জীবনের প্রথম এয়ারলাইন্সে হাস্যকর কিছু অভিজ্ঞতা...
লিখেছেন লিখেছেন দিল মোহাম্মদ মামুন ৩১ মার্চ, ২০১৫, ১১:৩২:৩৪ সকাল
অস্রুসিক্ত নয়নে মা-বাবা, ভাই-বোন, ভাগিনা-ভাগ্নী সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গ্রামের বাড়ি থেকে স্কুলজীবনের বন্ধু শরীফের সাথে সন্ধায় চট্টগ্রামের হালিশহরে অবস্থিত শরীফদের বাসায় এসে পোঁছলাম। শরীফের আম্মুর আন্তরিকতার কোন ঘাটতি ছিলনা, নিজের ছেলের মতই আমার সাথে অনেক কথাই বললেন, অনেক উপদেশ দিলেন। রাত ১১টার দিকে ঘুমাতে গেলাম, কারণ সকাল ৯টায় ফ্লাইট তাই বাসা থেকে ৬টায় বের হতে হবে। কিন্তু নানান নতুন চিন্তায় সহজে ঘুম আসলো না, পরিবারের সবার অস্রুসিক্ত নয়ন বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগলো। এইভাবে এলোমেলো চিন্তা করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পডলাম ঠিক মনে নাই। ভোরে ফজরের আজানের সাথে সাথে চোখের ঘুম চলে গেল। মসজিদ থেকে নামাজ পডে এসে টেবিলে নাস্তার সারি দেখে আমি অবাক হলাম! এই নাস্তা গুলো প্রস্তুত করতে আন্টিকে মিনিমাম ২ঘন্টা আগেই ঘুম থেকে উঠতে হয়েছে। তাহলে কি উনি রাতে ঘুমাননি! আমাদের জন্য কত কষ্টই করলেন!! নাস্তা সেরে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। যথা সময়ে এয়ারপোর্টে পোঁছে এবার বন্ধু শরীফের কাছ থেকেও বিদায় নিতে হলো, খুব কষ্ট লাগলো, চোখের পানি ধরে রাখতে পারলামনা।
ইমিগ্রেশনে প্রবেশের সাথে সাথে একটা ফরম পূরন করতে দেওয়া হলো, আমি ফরম টা একবার দেখেই পূরন করা প্রায় শেষ করে পেললাম। কিন্তু পুলিশ এসে আমার কাছ থেকে ফরমটা নিয়ে নিল, আমি নাকি সঠিকভাবে পূরন করতে পারবোনা! পুলিশ আমার উপকার করেই ছাড়বে! আহ, পুলিশের কি দেশপ্রেম! কি দরদ!! আমার পূরন করা ফরমটার শেষে একটা লাইন লিখলো মাত্র! আর হাতের লিখা নার্সারির বাচ্ছাদের আরোও সুন্দর হয়! পুলিশ মহোদয় একটু চেক করলো মাত্র ! সাথে সাথে ফিস দাবি করলো ৩০০ টাকা! আমি হঠাৎ বেকুপ বনে গেলাম, টাকা বের করতে একটু দেরি হচ্ছে এই জন্য যে কথাগুলো শুনলাম তা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। পকেটে ২৩৭ টাকা ছিল তা পুরাই দিয়ে দিলাম, কারন হাতে সময় খুব কম, ব্যাগেজ জমা দেওয়ার জন্য লাইনে দাড়াতে হবে, তার উপর আমি সম্পুর্ণ নতুন। কিন্তু ভদ্র পুলিশ পুরা ৩০০ টাকা না দেওয়া পর্যন্ত আমাকে ছাড়তে নারাজ, এবার সে আমার মোবাইল নিয়ে নিতে চায়!! শেষে একান্ত বাধ্য হয়েই এক আংকেলের নাম বললাম, নাম শুনার সাথে সাথেই ছেডে দিল(আমি কারো পরিচয় দিয়ে চলতে পছন্দ করিনা তাই প্রথমে বলিনি)।
১ঘন্টা ইমিগ্রেশনে অপেক্ষা করার পর নির্দিষ্ট সময়ে ওমান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি আসলো, সবাইকে ফ্লাইটে উঠার জন্য বলা হলো। জানালার পার্শ্বে আমার সিটটা খুজে নিয়ে সিটবেল্ট লাগিয়ে বসে পড়লাম। পাইলট শুভেচ্ছা জানিয়ে নির্দেশনা মুলক কিছু কথা বললেন। ফ্লাইট ছেড়ে দেওয়ার সাথে সাথে আমার চোখের পানি আর থামাতে পারলাম না, বাংলাদেশের আকাশ সীমা পার হওয়ার সাথে সাথে কষ্ট যেন আরোও বেড়ে গেল। ফ্লাইটের প্রতিটা যাত্রীকে হেডফোন দেওয়া হলো, সবাই হেডফোন লাগালাম, তারপর বড় মনিটরে জাহিদ হাসানের "মেইড় ইন বাংলাদেশ" নামক নাটকটি প্রদর্শন করা হলো, খুব ভাল লাগলো।
কিছুক্ষন পর পর এয়ারহোস্ট্রেসরা নানান রকম নাস্তা নিয়ে আসতে লাগলো। নাস্তা শেষ করার পর ৩/৪ রকমের পানীয় নিয়ে অফার করতে লাগলো। আমার পাশের সিটে বসা বন্ধু ইব্রাহিম(ছাত্রলীগ) "বিয়ার" নিল। তার গ্লাসের বিয়ারের ঘ্রান ও ফোম দেখে কোন প্রকার এলকোহল আছে কিনা জিজ্ঞেস করে আমিও বিয়ার(এলকোহল ০%) নিলাম। কোন প্রকার মাদকের সাথে আমার পরিচয় ছিলনা বলে মুখে দেওয়ার সাথে সাথেই বিশ্রী ধরনের একটা টেস্ট অনুভব করলাম, একটুও আর খেতে ইচ্ছে করলো না। অথচ ইব্রাহীম খুব মজা করে তার গ্লাসের সবটুকু পান করেই আমার অবস্থা দেখে দাঁত কেলিয়ে হাসতে লাগলো! বিষয় টা এমন হলো যে ফ্লাইটের জানালা খুলে বাহিরে পেলতে ও পারতেছিনা, আবার পান করতেও পারতেছিনা! লজ্জায় এয়ারহোস্ট্রেসদের ও কিছু বলতে পারতেছিনা, আবার ইব্রাহীমের দাঁত কেলানী ও কটুক্তি গুলোও হজম করতে খুব কষ্ট হচ্ছিল! অনেক অনুরোধের পর আমার অসহায় অবস্থা দেখে ইব্রাহীম গ্লাসের বাকিটুকু পান করে আমাকে মুক্তি দিল! যাক বাবা এই যাত্রায় বাঁচা গেল।
মনিটরে জাহেদ হাছানের নাটক টি শেষ হওয়ার পর সবাই নিজ নিজ সিটের সাথে সংযুক্ত ছোট মনিটরে যার যা মন চায় তা দেখতে লাগলো ও বিভিন্ন চ্যানেল থেকে গান শুনতে লাগলো। এয়ারহোস্ট্রেসরা তাদের সেবা দিয়েই যাচ্ছে, সবার দেখাশুনা করতেছে। কিন্তু আমি আবার নতুন সমস্যায় পড়লাম! ২ ঘন্টা আগে থেকেই প্রস্রাবের বেগ কন্ট্রোল করে আসতেছি, কিন্তু সবকিছুর তো একটা সীমা আছে! বাথরুমে গিয়ে কাজ শেষ করলাম, হাতে লিকুইড লাগিয়ে বেসিনে পানির টেপকে অনেক চেস্টা করেও ওপেন করতে পারলাম না। মহা জামেলার মধ্যে পড়লাম। সকল প্রচেষ্টা চালিয়ে ও একটুখানি পানির ব্যবস্থা করতে পারলাম না, এভাবে অনেক সময় চলে গেল, আমার হতাশা ও বেড়ে গেল। অবশেষে টয়লেট টিস্যু দিয়ে হাত মুছে বেরিয়ে আসার কথা চিন্তা করলাম, কিন্তু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বেসিনটাকে এভাবে নোংরা অবস্থায় পেলে আসতে আমার বিবেকে বাধা দিল! মনে মনে আল্লাহকে ডাকতে লাগলাম, হে আল্লাহ আমার মান-সন্মান রক্ষা করো! হাতে টিস্যু নিয়ে বেসিনে পানির টেপের নিচের অংশ পরিষ্কার করার জন্য হাত নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই টেপ থেকে পানি পড়া শুরু হলো!! আমি অবাক হলাম! ভাল করে হাত ধুয়ে নিলাম, কিন্তু এবার কোনভাবেই পানি পড়া বন্ধ হচ্ছেনা! আবার নতুন চিন্তায় পড়লাম! হঠাৎ দেখলাম, আমার হাতকে পানির টেপের নিচে থেকে সরিয়ে নেওয়ার সাথে সাথেই পানি পড়া বন্ধ হয়ে গেল!! বিষয়টা বুঝতে পেরে মনে মনে বললাম, আজকের দিনে কেউ যদি বোকামির জন্য প্রতিযোগিতা দেয়, তাহলে মনে হয় আমিই চ্যাম্পিয়ন হবো ! আবার নিজের মনকে এই বলে সান্তনা দিলাম যে, আমিতো জীবনে এই প্রথম অটোমেটিক সেন্সর টাইপের পানির টেপ ব্যবহার করতেছি!! নতুন কিছু শিখলাম বলে নিজের কাছে ভালও লাগলো।
মেঘের সাথে ফ্লাইটের যখন সংঘর্ষ হলো, তখন ফ্লাইল খুব কেঁপে উঠল, ভয় পেয়ে গেলাম, মনে মনে আল্লাহ কে ড়াকলাম। ফ্লাইট যখন মেঘের উপরে উঠে গেল, তখন নিচের দৃশ্য দেখে অভিভূত হলাম, মনে হয় দৃশ্য গুলো এখনো চোখের পর্দায় ভাসতেছে, তখন ফ্লাইট ইন্ডিয়ার আকাশ সীমায়। ফ্লাইটের জানালা দিয়ে নিচের মনোরম দৃশ্য গুলো দেখতে লাগলাম, আর ভাবতে লাগলাম, আল্লাহর সৃষ্টি যদি এত সুন্দর হয়, না জানি আমার মহান আল্লাহ কত সুন্দর! দেখতে দেখতে ফ্লাইট আরব সাগরের উপর আসলো, সাগরে চলমান জাহাজ গুলো নিরব সাগরের জলরাশির বুক চিরে ছুটে চলার অপূর্ব সৌন্দর্য কখনো ভুলবার মত না। আল্লাহতায়ালার অপূর্ব সৃষ্টি শুধু দেখেই চললাম।
দেখতে দেখতে ফ্লাইট মাস্কেট এয়ারপোর্টে অবতারনের ঘোষনা শুনলাম, সবাইকে সিটবেল্ট লাগাতে বললো, কিছুক্ষনের মধ্যেই মাস্কেট এয়ারপোর্টে ফ্লাইট অবতারণ করলো। আবুধাবির সকল যাত্রীকে খাবার পরিবেশন করা হলো। দীর্ঘ ৮ঘন্টা অপেক্ষা করার পর রাত ৯ টায় আবুধাবির সকল যাত্রীকে ওমান এয়ারলাইন্সের ছোট একটা ফ্লাইটে উঠানো হলো। এবার ফ্লাইটের ৮০% যাত্রী ছিল আরবি, যদিও আগের ফ্লাইটের সবাই বাংলাদেশি ছিল।
আগের মত এবার ও আমার সিট ছিল জানালার পাশে। আরব-আমিরাতের আকাশ সীমায় ফ্লাইট প্রবেশ করার পর যখন নিচের দিকে তাকালাম, মনে হলো, পুরা আরব-আমিরাত যেন আলোকসজ্জায় সাজানো একটা বিয়ে বাড়ি! এই দৃশ্য দেখে সত্যিই অভিভূত হলাম, উন্নত দেশ বুঝি এমনিই হয়!!
বিষয়: বিবিধ
৩৩৮৮ বার পঠিত, ৩৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভাল লাগল ধন্যবাদ ভাইয়া ।
দোয়া করি শান্তিতে কাটুক আপনার প্রবাস জীবন।
অ.ট. যদি কিছু মনে না করেন,“বিষয়টা বুঝতে পেরে নিজের বোকামির জন্য নিজ পা দিয়ে নিজের পাছায় একটা লাথি মারতে ইচ্ছে করলো!” একটু অড টাইপ লাগছে, মানে ’পাছায় লাথি’ টা বাদ দিয়ে অন্যভাবে লিখলে ভালো লাগতো। ধন্যবাদ।
জি উন্নত দেশ এমনই হয়য়!!!!! আমরা অনুন্নত, তবুও বেশ আছি! আমার কেন জানি লাওক সজ্জা লাল নীল রঙ্গীন জাক জমক পূর্ণ পতিবেশের চাইতে গ্রাম্য শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ অনেক ভাল লাগে।
বোকামি করে বোকামীর অপমান থেকে বাঁচার উপায় হল কারো দিকে না তাকানো, এমন ভাব করা যে, আমি কিছুই দেখি নাই! যেমন এলাকায় রাস্তার পাশে কেউ হাগু করতে বসলে সে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকত, শরম উপরে পাঠিয়ে, আর তা দেখে অন্যেরা লজ্জায় মরে যেতো!
হুম, আপনার প্রথম অভিজ্ঞতা ভালই লেগেছে।
বোর্ডং পাসের পর দাড়াতে হল ইমিগ্রেশনের লাইনে। আলম মনে মনে ভাবছিল, এয়ার পোর্টে নাকি ঘুষ দিতে হয় কিন্তু তারতো কোন আলামত দেখতে পাচ্ছেনা। ভাবনায় ছেদ পরল যখন আলমের পালা এল তখন।
অফিসার ভদ্রলোক পাসপোর্ট দেখে জিজ্ঞেস করলেন, 'আপনি যেহেতু এ্যাকাউন্টেন্টের ভিসায় যাচ্ছেন সেহেতু ওখানেতো আপনাকে গাড়ি দিবে তা ড্রাইভিং জানেন?'
- জানি।
- দেশের লাইসেন্স নিয়েছেন?
- নিয়েছি।
- নকল লাইসেন্স হলে দেখানর দরকার নেই, আসল হলে দেখান।
- আসল, নকল বুঝিনা, ট্রাভেলস ওয়ালারা আমাকে এই লাইসেন্সটা দিয়ে বলেছে এটা শুধু ওদেশে গিয়ে স্থানীয় লাইসেন্সর জন্য আবেদন করার সময় লাগবে। ওখানে আমাকে ইন্টার্ভিউ দিয়েই লাইসেন্স বের করতে হবে। দেখেন আসল না নকল?
- আরে এটাতো দেখছি নকল লাইসেন্স। আপনিতো আজ যেতে পারবেন না।
- ঠিক আছে পাসপোর্ট দিয়ে দিন, আমি বাসায় চলে যাই।
- বল্লেই হলনাকি আপনি যে নকল লাইসেন্স করেছেন সেজন্য জরিমানা না দিয়ে কোথায় যাবেন?
- অন্যায় কিছু করে থাকলে ট্রাভেলস ওয়ালারা করেছে। আমি না। তাছাড়া জরিমানা দেয়ারমত আমার কাছে কোন টাকা পয়সাও নাই।
- আপনার কাছে টাকা চেয়েছে কে? সৌদিআরব যাচ্ছেন, সাথে রিয়াল আছে না?
- আছে মাত্র ৫০ রিয়াল।
- বেশী নাই?
- না।
- দেন, ৫০ রিয়ালই দেন, আমি সমাধান করে দিচ্ছি, নাহলে আপনার অনেক ভোগান্তি হবে। আপনাকে দেখতে ভালো লোকই মনে হচ্ছে, তাই নিজের দায়িত্ব মনেকরে আপনার এতটুকু উপকার করছি। আপনি আবার ভাববেন না যে আমাকে ঘুষ দিয়েছেন। ঘুষ খেলেতো আর ৫০ রিয়াল নিতাম না, এটা নিলাম বসদের মুখ বন্ধ করার জন্য!
- ৫০ রিয়ালই দিয়ে দিলাম, আর ভদ্রলোক পাসপোর্টে সিল দিয়ে বল্লেন সোজা প্যাসেঞ্জার লাউঞ্জে চলে যানা! কারও সাথে কোন কথা বলবেন না, পরে আপনার সমস্যা হতে পারে।
- ঘুষ খাওয়ার অভিনব পদ্ধতি দেখে হাসব, না কাদব, ভেবে পাচ্ছিলাম না। হারাম জেনেও মুসলমানরা যে কিভাবে ঘুষ খায়, কে জানে?
সূরা বাক্বারার ১৮৮নং আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ আর তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের সম্পদ, অবৈধ পদ্ধতিতে খেয়ো না এবং শাসকদের সামনেও এগুলোকে এমন কোন উদ্দেশ্যে পেশ করো না যার ফলে ইচ্ছাকৃতভাবে তোমরা অন্যের সম্পদের কিছু অংশ খাওয়ার সুযোগ পেয়ে যাও৷
তাফহীমূল কুরআনে এ আয়াতের তাফসিরে বলাহয়েছেঃ 'এই আয়াতটির অর্থ হচ্ছে, শাসকদেরকে উৎকোচ দিয়ে অবৈধভাবে লাভবান হবার চেষ্টা করো না। এর দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে, তোমরা নিজেরাই যখন জানো এগুলো অন্যের সম্পদ তখন শুধুমাত্র তার কাছে তার সম্পদের মালিকানার কোন প্রমাণ না থাকার কারণে অথবা একটু এদিক সেদিক করে কোন প্রকারে প্যাঁচে ফেল তার সম্পদ তোমরা গ্রাস করতে পারো বলে তার মামলা আদালতে নিয়ে যেয়ো না। মামলার ধারা বিবরণী শোনার পর হয়তো তারই ভিত্তিতে আদালত তোমাকে ঐ সম্পদ দান করতে পারে। কিন্তু বিচারকের এ ধরনের ফায়সালা হবে আসলে সাজানো মামলার নকল দলিলপত্র দ্বারা প্রতারিত হবার ফলশ্রুতি। তাই আদালত থেকে ঐ সম্পদ বা সম্পত্তির বৈধ মালিকানা অধিকার লাভ করার পরও প্রকৃতপক্ষে তুমি তার বৈধ মালিক হতে পারবে না। আল্লাহর কাছে তা তোমার জন্য হারামই থাকবে। হাদীসে বিবৃত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
''আমি তো একজন মানুষ। হতে পারে, তোমরা একটি মামলা আমার কাছে আনলে। এ ক্ষেত্রে দেখা গেলো তোমাদের একপক্ষ অন্য পক্ষের তুলনায় বেশী বাকপটু এবং তাদের যুক্তি-আলোচনা শুনে আমি তাদের পক্ষে রায় দিতে পারি। কিন্তু জেনে রাখো, তোমার ভাইয়ের অধিকারভুক্ত কোন জিনিস যদি তুমি এভাবে আমার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে লাভ করো, তাহলে, আসলে তুমি দোজখের একটি টুকরা লাভ করলে।'')
ইমিগ্রান্ট অফিসারের বাকপটুতার কাছে আলম কিছুটা হলেও যে বোকা বনে গিয়েছিল, তা ঐ ইমিগ্রান্ট অফিসার প্রমাণ করে দিল। এতদিন আলমের ভিতর যে একটা চালাক চতুর ভাব ছিল তা হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।
অপেক্ষার পালা শেষে বিমানে আরহনের ডাক পরল। তরিঘড়ি সকলেই উঠে দাড়াল। লাইন দিতে গিয়ে বাংগালীদের সেই চিরচেনা রূপ। বিমানে আরহন করতে গিয়েও, বাসে, ট্রেনে, লঞ্চে ওঠার মত একই রকম ঠেলা ঠেলি শুরু হয়ে গেল! আলমইবা বাদ যাব কেন? তার শরীরেওতো বাংগালীর গরম রক্ত! সকলেই জানে যে বোর্ডিংপাস যখন পেয়েছে তখন যার যার সিট তার তার জন্য রিজার্ভ হয়েগেছে, কিন্তু মন মানছেনা, তাই এই ঠেলা ঠেলি। মনে হচ্ছিল, বিকেল বেলা মিরপুর যাওয়ার জন্য ফার্মগেট থেকে ডবল ডেকারে ওঠার হুরহুরি! শেষ পর্যন্ত নিজের সিটে গিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলে বসে পরল।
রাত তিনটা থেকে প্রেশানী, বর্ডিং এর জন্য লম্বা লাইন, ইমিগ্রেশানে বোকামী, প্যাসেঞ্জার লাউঞ্জের ধাক্কা ধাক্কি, ঠেলা ঠেলি, শেষে যখন আলম বিমানের সিটে গিয়ে বসল ততক্ষনে সিট বেল্টের সাইন চালু হয়ে গেছে। কেবিন ক্রুরা প্রয়োজনীয় সেইফটি ইনস্ট্রাকশান দিয়ে বিমান উড্ডয়নের ঘোষনা দিলেন।
মধ্যপ্রাচ্যের বিমান সংস্থাগুলো যাত্রার শুরুতে ভ্রমণের দুয়াটি পাঠ করে। গালফ এয়ারের ফ্লাইটেও তা পাঠ করে শুনানো হল। কোন যাত্রী তা সাথে সাথে পাঠ করেছে কিনা বা মনযোগ দিয়ে শুনেছে কিনা তা আলম জানেনা তবে সে তাদের সাথে সাথেঃ 'আল্লাহু আকবার! আল্লাহু আকবার! আল্লাহু আকবার! বলে নিম্ন লিখিত দুয়াটি পাঠ করেছিলঃ
অথঃ পাক পবিত্র সেই মহান সত্তা যিনি আমাদের জন্য উহাকে বশীভূত করে দিয়েছেন, যদিও আমরা উহাকে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না, আর আমরা অবশ্যই প্রত্যাবর্তন করব আমাদের প্রতিপালকের নিকট।' হে আল্লাহ! আমাদের এই সফরে আমরা তোমার নিকট প্রার্থনা জানাই পূণ্য আর তাকওয়ার জন্য, এবং আমরা এমন আমলের সামর্থ তোমার কাছে চাই, যা তুমি পছন্দ করো! হে আল্লাহ! আমাদের জন্য এই সফরকে সহজসাধ্য করে দাও এবং উহার দূরত্বকে আমাদের জন্য হ্রাস করে দাও। হে আল্লাহ! তুমিই এই সফরে আমাদের সাথী, আর (আমাদের গৃহে রেখে আসা পরিবার পরিজনের তুমি (খলিফা) রক্ষণাবেক্ষনকারী। হে আল্লাহ! আমরা তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি, সফরের ক্লেশ হতে এবং অবাঞ্চিত কষ্টদায়ক দৃশ্য দর্শণ হতে এবং সফর হতে প্রত্যাবর্তনকালে সম্পদ ও পরিজনের ক্ষয়ক্ষতির অনিষ্টকর দৃশ্য দর্শন হতে।
বিমানটা ধীর গতিতে কিছুক্ষণ রানওয়েতে চলার পর হঠাৎ শাঁ...... করে এক ঝাঁপটায় আকাশে ডানা মেল্ল। উড্ডয়নের সময় আলমের মনেহচ্ছিল পেটের ভিতরের নারিভুড়ি বলতে কিছু নাই। আকাশে বিমানটা স্থির হলেই কেবল সবকিছু পূর্ববৎ হল।
রাত তিনটা থেকে সকাল আটটা পর্যন্তকার দীর্ঘ্য সময়ের সকল প্রেশানীর অবসান হল বটে, তবে আলম প্রচন্ড পিপাষা অনুভব করছিল। মনে মনে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি খুজছিল।
জুনের গরমের মধ্যেও বিমানের এসির ঠান্ডায় কেমন যেন শরীরটা শুষ্ক হয়ে আসছিল। ইতি মধ্যে কেবিন ক্রুগণ হেডফোন কম্বল দিয়ে গেছেন। টিভির পর্দায় হিন্দি ফ্লিমের ঝাকা নাকা নাচ শুরু হয়ে গেছে। আকাশে ডানা মেলে চলা এই ফ্লাইটটা, শেষ গন্তব্যে পৌছুতে পারবে কিনা সেই ভাবান্তর কারও আছে বলে আলমের মনে হচ্ছিল না। তৃষ্ণার্ত চাতক পাখি যেমন পানি পেলে এক ঢোকে সব গিলে ফেলে, হিন্দি ফ্লিম চালু হওয়ায় অধিকাংশ বাঙালী যাত্রীর মধ্যে সেই একই ভাব লক্ষ করা গেল। মনেহচ্ছিল কত জনম যেন হিন্দি ফিল্ম দেখেনা, তাই এই জীবন গেলেও এই ফ্রী সুযোগ কেউ হাতছাড়া করতে রাজিনা! আর একটা জিনিস আলমের মাথায় ঢুকলনা, গালফ কর্তৃপক্ষ একদিকে দুয়া পড়ে রওয়ানা হল, আবার উড্ডয়নের সাথে সাথেই অনৈশ্লামিক হিন্দি ফিল্ম চালু করে দিল! মনে হচ্ছিল দুয়া পড়ার কারনে শয়তান যে নাখোশ হয়েছে, হিন্দি ফিল্ম চালিয়ে তার কাফ্ফালা দিচ্ছে। শুধুমাত্র সাউদিয়ার ফ্লাইটেই আলম এধরনের স্ববিরোধিতা দেখিনি, নাহলে এমিরেটস, ইত্তেহাদ, মিডলিস্ট, ফ্লাই দুবাই, এয়ার এয়ারাবিয়া, কুয়েত এয়ার ওয়েজ সব গুলোরই একই অবস্থা!
তৃষ্ণায় যখন আলমের বুক ফেটে যাচ্ছিল, ঠিক সেই মুহুর্তেই একজন সেতাঙ্গিনী কেবিন ক্রু সাধারণ চুয়িঙ্গামের প্যাকেটের চেয়ে বড় আকৃতির একটা করে ঠান্ডা প্যাকেট সবার মাঝে বিতরন করছিল, যার একটা আলমও পেয়েছে। ঠান্ডা প্যাকেটটা খুলতেই সুন্দর একটা ঘ্রাণে এল, ডানবামে না তাকিয়ে চুইঙ্গাম ভেবে বিসমিল্লাহ বলে আলম মুখে পুড়ে দিল। চিবুনি দিতেই কেমন যেন ধ্যাতরা ত্যানার মত লাগল! এত চিবয় কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা! না পাচ্ছিল কোন মজা আর না পারছিল চিড়তে! এমতাবস্থায় আলম পার্শের লোকজন কি করে তার দিকে লক্ষ করল। হায় আল্লাহ! সবাই দেখি প্যাকেট খুলে হাত মুখ রিফ্রেস করছে। আলোম তো লজ্জায় শেষ। সাথে সাথে চুইঙ্গাম রূপী টিস্যূটা মুখ থেকে বের করে প্যাকেটের গায়ে পড়ে দেখল, রিফ্রেশ টিস্যূ! ভাগ্যিস জানালার কাছে সিট ছিল আর বাহিরের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে কাজটা করছিল বলে কেউ খেয়াল করেনি!
আলম এ যাত্রা বেচে গেল, তারপরে লাঞ্চ আসলে আর আগের মত বোকামী করেনি। বরং আগে দেখে নিয়েছে যে সহযাত্রীরা কে কিভাবে প্যাকেট খুলে, কিভাবে খায়? এবার বুদ্ধি খাটিয়ে শুধু তাদের অনুসরণ করে করে সব কাজ আঞ্জাম দিচ্ছিল আর ভাবছিল, লোকগুলো কেমন বোকার বোকা, সেযে তাদের অনুসরণ করে নিজেকে স্মার্ট হিসেবে শো করছে কেউ কিন্তু বুঝতেও পারছেনা!
পার্শ্বের ভদ্রলোক বল্লেন, 'ভাই চুয়িঙ্গাম মনে করে তখন টিস্যু চিবিয়েছেন এবার কিন্তু লবন মনে করে ভাতের ভিতরে চিনি ঢেলে দিয়েছেন! মনেহয় ভদ্রলোক আলমের হাবভাব বুঝতে পেরে প্রথম সিগনাল দিলেন।
আলম বলল, ‘ভাই তখন আসলে খেয়াল করিনি তবে এবার জেনে বুঝেই চিনি নিয়েছি কারন চিকেন মাসালাটা একটু বেশিই ঝাল হেয়ছে কিনা তাই”। ভদ্রলোক বিরক্তির ভাব ফুটিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, 'আপনি কোন এলাকার মানুষ ভাই? চিকেনটা এমনিতেই মিষ্টি হয়েছে বলে আমরা যেখানে মরিচ খুজছি আর আপনার কাছে কিনা ঝাল লাগছে বলে চিনি নিয়ে আরও মিষ্টি করছেন”! তাইতো, আমি আসলে আগে টেষ্ট করিনি তাই আমার মনে হচ্ছিল ঝাল হওয়ার সম্ভাবনা আছে!
- বুঝলেনতো বুদ্ধিমানরা সবসময় অনুমান করেই কাজ করে। দেখেন না আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবিরা কেমন বুদ্ধি বিক্রি করে খায়। তাদের মতামতকি কোন সময় সাধারন মানুষের সাথে মিলে? তারপরেও তারা দেশে সম্মানের পাত্র! আপনিওকি আমাকে আপনার সাথে অন্য দশজন সাধারন মানুষের সাথে এক পাল্লায় মাপেন নাকি? তরকারী চেখে ঝাল না মিষ্টি তা সবাই বলতে পারে কিন্তু না চেখে বলতে পারাটাই বুদ্ধিমানের পরিচয়।
- এতক্ষনে আপনার বুদ্ধির দৌড় টের পেয়েছি, তা আপনি টেস্ট করার আগেই দেখছি আপনার খাবার অর্ধেক শেষ হয়ে গেছে, তা খাবার গুলো বুঝি, বিনা টেষ্টেই গলধ করন করেছেন?
আলম আর আগে বাড়াটা নিরাপদ মনে করল না। ভদ্রলোক মনেহয় জামায়াত শিবিরের লোক! জামায়ত শিবিরের লোকদের সাথে তর্কে পারা যায়না! ওদের কাছে যুক্তির অভাব নাই। আপনি যতবড় পন্ডিতই হোননা কেন, ওদের যুক্তির কাছে আপনি ফেল। অবশ্য এ ক্ষেত্রে ভুলটাতো আলমেরই, কিন্তু নিজের ভুল স্বীকার করাতো আর মুখের কথা না। তাছাড়া আলম সাহেবরা স্বাধীন দেশের লোক তাই একজনের কথার গুরুত্বতো আর একজনের কথার চেয়ে কমনা। তাহলে আলম ভুল স্বীকার করবে কেন? আলমরা ভুল করুক আর শুদ্ধ করুক তাদের কাছে সবই শুদ্ধ!
লবনের পরিবর্তে চিনি মিশেয়ে হলেও শেষ পর্যন্ত আলম খাবারের পর্বটা সারল। কিন্তু বিমানে বসে সব কাজ যে অন্যের দেখা দেখি করা যায়না তা আলম টের পেল টয়লেটে গিয়ে। টয়লেটের ভিতরে একজন মানুষ যে সোজ হয়ে দাড়াবে তার জো নাই, তারপরে বিমানের ঝাকুনিতো আছেই। সেভেন স্টার হোটেলের বিশাল টয়লেটে যত প্রকার ফ্যাসেলিটিস থাকে তা সবই আছে শুধু প্রসস্থতার অভাবে নড়াচড়া করতে সমস্যা হয়, এই আরকি যা।
বিমান উড্ডয়নের পূর্বে যেরকম সেফটি ইনেস্ট্রাকশান দেয়, সেরকম যদি টয়লেট ব্যবহারের ইনেস্ট্রাকশান দিত তাহলেকি আর এই সমস্যায় পরতে হত? কেন যে কর্তৃপক্ষ বুঝেনা যে ঠিকমত টয়লেট ব্যবহার করাও জীবন মরন সমস্যার চেয়ে কোন অংসে কম কিছু না। তাছাড়া বিমান যে দূর্ঘটনায় পড়বে তারতো কোন গ্যারান্টি নাই কিন্তু ৪/৫ শত যাত্রী যে টয়লেট ব্যাবহার করবে তাতো নিশ্চিৎ। তাহলে নিশ্চিৎ বিষয়টাকে বাদ দিয়ে ওনারা কেন যে অনিশ্চিৎ বিষয়টার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে কে জানে?
অনেক ভেবে চিন্তে কোন কুলকিনারা করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত আলম টয়লেট থেকে বের হয়ে আসল, কিন্তু কিছুক্ষন পর অবস্থা এমন দাড়াল যে টয়লেটে না গেলে প্রাকৃতিক কৃয়া বিমানের সিটের উপরেই হয়ে যাওয়ার উপক্রম হল। উপায়ান্ত না দেখে শেষ পর্যন্ত যা হবার হবে ভেবে, আল্লাহর নাম নিয়ে আবার টয়লেটে চলে গেল।
প্রথমবার ঢুকে অবজার্ভ করে এসেছিল বলে রক্ষে, নাহলে কৃয়া কর্ম করার জন্য প্যানে বসার আগেই যে কেল্লা ফতেহ হয়ে যেত তাতে সন্দেহ ছিলনা।
যাক বাবা এপর্বেও আলম বেচে গেল। প্রাকৃতিক কর্মের প্রয়োজনীয়তা যখন উপলব্ধি হয় তখন নাকি মানুষের বাঘের ভয়ও উবে যায়। আর সেই মানুষই কিনা দুনিয়ায় দম্ভ ভরে চলে! এত দূর্বল প্রকৃতির সৃষ্টি হয়েও নষ্ট বামেরা শ্রষ্ঠাকে অস্বিকার পর্যন্ত করে!
প্রাকৃতিক কর্ম সেরে ওজু করে এসে সিটে বসার পর আলম কিছুটা আরাম বোধ করছিল। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতায় মাথাটা নত হয়ে আসছিল, এই ভেবে যে পেটের ভিতরে সামান্য নিম্ন চাপেই যে অবস্থা হয়েছিল যদি সেরকম নিম্ন চাপ এই বিশাল বায়ু মন্ডলে হয় তাহলে আলমদের কি হবে তাই ভেবে।
জানালা দিয়ে বাহিরে তাকাতেই উপরের দিকে শুধু নীল আর নীল, আর নিচের দিকেও নীল আর নীল, তবে ভূপৃষ্ঠে বসে যেরকম নীল আকাশে সাদা মেঘ ভেসে বেড়াতে দেখা যায়, বিমানে বসে দেখা যায় তার উল্টাটা, অর্থাৎ এবার আর আকাশের দিকে নয় বরং জমিনের দিকে থেকেও সাদা মেঘেরা হাতছানি দেয়!
আকাশের বিশালতা দেখে সহজেই শ্রষ্ঠাকে উপলব্ধি করাযায়, যদি কারও অন্তরে সামান্যতমও ঈমান থাকে। যিনি এই নীল আসমান, সবুজ জমিন, তেজদীপ্ত সূর্য, স্নিগ্ধ চাঁদ, মিটি মিটি জ্বলে থাকা তারকারাজী সৃষ্টি করেছেন সেই প্রভূর পানে, আপনা আপনিই মস্তক নত হওয়ার কথা।
ভ্রমণ যদিও আনন্দের, তার পরেও বড় ধরনের একটা ধক্কল পোহাতে হয়, সেজন্য আল্লাহ রব্বুল আলামিন ভ্রমনের সময় এবাদতও সংক্ষিপ্ত করে দিয়েছেন। চার রাকাত ওয়ালা নামাযকে দুই রাকাত করেছেন এবং জোহর-আসর একই সময়ে প্রয়োজনে জোহরকে আসরের সাথে অথবা আসরকে জোহরের সাথে আদায়ের সুযোগ করে দিয়েছেন। একই ভাবে মাগরীব ও এশাকেও একই সময় পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। এত সুযোগ পাওয়ার পরেও কয়জন মুসাফির (ভ্রমণকারী) নামাজ আদায় করেন আল্লাহই ভাল জানেন। তাছাড়া সফরের সময় দুয়া কবুল হয় বলেও বুখারী শরীফের হাদীসে এসেছে। অথচ দুয়ার পরিবর্তে অনেক দূর্ভাগা সফর অবস্থায় নাচগান দেখতেই বেশী মসগুল থাকে!
দীর্ঘ্য ৫ ঘন্টা আকাসে উড়ার পরে শেষ পর্যন্ত আলমরা আবার জমিনে নেমে এল, আর এ ভাবেই সমাপ্ত হল আলমের প্রথম বিমান ভ্রমণ।
একের মাঝে দশ-
লিখেছেন আমাদের বস্
যেন কাবাবের সাথে সস্
প্রবাসীর প্রথম যাত্রায় বিরম্বনা একটু বেশীই মনে হয়!প্রিয়জনদের-প্রিয়দেশ কে ছেড়ে যাওয়ার কষ্টের সাথে সাথে এমন বিরম্বনা অসহনীয় মনে হয় তখন!!
সুন্দর লিখাটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন