উন্নত এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুস্থ-সবল আলোকময় বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ৩০ জুন, ২০১৭, ০৩:৩০:৫৬ দুপুর
আমাদের অর্থনীতির অগ্রযাত্রার পথ মোটেও কুসুমাস্তীর্ণ নয়। রাজনৈতিক সহিংসতায় ব্যাপক সম্পদ ধ্বংস, অশুভ তৎপরতার মাধ্যমে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের ভীতি প্রদর্শন, বিশ্ববাসীর কাছে দেশকে একটি সন্ত্রাসী ও মৌলবাদী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করার অপচেষ্টার মধ্য দিয়েও বর্তমান সরকারের বিজ্ঞ পরিচালনায় উন্নয়নের চাকা সচল রেখেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়রূপে অটল হিমালয়ের মতো চির উন্নত শিরে দাঁড়িয়ে আছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, কর্মসৃজন, খাদ্য উৎপাদন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, আমদানি ও রফতানি কোন সূচকেই আমরা আর পিছিয়ে নেই। অগ্রগতি হয়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন খাতে। দারিদ্র্য ও অসমতা হ্রাসসহ আর্থসামাজিক খাতের প্রায় প্রতিটি সূচকেই রয়েছে আমাদের সাফল্য। বিশ্বব্যাপী সুধী সমাজে ‘উন্নয়নের রোল মডেল’ হিসেবে বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত হচ্ছে। নারীর সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম প্রথম সারির দেশ। অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশবান্ধব প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং সীমিত সম্পদের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দারিদ্র্য বিমোচন করে বাংলাদেশ বিশ্বসমাজে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এত সব সাফল্য ও অর্জন বাংলাদেশকে আজ এক অনন্য উচ্চতায় এনে দাঁড় করিয়েছে। এক সময় যারা বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলত, আজ তারাই বলছে, বাংলাদেশ উন্নয়নের বিস্ময়। পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অর্থায়ন না করলেও বাংলাদেশ পিছিয়ে যায়নি, নিজস্ব অর্থে তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করছে। এমন অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। মধ্য আয়ের মহাসড়কে বাংলাদেশ এখন দৃপ্ত পায়ে ছুটে চলেছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এটাই এখন বাস্তবতা। এই বাস্তবতা শুধু দেশবাসীকে নয়, আন্তর্জাতিক মহলেও এ বিশ্বাস জন্মিয়েছে যে, সঠিক ও যুগোপযোগী পরিকল্পনা এবং আত্মপ্রত্যয় থাকলে উন্নয়ন অবশ্যম্ভাবী। দেশকে অনেক দূর যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে সরকার দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষিত পরিকল্পনার স্বপ্নমূলে থাকবে একটি শান্তিপ্রিয়, উন্নত এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুস্থ-সবল বাংলাদেশ। প্রতি বছরের মতো এ বছরও জাতীয় বাজেট পেশ হয়েছে। একটা রাষ্ট্রের বাজেট প্রণয়ন কখনওই সহজ কাজ নয়। একটি ছোট সংসারেও সারা বছরের হিসাব মেলানো কঠিন। তাই যারা রাষ্ট্রীয় বাজেট প্রণয়ন করেন, তারা অনেক কঠিন কাজটিই করেন বটে। যদি লক্ষ্য স্থির ও সঠিক থাকে, তবে তা ফলোদয় হতে বাধ্য। বর্তমান সরকারের বাজেট পেশকালে আমরা প্রতি অর্থবছরেই একটি সুন্দর শিরোনামের সঙ্গে পরিচিত হই। যদিও নামে কিছু এসে যায় না, কাজই আসল। তারপরও একটি সুন্দর শিরোনাম অনেক অর্থ বহন করে। যে শিরোনামটি স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মনে পজিটিভ ভাবনা তৈরি করে দেয়। এ বছরের বাজেটের স্লোগান হচ্ছে ‘উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ, সময় এখন আমাদের’। গত বছরের বাজেটের শিরোনাম ছিল ‘প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে অগ্রযাত্রা’। এমন ভাল লক্ষ্য থাকলে তা আমাদের ভাল পথটিতে যেতেই উৎসাহ জোগাবে। বাংলাদেশ এখন সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের বৃত্তটি ভেঙ্গে দিয়েছে। আগামী অর্থবছরে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের স্বপ্নকে বাস্তবিক রুপ দিতে চাই সরকার। আর ২০২১ সাল থেকে ৩ বছরের পথ এগিয়ে এসে ২০১৮ সালের মধ্যেই মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে পরিচিতি পাবে বাংলাদেশ। প্রস্তাবিত বাজেটটি ২০১৭-’১৮ অর্থবছরের, যাতে একটি উন্নত এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুস্থ-সবল আলোকময় বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন লালিত। স্বাধীনতার পর আমাদের যতটা এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, নানা বিপত্তিতে ততটা এগিয়ে যাওয়া হয়নি। এখন এগিয়ে যাওয়ার, উন্নয়নের পথে অগ্রসরের যে ধাপ চলছে, এর গতি যত অব্যাহত থাকবে, ততই মঙ্গল।
বিষয়: বিবিধ
৬১৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন