আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ০৪ জুন, ২০১৭, ০৪:২৪:০০ বিকাল
সাধারণ মানুষের পরম ভরসাস্থল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। চাহিদার তুলনায় শয্যা সঙ্কট ও জনবল সঙ্কটের পরও এই হাসপাতাল সাধারণ মানুষের আস্থার স্থান। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালকে ধারণ ক্ষমতার তুলনায় অতিরিক্ত রোগীর চিকিৎসা দিতে হয়। এটি দেশের চিকিত্সা শিক্ষায় একটি মডেল। এই হাসপাতালসহ দেশের অনেক হাসপাতালে অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা করেছে সরকার। এই হাসপাতালকে ৫ হাজার শয্যার করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জটিল ও দূরারোগ্য নানা ব্যাধিতে আক্রান্ত বিভিন্ন রোগী প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে তাই ছুটে আসেন এ হাসপাতালে। দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টা চিকিৎসা সেবায় ব্যস্ত সময় পার করেন প্রতিষ্ঠানটির চিকিত্সক-নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এখানে চিকিৎসা নিতে আসা ৮৫ ভাগ রোগীই দরিদ্র। এদের পক্ষে বাইরে চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়। দরিদ্র রোগীদের চিকিৎসা সেবার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে ৫ হাজার শয্যায় উন্নীত করার নির্দেশ দেন। এই হাসপাতালে থাকবে সব ধরনের অত্যাধুনিক চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা। হূদরোগীদের সব ধরনের অপারেশনসহ চিকিৎসা, কিডনি সংযোজনসহ সকল সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা এই হাসপাতালে থাকবে। নামেমাএ মূল্য পাবে দরিদ্র রোগীরা। দেশের সব বিভাগ, জেলা ও উপজেলা থেকে শুরু করে রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোও রোগীদের এই হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। ঢাকা মেডিক্যাল সাধারণত কাউকে ফিরিয়ে দেয় না। বেডে না হোক, ফ্লোরে হলেও রোগীর ঠাঁই হয়। এছাড়া সারাদেশ থেকে ঘটনা-দুর্ঘটনায় আহতদের এই হাসপাতালে চিকিত্সার জন্য প্রেরণ করা হয়। তবে ৮শ’ শয্যার জনবল দিয়ে ২৬শ’ শয্যার দেশের সর্ববৃহত্ এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে চলছে দিনরাত চিকিৎসা সেবা। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল প্রত্যেক দিন ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবা প্রদান করা হয়। চিকিৎসার জন্য রোগীকে ফেরত প্রদান করা হয় না। জনগণের সুচিকিতৎসার জন্য প্রতিষ্ঠানটি আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আউটডোর ও জরুরি বিভাগে অপারেশনসহ পুরো হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার রোগীর চিকিৎসা প্রদান করা হয়। হাসপাতালে প্রতিদিন দর্শনার্থীসহ প্রায় ৪০-৪৫ হাজার লোকের সমাগম ঘটে। প্রতিদিন চিকিৎসাধীন থাকে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার রোগী। আগত রোগীদের মধ্যে গড়ে ১ হাজারের বেশি রোগীকে স্থানাভাবে অতিরিক্ত বিছানা, মেঝে, করিডোর এমনকি লবিতে রেখেও চিকিৎসা প্রদান করা হয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্যাথোলজি বিভাগটি দুইবেলা খোলা থাকে। চিকিৎসাধীন রোগীরা সবধরনের পরীক্ষা বিনামূল্যে এই বিভাগ থেকে করার সুযোগ পাচ্ছেন। বর্তমান সরকার পরীক্ষা-নিরীক্ষার আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বিগুণ বাড়িয়েছেন। ক্যাথল্যাবে রোগীদের করোনারী এ্যানজিওগ্রাম, পেস মেকার সংযোজন এবং স্টেন্টিংসহ অন্যান্য ইনভেসিভ কার্ডিয়াক প্রসিডিউর করা সম্ভব হচ্ছে। অচিরেই কার্ডিয়াক সার্জারি ও ভাসকুলার সার্জারি বিভাগ চালু করা হবে। এই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয় প্রক্রিয়া চলমান ও অবকাঠামো সংস্কার প্রক্রিয়াধীন আছে। আইসিইউ শয্যা ২০ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শয্যায় উন্নীত করা হচ্ছে। এছাড়া নতুন চারটি অপারেশন থিয়েটার চালুর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। প্রতিদিন অনেক দরিদ্র রোগী এই ব্যয়বহুল চিকিৎসা বিনামূল্যে পাচ্ছে। হাসপাতালে রোগীদের জন্য ২২৩ প্রকারের প্রয়োজনীয় ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১৯৪৬ সালে চালু হওয়া ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুরুতে ছিল ২৫০ শয্যা। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু সরকার ১ হাজার ৫০ শয্যায় উন্নীত করেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ২০১৩ সালে ১০ তলা বিশিষ্ট একটি নতুন ভবন উদ্বোধন করে হাসপাতালের শয্যা ১ হাজার ৮০০ থেকে বাড়িয়ে ২৬ শ’ করেন। ২০১৭ সালের মধ্যে ৫ হাজার শয্যা করতে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দরিদ্রদের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা ব্যবস্থার মডেল হাসপাতাল এটি। স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দিতে কাজ করছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এই হাসপাতালকে বিশ্বমানের করতে কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
৬৪২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্তু সরকার কি তা হতে দেবে ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন