আসছে আগস্টে নতুন চেহারা পাচ্ছে মৈত্রী এক্সপ্রেস
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ৩০ মে, ২০১৭, ০৫:৪৪:৪৭ বিকাল
ঢাকা-কলকাতা রেল যোগাযোগ আমূল পাল্টে যাচ্ছে। আসছে আগস্টে নতুন চেহারা পাচ্ছে মৈত্রী এক্সপ্রেস। পুরো ট্রেন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পাশাপাশি চলাচলও হবে নির্ঝঞ্ঝাট। থাকবে না দুই সীমান্তের ইমিগ্রেশন বিরতি। কাস্টমস ও চেকিংয়ের নামে কোনো ভোগান্তিও থাকবে না যাত্রীদের। ঢাকা ও কলকাতার স্টেশনে একবারেই সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করা হবে। গত মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লি সফরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিদ্যমান বিভিন্ন বাধা দূর হয়েছে। এখন মাঠপর্যায়ে আলোচনা করে দুই দেশের জন্য সুবিধাজনক সেবাগুলো ধাপে ধাপে চালু করা সময়ের ব্যাপারমাত্র। এরই একটি হচ্ছে মৈত্রী এক্সপ্রেসের নতুন চেহারা। ফলে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীদের জন্য বিমানের চেয়েও বেশি স্বাচ্ছন্দ্যের হবে ট্রেনযাত্রা। মৈত্রী এক্সপ্রেস নতুন উদ্যমে চালুর প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। এখন ভ্রমণকারীদের বাংলাদেশ অংশে দর্শনা ও ভারতীয় অংশে ইমিগ্রেশনের কাজ সারতে হয়। এর ফলে পৌঁছাতে সময় লেগে যায় ১২-১৩ ঘণ্টা। যাত্রাপথে দুই দেশের ইমিগ্রেশনেই দীর্ঘ সময় নষ্ট হয়। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। এই বাধা কাটাতে ঢাকা স্টেশনেই (ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন) ইমিগ্রেশনের সব কাজ শেষ করার বিষয়টি যাচাই করা হয়েছে। এতে সফলতাও এসেছে। আগস্ট থেকে পুরোপুরি এই সিস্টেমেই চলবে ট্রেন। তখন ঢাকায় একবার ইমিগ্রেশন শেষ হলে কোথাও না থেমে একেবারে কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশনে থামবে মৈত্রী এক্সপ্রেস। একই সঙ্গে কলকাতা থেকে যারা ঢাকায় আসবেন তাদের ইমিগ্রেশনসহ সব কাজ সম্পন্ন করা হবে শিয়ালদহ স্টেশনে। ট্রেনে যেহেতু খাবারের পর্যাপ্ত সুবিধা আছে, সেহেতু এটা ননস্টপ চলতে পারবে। ফলে এখনকার নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগেই এক দেশ থেকে আরেক দেশে পৌঁছাবে মৈত্রী ট্রেন। বৃহস্পতিবার ব্যতিত সপ্তাহের ছয় দিনই চলবে এই ট্রেন। ইতিমধ্যে মৈত্রী ট্রেনকে পুরোপুরি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। নতুন চেহারায় আর কোনো নন-এসি বগি থাকবে না। এখন ভারতের কোচগুলোতে আসন চারশর কাছাকাছি। বাংলাদেশের কোচগুলোতে আসন তিনশর কিছু বেশি। এক্ষেত্রেও সমতা আসবে। ২০০৮ সালে মৈত্রী এক্সপ্রেস চালু হয়। ২০১৪ সালের এপ্রিলে ঢাকায় আন্তদেশীয় রেলওয়ে সভায় খুলনা-কলকাতা একজোড়া মৈত্রী এক্সপ্রেস চালুর প্রস্তাব করা হয়েছিল। তখন ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বনগাঁও-কলকাতা স্টেশনে সাব-আরবান ট্রেনের আধিক্য এবং সেকশনাল ক্যাপাসিটি না থাকার কারণে খুলনা-কলকাতা লাইনে ট্রেন চালুতে সময় নেয়। কারিগরি সক্ষমতা অর্জনের পর গত মাসে এর উদ্বোধন করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। ১৯৬৫ সালে ভারত-বাংলাদেশ ৬টি সীমান্ত দিয়ে রেল যোগাযোগ চালু ছিল। তখন খুলনা-কলকাতার পাশাপাশি দার্জিলিং মেইল যেত পার্বতীপুর-শিলিগুড়ি। কিন্তু ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর সব ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবার সেই লাইনগুলো চালুর ওপর জোর দিয়েছে দুই দেশ। রেলের ইতিহাস অনুযায়ী, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২-৭৩ সালে একবার আগের ট্রেন লাইন চালু হয়। ওই সময় ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীরা দেশে ফেরেন ট্রেনে চড়ে। পরবর্তীতে আর কোনো যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করেনি। শুধু ২০০১ সাল থেকে খুলনা-কলকাতা লাইনে মালগাড়ি চলাচল করছে সীমিতভাবে।
বিষয়: বিবিধ
৮০৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন