এক দৈত্যরাজ এবং আমার জীবনের প্রথম চাকুরী ও তিক্ত অভিজ্ঞতা!!! (১ম পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন দিল মোহাম্মদ মামুন ০৫ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০১:৪১:৩৪ রাত



পড়ালেখার পাশাপাশি ৪টা টিউশন নিয়ে আমার সময় ভালই কাটতেছিল। পূর্বপুরুষদের থেকেই আমাদের যথেষ্ট পরিমান জায়গা-জমি আছে, আব্বু ঐ জায়গা-জমি, কৃষিকাজ ও নামায-রোজা নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। মা-বাবা ও ছোট দুই ভাই বোনকে নিয়ে সচ্ছলভাবেই পরিবার চলতেছিল। আমি পড়ালেখা, পরিবারের ছোট খাট কাজ, টিউশন, বন্ধুদের সাথে আড্ডা, এবং পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে ছোটদের উপর শাসন সর্বোপরি পূর্ণ স্বাধীনভাবে সময়টা খুব ভালই উপভোগ করতেছিলাম!!!

আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় ১কি.মি পশ্চিমের একটা লোক দৈত্যরাজ নামে এলাকায় খুব সুপরিচিত ছিল। তার কাজকর্ম আসলেই দৈত্যের মতই ছিল! পরিবার পরিজন নিয়ে দৈত্য মশাই ঢাকাতেই থাকেন কিন্তু এলাকার কেউ এখনো জানেনা সে ঢাকার কোন এলাকায় থাকে কি কাজ করে আর কত টাকাই বা বেতন পায় কারণ কেউ কোনদিন তার বাসায় যাওয়ার সুযোগ পায়নি!!! বছরের ২/৩ বার এলাকায় আসলেই চা দোকানে বসে সবার বিল দিয়ে দিত, কেউ খেতে না চাইলে অনেকটা জোর করেই খাওয়ানো হত!!! তারপর সবার খোজ খবর নিত একান্ত আপনজনের মত। কথিত আছে, ঐ দৈত্যের সু-নজর কারো প্রতি পড়লেই নাকি তার ভাগ্যের পরিবর্তন হয়ে যায়! অবস্থা দৃষ্টে মনে হত, তার মত জনদরদী ও বড মনের মানুষ বুঝি এই জগতে আর দ্বিতীয়জন নাই!!!

জানিনা আমার বাবার উপর ঐ দৈত্যরাজের আছর কিভাবে পড়লো! একদিন সকালবেলা আমি আমার আম্মুর সাথে বসে আছি, হটাৎ দেখলাম আমার আব্বু খুব হাসি-খুসী একটা ভাব নিয়ে আমাদের পাশে এসে বসলেন। আব্বুর ভাবখানা দেখে মনে হলো যেন উনি আলাউদ্দিনের চেরাগ হাতে পেয়েছেন!!!!! উনি এতটাই উৎফুল্ল ছিলেন যে, ঠিক মতো কথা বলার অবস্থা ও উনার ছিলনা। আমার আব্বুর স্বভাব এমন ছিলনা, উনি খুব সহজ-সরল মানুষ ছিলেন।

এবার আমার আব্বু সেই দৈত্যের মুখ থেকে বের হয়ে আসা কিছু মূল্যবান বাণী পেশ করতে লাগলেন। আমাকে পড়ালেখা নিয়ে আর চিন্তাই করতে হবেনা, পড়ালেখার পাশাপাশি ঢাকাতেই আমার একটা ভাল চাকুরী ও হয়ে যাচ্ছে!!! যেখানে শুরুতেই ১৫-২০ হাজার টাকা বেতন হবে আরো নানাবিধ সুবিদা তো আছেই!!! সাথে সাথে ঐ মহান দৈত্যের কত শত প্রসংশা যে আব্বু করেই চললেন তার সব কথা এখন আর হুবহু আমার মনেই নেই!!! যদিও তখন এলাকায় টিউশনি করেই প্রতিমাসে আমার গড়ে ৬/৭ হাজার টাকা ইনকাম ছিল, তবুও আব্বুর কথাগুলোকে পরিবারের সবাই গুরুত্ব দিলাম। বিশেষ করে আমি আব্বুর মনে কষ্ট দিতে চাইনি বলে অনিচ্ছা সত্বেও রাজি হয়ে গেলাম।

আব্বু দৈত্যরাজকে আমার সন্মতির কথা জানালেন, এতে দৈত্যরাজ খুব খুশি হয়েই পরের মাসে আমাকে ঢাকা নিয়ে যাবেন বলে আব্বুকে কথা দিলেন। ইতোমধ্যে দৈত্যরাজ আমাদের বাড়িতে এসে পরিবারের সবার সাথে এমন একটা ভাব জমালেন, যেন আমাদের কত আপনজন!!! উনি ঢাকাতে বসে শুধু আমাদের কথাই সবসময় ভাবেন!!! মুহুর্ত্বের মধ্যেই আমার আম্মুকে উনার মায়ের পেটের বোন বানিয়ে নিলেন অথচ আমার আব্বু ছাড়া আমাদের পরিবারের কেউ এই মহান ব্যক্তিটাকে কোনদিন দেখেইনি!!!

দিন যত ঘনিয়ে আসতে লাগলো, আমার আম্মুর তৎপরতা যেন আরোও বেড়ে গেল!!! আমি সহ নতুন ভাইয়ের স্ত্রী ও তার ছেলেমেয়েদের জন্য আমার আম্মু কত খাবার বানিয়ে রাখতে লাগলেন! ভাল মানের চাউল, ড়াল, ড়িম, পিঠা, লারু, ভাজা মাছ, ভাজা মোরগের গোসত আরো কতকি!! আম্মুর অনেক দিনের জমানো টাকার ভান্ডার টাও আমাকে দিয়ে দিলেন!!! অথচ এর আগে আম্মুর কাছে অনেকবার টাকা চেয়েও পাইনি!!! আমিও আমার টিউশনির ছাত্র-ছাত্রীদের ও বন্ধুদের বিদায় জানিয়ে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিলাম।নির্ধারিত তারিখে সকাল বেলা বেবি টেক্সি নিয়ে আমার বাড়িতে উপস্থিত হলেন দৈত্যরাজ! অস্রুসিক্ত নয়নে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে দৈত্যরাজের সাথে রওয়ানা হলাম......চলবেপড়ালেখার পাশাপাশি ৪টা টিউশন নিয়ে আমার সময় ভালই কাটতেছিল। পূর্বপুরুষদের থেকেই আমাদের যথেষ্ট পরিমান জায়গাজমি আছে, আব্বু ঐ জায়গাজমি, কৃষিকাজ ও নামায-রোজা নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। মা-বাবা ও ছোট দুই ভাই বোনকে নিয়ে সচ্ছলভাবেই পরিবার চলতেছিল।আমি পড়ালেখা, পরিবারের ছোট খাট কাজ, টিউশন, বন্ধুদের সাথে আড্ডা, এবং পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে ছোটদের উপর শাসন সর্বোপরি পূর্ণ স্বাধীনভাবে সময়টা খুব ভালই উপভোগ করতেছিলাম!!!

আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় ১কি.মি পশ্চিমের একটা লোক দৈত্যরাজ নামে এলাকায় খুব সুপরিচিত ছিল। তার কাজকর্ম আসলেই দৈত্যের মতই ছিল! পরিবার পরিজন নিয়ে দৈত্য মশাই ঢাকাতেই থাকেন কিন্তু এলাকার কেউ এখনো জানেনা সে ঢাকার কোন জায়গায় থাকে কি কাজ করে আর কত টাকাই বা বেতন পায় কারণ কেউ কোনদিন তার বাসায় যাওয়ার সুযোগ পায়নি!!! বছরের ২/৩ বার এলাকায় আসলেই চা দোকানে বসে সবার বিল দিয়ে দিত, কেউ খেতে না চাইলে অনেকটা জোর করেই খাওয়ানো হত!!! তারপর সবার খোজ খবর নিত একান্ত আপনজনের মত। কথিত আছে, ঐ দৈত্যের সু-নজর কারো প্রতি পড়লেই নাকি তার ভাগ্যের পরিবর্তন হয়ে যায়! অবস্থা দৃষ্টে মনে হত, তার মত জনদরদী ও বড মনের মানুষ বুঝি এই জগতে আর দ্বিতীয়জন নাই!!!

জানিনা আমার বাবার উপর ঐ দৈত্যরাজের আছর কিভাবে পড়লো! একদিন সকালবেলা আমি আমার আম্মুর সাথে বসে আছি, হটাৎ দেখলাম আমার আব্বু খুব হাসি-খুসী একটা ভাব নিয়ে আমাদের পাশে এসে বসলেন। আব্বুর ভাবখানা দেখে মনে হলো যেন উনি আলাউদ্দিনের চেরাগ হাতে পেয়েছেন!!!!! উনি এতটাই উৎফুল্ল ছিলেন যে, ঠিক মতো কথা বলার অবস্থা ও উনার ছিলনা। আমার আব্বুর স্বভাব এমন ছিলনা, উনি খুব সহজ-সরল মানুষ ছিলেন।

এবার আমার আব্বু সেই দৈত্যের মুখ থেকে বের হয়ে আসা কিছু মূল্যবান বাণী পেশ করতে লাগলেন। আমাকে পড়ালেখা নিয়ে আর চিন্তাই করতে হবেনা, পড়ালেখার পাশাপাশি ঢাকাতেই আমার একটা ভাল চাকুরী ও হয়ে যাচ্ছে!!! যেখানে শুরুতেই ১৫-২০ হাজার টাকা বেতন হবে আরো নানাবিধ সুবিদা তো আছেই!!! সাথে সাথে ঐ মহান দৈত্যের কত শত প্রসংশা যে আব্বু করেই চললেন তার সব কথা এখন আর হুবহু আমার মনেই নেই!!! যদিও তখন এলাকায় টিউশনি করেই প্রতিমাসে আমার গড়ে ৬ হাজার টাকা ইনকাম ছিল, তবুও আব্বুর কথাগুলোকে পরিবারের সবাই গুরুত্ব দিলাম। বিশেষ করে আমি আব্বুর মনে কষ্ট দিতে চাইনি বলে অনিচ্ছা সত্বেও রাজি হয়ে গেলাম।

আব্বু দৈত্যরাজকে আমার সন্মতির কথা জানালেন, এতে দৈত্যরাজ খুব খুশি হয়েই পরের মাসে আমাকে ঢাকা নিয়ে যাবেন বলে আব্বুকে কথা দিলেন। ইতোমধ্যে দৈত্যরাজ আমাদের বাড়িতে এসে পরিবারের সবার সাথে এমন একটা ভাব জমালেন, যেন আমাদের কত আপনজন!!! উনি ঢাকাতে বসে শুধু আমাদের কথাই সবসময় ভাবেন!!! মুহুর্ত্বের মধ্যেই আমার আম্মুকে উনার মায়ের পেটের বোন বানিয়ে নিলেন অথচ আমার আব্বু ছাড়া আমাদের পরিবারের কেউ এই মহান ব্যক্তিটাকে কোনদিন দেখেইনি!!!

দিন যত ঘনিয়ে আসতে লাগলো, আমার আম্মুর তৎপরতা যেন আরোও বেড়ে গেল!!! আমি সহ নতুন ভাইয়ের স্ত্রী ও তার ছেলেমেয়েদের জন্য আমার আম্মু কত খাবার বানিয়ে রাখতে লাগলেন! ভাল মানের চাউল, ড়াল, ড়িম, পিঠা, লারু, ভাজা মাছ, ভাজা মোরগের গোসত আরো কতকি!! আম্মুর অনেক দিনের জমানো টাকার ভান্ডার টাও আমাকে দিয়ে দিলেন!!! অথচ এর আগে আম্মুর কাছে অনেকবার টাকা চেয়েও পাইনি!!! আমিও আমার টিউশনির ছাত্র-ছাত্রীদের ও বন্ধুদের বিদায় জানিয়ে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিলাম।নির্ধারিত তারিখে সকাল বেলা বেবি টেক্সি নিয়ে আমার বাড়িতে উপস্থিত হলেন দৈত্যরাজ! অস্রুসিক্ত নয়নে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে দৈত্যরাজের সাথে রওয়ানা হলাম......চলবে

http://www.bdfirst.net/blog/blogdetail/detail/10481/4341216/58458#.Vi4dldIrIdU

বিষয়: বিবিধ

২০৪৮ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

291366
০৫ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০২:১৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ইন্টারেষ্ট জাগিয়ে দিয়েছেন!!
চলুক।
০৫ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ০৭:৩৫
235034
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : ভাইয়া একটা লোভী মানুষের কারনে আমি অযথা অনেক অনেক কষ্ট করেছি, সব গুলু কথা শেষ করতে হয়তো আরো ২ পর্ব লাগবে। একসাথে লিখলে অনেক বড হয়ে যেত তাই লিখিনি। ইনশাআল্লাহ পরের পর্বটা খুব তাডাতাডি লিখবো। ধন্যবাদ রিদওয়ান কবির সবুজ ভাই।
291369
০৫ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৪০
আফরা লিখেছেন : ভাল তো !!!মনের মাঝে কিউরিসিটি জাগিয়ে শেষ করে দিলেন -----এই জন্যই পর্ব লেখা ভাল লাগে না ।
০৫ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ০৭:৩৮
235036
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : ভাইয়া একটা লোভী মানুষের কারনে আমি অযথা অনেক অনেক কষ্ট করেছি, সব গুলু কথা শেষ করতে হয়তো আরো ২ পর্ব লাগবে। একসাথে লিখলে অনেক বড হয়ে যেত তাই লিখিনি। ইনশাআল্লাহ পরের পর্বটা খুব তাডাতাডি লিখবো। ধন্যবাদ আফরা ভাই, আপনাদের সুন্দর আগ্রহ আমাকে তাডাতাডি লিখতে অনুপ্রাণিত করবে।
291493
০৫ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:৪২
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : অনেক ভালো লাগতেছে। চালাতে থাকুন সাথে আছি।
০৫ ডিসেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৭
235120
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : প্রিয় ভাই, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনাদের উৎসাহ আমাকে প্রেরণা দিবে।
291509
০৫ ডিসেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২২
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : পড়ের পর্ব কই? Smug Smug??
ভালো লাগ্লো Good Luck Happy
ধন্যবাদGood Luck
০৫ ডিসেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২৯
235121
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : ইনশাআল্লাহ পরের পর্ব খুব তাডাতাডি শেষ করতেছি, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
292883
১০ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৫৮
নাছির আলী লিখেছেন : অনেক ভালো লাগলো
অনেক ধন্যবাদ
292931
১০ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ০৮:৪৭
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : ধন্যবাদ নাছির ভাই। আপনাদের ভাল লাগাই আমার লিখার সার্থকতা।
298090
৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:১৯
নিরবে লিখেছেন : ভালো লাগলো
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৮:১০
247408
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : প্রিয় ভাই, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনাদের উৎসাহ আমাকে প্রেরণা দিবে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File