জান্নাতের পাসপোর্ট

লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ১৯ জুন, ২০১৭, ০৬:১৭:৩৯ সন্ধ্যা

অবিমৃষ্যকারিতা আর ধৃষ্টতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে বাংলাদেশের জঙ্গি দলগুলো আখেরাত আর জান্নাতের পাসপোর্ট তৈরি করেছে! পাসপোর্ট দুটোর রঙ সবুজ। জান্নাতের পাসপোর্টের উপরে বৃত্তের ভেতরে সোনালি অক্ষরে লেখা... ‘এই বিশ্ব সৃষ্টি জগতের একমাত্র মালিক আল্লাহ।’ নিচের দিকে সাদা কালিতে ইংরেজিতে লেখা ‘পাসপোর্ট অফ হেভেন, উইথ ভিসা।’ পৃথিবীর কোনও দেশে, এমনকি মুসলিম দেশেও, কেউ জান্নাতের পাসপোর্ট বানায়নি। বাংলাদেশই এই অভিনব কাজে প্রথম। সম্প্রতি ধৃত কিছু জঙ্গিদের হাতে পাওয়া গেছে আখেরাতের আর জান্নাতের পাসপোর্ট। এই জঙ্গিরা ধর্মের উদারতাকে, মানবিকতাকে, সহমর্মিতাকে, সহনশীলতাকে হঠিয়ে ধর্মের ভেতর নিয়ে আসতে চাইছে অনুদারতা, অসহিষ্ণুতা, নিষ্ঠুরতা, স্বার্থপরতা আর বর্বরতা। এ মানুষগুলোর দৌরাত্ম দেখে মনে হয় এরা বোধহয় নিজেদের প্রচন্ড রকমের ক্ষমতাশালী, বিচক্ষণ, শক্তিমান এবং মহান বলে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। এরা নিজেদের সর্বোচ্চ বিচারক মনে করতেও এতটুকু দ্বিধা করে না। কুপকন্ডুকতায় আচ্ছন্ন ধর্মান্ধ এই মানুষগুলো বুঝতে চায় না যে, জান্নাতের পাসপোর্ট বানিয়ে সবচেয়ে ভয়ংকর শেরেক কিন্তু তারাই করছে। আখেরাতের ময়দানে মানুষের পাপ-পূণ্যের বিচার করবেন তো আল্লাহতায়ালা। তিনিই পাপীদের দোজখে আর পূণ্যবানদের জান্নাতে পাঠাবেন। কিন্তু এ ধর্মান্ধরা ভাবে তারাই যেন মানুষের বিচার করার মালিক। তারাই সিদ্ধান্ত দিবে কে পাপী আর কে পূণ্যবান। তারা তাদের দৃষ্টিতে পাপীদের নৃশংসভাবে খুন করতে তাই দ্বিধা করছে না। আর তথাকথিত পূণ্যবানদের দিব্যি দিয়ে দিচ্ছে জান্নাতের পাসপোর্ট। কিন্তু তাদের দৃষ্টিতে পাপী তারাই, যারা প্রশ্ন করে – সত্য জানতে চায়। অন্যদিকে পূণ্যবান তারাই, যারা প্রশ্ন করে না, যারা তাদেরকে বিশ্বাস করে এবং নির্দ্বিধায় তথাকথিত জেহাদে নামে। তবে এই জান্নাতের পাসপোর্ট প্রদানকারীদের তো আমরা সকলেই চিনি। এরা মানুষের মগজধোলাই করতে ব্যস্ত। ধর্মের নামে মগজে এক গাদা হিংসে আর ঘৃণা ঢুকিয়ে স্বাভাবিক চিন্তাশক্তি নষ্ট করে, সুস্থ ভাবনা দূরে সরিয়ে তাদের হাতের পুতুল তৈরিতে সচেষ্ট। তাহলেই তো তাদেরকে দিয়ে যা ইচ্ছে তাই করানো সম্ভব, অন্যকে হত্যা থেকে শুরু করে নিজেকে হত্যা অবধি। পেটে আত্মহত্যার বোমা বেঁধে বলে দেওয়া যায় নিজেকে হত্যা করে হলেও যদি ভিন্নমতাবলম্বীদের হত্যা করা যায়, তবে নিশ্চিতই জান্নাত। এদের আগ্রাসনেই দেশে যুবসমাজের একাংশ নষ্ট হচ্ছে শর্টকাটে জান্নাতে যাওয়ার লোভে। যুবসমাজই দেশের ভবিষ্যৎ। এই ভবিষ্যৎ যদি পচে যায় তবে দেশের ভবিষ্যৎও পচে যাবে। তাই দেশকে পচনের হাত থেকে বাঁচাতে মানুষকে ঘৃণা আর হিংসে থেকে মুক্ত করে মানবিক ও বিজ্ঞানমনস্ক করতে হবে। বিজ্ঞানমনস্কদের অত সহজে কেউ ধর্মের নামে জঙ্গিবাদে দীক্ষিত করতে পারে না। তারা সর্বশক্তিমান আল্লাহকে বিশ্বাস করার বদলে জঙ্গিনেতাদের বিশ্বাস করে না, জান্নাতের পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার জন্য মানুষের অনিষ্ট করে না। বিভেদ আর বিচ্ছেদের, ঘৃণা আর হিংসের জঙ্গিবাদ ছেড়ে এদেশে বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্ম গড়ে উঠবে এটাই সকলের প্রত্যাশা।

বিষয়: বিবিধ

৮৭৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

383383
১৯ জুন ২০১৭ রাত ১১:৪৭
মনসুর আহামেদ লিখেছেন :
383384
১৯ জুন ২০১৭ রাত ১১:৪৭
মনসুর আহামেদ লিখেছেন :
383385
১৯ জুন ২০১৭ রাত ১১:৫০
মনসুর আহামেদ লিখেছেন :
383388
১৯ জুন ২০১৭ রাত ১১:৫৯
আকবার১ লিখেছেন : চমৎকার

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File