডিও বানানোর সময় পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও তাদেরকে ৫০ টাকা জরিমানা করেই ছেড়ে দেওয়া হল, তাদের ছাত্রত্ব ও বাতিল হল না! ঐ একই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন পর্দানশীন ছাত্রী তাদের কাছে পর্দার উপর লিখা ২/৩টা বই রাখার অপরাধে ও গভীর রাতে হলে তাহাজ্জুদের নামায পড়ার অপরাধে ২ ছাত্রীকে ছাত্রলীগের নেতা-নেত্রীরা ইচ্ছেমত উত্তম-মধ্যম দিয়ে হল থেকে বহিষ্কার করে দিল। একদিকে লতিফ সিদ্দিকীর মত মুরতাদরা জামিন পেয়ে যায়, অন্যদিকে উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ ইসলামি চিন্তাবিদ ও হাদিসের আলোকে মানব জীবন বইয়ের সন্মানীত লেখক এ.কে.এম ইউসুফদের লাশ জেল থেকেই বের হয়!!! এই ঘটনাগুলো থেকে বাংলাদেশ সরকার ও সেকুলার মুসলিমদের অবস্থান স্পষ্ট হয়ে যায়।
এদের জন্য কোন বিবেকবান মুসলিম সহানুভূতি দেখাতে পারেকি?
যারা নারী হয়েও এইভাবে রাস্তায় চুলাচুলি করতে পারে, তারা কি কোন ভদ্রপরিবারের সন্তান হতে পারে??
বাংলার ইসলাম প্রিয় তৌহিদী জনতা ও আলেম সমাজ ব্যক্তিগতভাবে নববর্ষের এই প্রাচীনতম অনুষ্ঠান ও রীতিনীতি গুলো প্রথম থেকেই বয়কট করে আসতেছে। এইসমস্ত ধর্মপ্রাণ মানুষ ও আলেম সমাজ নিজেরা যেমনি এই অনুষ্ঠান গুলোতে যায়না তেমনি তারা তাদের পরিবার-পরিজনদের ও যেতে নিষেধ করেন। কারণ পহেলা বৈশাখের কনসেপ্টটাই ইসলামের সাথে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। এ কারণে দেখা যায়, শেষ নবী মুহাম্মদ(স) যখন আরবের মদীনাতে গেলেন তখন দুটি উৎসব বন্ধ করলেন, এর একটি নাম ছিলো মিহিরজান, অপরটি হচ্ছে বছরের পহেলা দিন উদযাপন বা নওরোজ।
এদিন উপলক্ষে গাওয়া হয় “এসো হে বৈশাখ, এসো এসো”। গানের মধ্যে বলা হয়- বৈশাখ এসে বছরের সকল অশুভ দূর করে দিবে। উল্লেখ্য বৈশাখ নামটি হিন্দুদের বিশাখা দেবতার (নক্ষত্র) নাম থেকে এসেছে । মূলত এ গানের মাধ্যমে বিশাখা দেবতার কাছে প্রার্থনা করে থাকে অগ্নি পূজক বা হিন্দুরা, তাদের সব দুঃখ-কষ্ট তুলে নিতে বিশাখার কাছে প্রার্থনা জানায়। এক্ষেত্রে মুসলমানরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা না করে বিশাখা দেবতার কাছে প্রার্থনা করা কতটুকু ধর্মসঙ্গত হবে ?
নববর্ষ উপলক্ষে যা কিছু করা হয়, সবকিছুই ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক এই জন্য কোন প্রকৃত মুসলিম নববর্ষের এই আচার-আচরন ও অনুষ্ঠানকে গ্রহন করতে পারেনা। বর্তমানে বাংলাদেশের তরুন-তরুনীরা যেইভাবেই অশ্লীলতার মধ্যে ডুবে আছে, প্রতিনিয়ত নানান রকমের যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তার জন্য আলেম সমাজ নিরব না থেকে তাদেরকে পর্দার গুরুত্ব বুঝিয়ে সঠিক পথ দেখানোকে তারা তাদের ঈমানী দায়িত্ব মনে করে। এই জন্য আলেম সমাজ নানান ওয়াজ নছিয়তের মাধ্যমে তরুন-তরুনীদের সতর্ক করে আসতেছেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, যেই নারী সমাজকে নিজের মেয়ের মত মর্যাদা দিয়ে আল্লামা আহমদ শফি তাদের কল্যানের জন্য ও সতর্ক করার জন্য তেঁতুলের একটা উদাহরণ দিয়ে ওয়াজ করলেন সাথে সাথে ঐ সেকুলার মুসলিমেরা ও সেকুলার ললনারা তাকে তুলাধুনাই করে ছাড়লেন! এমনকি মহান সংসদে বসে মুহতারাম আল্লামা আহমদ শফিকে কটুক্তি করতে এমপি-মন্ত্রীরাও একটু দ্বিধাবোধ করেনি। আলেম সমাজের নামের সাথে নানানরকমের কু-বিশেষণ লাগিয়ে তাদের হেনস্থা করা যেন সুশিলদের একটা কাজে পরিণত হয়ে গিয়েছিল।
নারী তুমি অসম্মানিত হও না যখন গাড়ির গায়ে অর্ধনগ্ন অবস্থায় তোমাকে লেপটে থাকতে বলা হয়। যখন ছেলেদের বডি স্প্রের এডে তোমার চরিএ পতিতার চেয়েও বাজে ভাবে দেখায়। যখন ,হুমায়ুন আজাদরা বলেন,গর্ভবতী নারী অনেকটা পশুর মত দেখতে। মজার ব্যাপার তুমি (নারী) এসবে ততটা লজ্জা পাও না যতটা পেয়েছো তেঁতুল উপাধিতে ।
কেন ?
ধরুন আপনি দরদভরা মন নিয়ে কারো উপকার করতে গেলেন, বিনিময়ে আপনি যাদের উপকার করতে গেলেন তারাই আপনাকে চরমভাবে অপমান করে দিল, তখন আপনি যেইরকম কষ্ট পাবেন, আলেমসমাজ ও সেইরকম কষ্ট পেয়েছিল।
যেই সমস্ত বখাটে টি.এস.সি সহ দেশের নানান জায়গায় নববর্ষ উপলক্ষে ঐ সেকুলার ললনাদের দলিত ও মলিত করেছে, তাদের কে আমি ধন্যবাদ জানাই। কারন ঐ ললনারাই কিছুদিন আগে আলেমদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিল। ঐ ললনারা দলিত ও মলিত হওয়ার উপযুক্তই ছিল। বাতাস খাওয়ার জন্য যদি কেউ জানালা কাটে, তাহলে ঐ বাতাসের সাথে কিছু ধুলাবালি ও ফ্রি খেতে হয়। যে সমস্ত ললনারা শরীলের লোভনীয় অংশ গুলো প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে জানালা বিশিষ্ট ড্রেস পরে বের হয়, তাদের পক্ষ নিয়ে সহানুভূতি দেখানো কোন ঈমানদারের কাজ নয়। তাই আজকে আলেম সমাজ ঈমানী দায়িত্ব হিসেবে নিরবতা পালন করতেছে। মহান আল্লাহ বলেন....
"আর তোমরা নিজেদের গৃহ মধ্যে অবস্থান করো এবং পূর্বের জাহেলী যুগের মতো সাজসজ্জা দেখিয়ে বেড়িও না, নামায কায়েম করো, যাকাত দাও এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করো৷" (সুরা আহযাব ৩৩)
আমার সাথে সন্মানীত পাঠকদের দ্বিমত থাকতেই পারে, তবুও বলবো, আলেম সমাজ কারোও শত্রু না, তারা যা বলতেছেন আমাদের ভালোর জন্যই বলতেছেন। আজ বাংলার সেকুলার মুসলিমরা হয়তো ভাবতেছে, কোরআন, হাদিস ও আলেমদের কাছ থেকে যত দূরে থাকা যায়, ততই আধুনিক হওয়া যায়! তাহলে আমি বলবো আপনি ১০০% ভুলের মধ্যেই ডুবে আছেন। এই দুনিয়াতে কেউ চিরস্থায়ী না, তাই আসুন আধুনিকতার হাওয়ায় গাঁ-ভাসিয়ে না দিয়ে মরণকে স্মরণ করি, কোরআন-হাদিস ও ইসলামকে বুঝার চেষ্টা করি, পর্দা মেনে চলি, আলেমদের সন্মান করি, তাহলেই আমরা দুনিয়াতে শান্তি ও পরকালে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি পাবো। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামকে বুঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুক....আমিন।
বিষয়: বিবিধ
২৪৭৫২ বার পঠিত, ২৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নারী সমাজের বেহায়াপণা সাথে উচ্ছৃংখল যুবকদের যৌন নির্যাতন এ সব ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ব্যাপার! এমন ঘটনা আশে-পাশে হরহামেশাই ঘটছে!
বিভিন্ন উৎসব-পুজা-পার্বনে যুবকদের সমাগম এই কারণেই!
মেয়েদের ভিতর শালীনতা এবং যুবকদের মধ্যে ধর্মীয় নৈতিকতার বিকাশ না ঘটলে এ সব চলতেই থাকবে!!
সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
২নং ছবিটি সরিয়ে নিলেই ভালো হয়, কারণ তাতে সহানুভুতির বদলে য়ৌনতা বাড়ে। ধন্যবাদ।
আর বৈশাখ যে নগ্নতায় ভরা হোলি খেলার অন্য রূপ তা বুঝতে সচেতন মুসলিম সমাজের আর বাকি নেই।
আর বৈশাখ যে নগ্নতায় ভরা হোলি খেলার অন্য রূপ তা বুঝতে সচেতন মুসলিম সমাজের আর বাকি নেই।
আর বৈশাখ যে নগ্নতায় ভরা হোলি খেলার অন্য রূপ তা বুঝতে সচেতন মুসলিম সমাজের আর বাকি নেই
মন্তব্য করতে লগইন করুন