তার শাসনকাল নিরবিচ্ছিন্ন থাকুক

লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ০৭ জুলাই, ২০১৭, ০৮:১২:২৫ রাত

একজন রাষ্ট্র নেতাকে সফল হতে হলে তাকে অবশ্যই মানবতাবাদী হতে হয়, এর কোনো বিকল্প নেই। মানুষের প্রতি মমত্ববোধকে তিনি তার দায়িত্ব আর দায়বদ্ধতার অংশ মনে করেন বলেই রাষ্ট্রের গরিব-দুঃখী মধ্যবিত্ত-উচ্চবিত্ত সকল মানুষই তার দ্বারা উপকৃত হন। প্রতিটি রাষ্ট্র বা জনগোষ্ঠীরই আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠা কিংবা সাফল্যের দিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য একজন ক্ষণজন্মা মানুষের আগমন জরুরী। বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে পেয়েছিল বলেই আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, দেশে স্বাধীনতা এসেছে। তেমনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা রাজনীতিতে এসেছেন বলেই বাংলাদেশ আজ মানে-সম্মানে-সম্পদে এক ঈর্ষণীয় উচ্চতায় উঠে এসেছে। দৈন্যের অতীতকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ। তিনি প্রমাণ করেছেন, প্রধানমন্ত্রিত্ব তার কাছে বড় নয়, রাষ্ট্র ও জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করাই বড় কথা। এই সাহসী রাষ্ট্র নেতার জীবননাশের জন্য এ পর্যন্ত অসংখ্য বার হামলা আর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ কৃপায় তিনি বেঁচে আছেন, রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন অকুতোভয়ে। যে কোনো দুর্যোগ আর ক্রান্তিকালে তিনি কখনো বিচলিত হননি বরং সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করে চলেছেন। ১৯৯৭ ও ৯৮ সালের বন্যা; অতীতের সরকারের রেখে যাওয়া খাদ্য ঘাটতি; দেশব্যাপী বিদ্যুৎ ঘাটতি; কুচক্রি মহলের ষড়যন্ত্রের কারণে বিশ্বব্যাংকের পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়ন বন্ধ করা; হাওড়ে অতি বর্ষণজনিত বন্যায় ধান-মাছের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি; পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে দেড় শতাধিক নাগরিকের জীবনহানি – যখন যে চ্যালেঞ্জই সামনে আসুক না কেন তিনি তা সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করেছেন, এখনো করছেন এবং আমাদের বিশ্বাস সঙ্কট উত্তরণের এই প্রচেষ্টাতে আগামীতেও সফল হবেন। কারণ তিনি তো মানবতাবাদী রাষ্ট্র নেতা। জনতার সমস্যা দূর করাই তার প্রধানতম লক্ষ্য। এ দেশে মানবতাবাদী মানুষ আরও অনেককে খুঁজে পাওয়া যাবে, কিন্তু একজন শেখ হাসিনা একেবারেই আলাদা, অতুলনীয়। তাই তো দেখি মাতৃত্বের মমতায় তিনি এতিম শিশুর মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন, পরম শ্রদ্ধায় অশিতিপর বৃদ্ধাকে বুকে জড়িয়ে নিচ্ছেন, অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে মেইন স্ট্রিমে টেনে তোলার জন্য জাতীয় বাজেটে তাদের জন্যে আলাদা বরাদ্দ রাখছেন, যেমন বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, ঈদ পার্বণে তাদের জন্য বিশেষ অর্থ বরাদ্দ, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন-আশ্রয়হীনের জন্য ঘর বানিয়ে দিচ্ছেন, কাজ দিচ্ছেন। তিনি এতই দূরদর্শী যে সপ্তাহান্তে দুই দিনের ছুটি ঘোষণা করেছেন। ফলে শহরের বিত্তবান মানুষ গ্রামে যেতে শুরু করেছে, এভাবে শহরের টাকা গ্রামে যাবার ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি ও জীবনে প্রাণচাঞ্চল্য সঞ্চারিত হতে হতে বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশ। গ্রামের মানুষও এখন আর খালি পায়ে হাটে না, পোশাকে আশাকে পরিপাটি, মেয়েরা ইউনিফরম পরে স্কুল-কলেজে যাচ্ছে, বলা যায় অনেক ক্ষেত্রেই ছেলেদের পেছনে ফেলে মেয়েরা এগিয়ে চলেছে বিস্ময়করভাবে। এই সাফল্যের কারণেই রাষ্ট্র নেতা শেখ হাসিনা অনন্য এবং অদ্বিতীয়। তার সময়োপযোগী নানা উদ্যোগের কারণে আজ ‘মঙ্গা’ ‘দুর্ভিক্ষ’ শব্দগুলি জনজীবন থেকে উঠে গেছে। এখন কেবল ডিকশোনারিতেই শব্দ দুটি পাওয়া যাবে, দেশের অন্য কোথাও নয়। তিনি যেমন দেশের গরিব অসহায় জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে সচেষ্ট একই সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনায় তিনি দৃঢ়, দূরদর্শী এবং আপোসহীন। একটি উদাহরণই যথেষ্ট, বড় বড় রাষ্ট্র যখন জঙ্গিবাদের আগ্রাসনে গলদগর্ম, হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে তিনি বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের শেকড় উৎপাটন করতে পুরোপুরি সফল না হলেও আশ্চর্যজনকভাবে অনেকটাই দমন ও নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছেন। এ অনন্য অর্জনে বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে এবং ক্ষেত্র বিশেষে বাংলাদেশের উদাহরণ নিচ্ছে। তার জিরো টলারেন্স নীতিতে কেবল দমন নয়, জঙ্গিদের ভিতশুদ্ধ কাঁপিয়ে দিয়েছে। মানুষের প্রতি মমত্ববোধই তাকে এতখানি সাহসী করে তুলেছে। কারণ তার ধমনীতে বইছে সেই জাতির পিতার রক্ত, যে রক্ত অন্যায় জানে না, আপোসকামীতা জানে না, জনগণের প্রশ্নে থাকে অবিচল। তাই আপামর জনতার প্রত্যাশা – শেখ হাসিনা দীর্ঘজীবী হোন, তার শাসনকাল নিরবিচ্ছিন্ন থাকুক।

বিষয়: বিবিধ

৫৮৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File