বাড়ির ছাদে সবুজ অর্থনীতির নতুন আশা
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ০৯ মে, ২০১৭, ০৪:২৪:৩৮ বিকাল
গাছ পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরের লোকসংখ্যা অনুযায়ী যে পরিমাণ গাছ থাকার কথা, তার সিকি ভাগের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায় না। পরিবেশ বিপর্যয় রোধে পৃথিবীর দেশে দেশে নগর পরিকল্পনায় যোগ হচ্ছে সবুজ প্রকৃতির। ছাদ কৃষি পরিবেশের ভারসাম্যতা রক্ষার পাশাপাশি সবুজ অর্থনীতিতে নতুন সংযোজন হিসেবে আশা জাগিয়েছে। ছাদে কৃষির মাধ্যমে বাগান বিস্তারে ভূমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে। দালান-কোঠার সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি তাপমাত্রা হ্রাস করা সম্ভব হচ্ছে। ছাদের সবুজ স্তর বিভিন্ন ট্রান্সমিটিং স্টেশন থেকে নিঃসরিত ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভকে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় প্রতিহত করছে। মোট কথা ছাদ কৃষি নগরজীবনে বহুমাত্রিক সুবিধা ও সম্ভাবনার উৎস হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। একটা সবজি গাছ তিন মাসের জন্য হলেও বায়ু থেকে তিনজনের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন রিসাইক্লিন করতে পারে। তাহলে তিন মাস কালের সবজি কিংবা বহুবর্ষী ফলের গাছ লাগিয়ে বায়ুর পরিশুদ্ধতা রক্ষা করা সম্ভব হলে আমাদের উচিত ছাদ কৃষিতে মনোনিবেশ করা। শহরে সুস্থ-সুন্দর জীবনযাপন করতে হলে সবুজ নগরী গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই। তাই সারি সারি অট্টালিকার ছাদে, বারান্দা-ব্যালকনিতে গড়ে তুলতে হবে সবুজ বাগান। এটি খুব কঠিন কাজ নয়, আমাদের সামান্য ইচ্ছার প্রতিফলনেই ছোট ছোট বারান্দা, ব্যালকনি, ছাদ এমনকি ঘরের শোভায় গাছগাছালি পরিবেশে আনতে পারে সবুজ আবরণ এবং নির্মল বাতাসের উৎস। ফুলের টব, অকেজো বালতি, অকেজো ড্রামে করতে পারেন মৌসুমি শাকসবজি চাষ, খেতে পারেন বারো মাস। আশার খবর হলো ছাদে কৃষিসহ শহরের বাসাবাড়িতে ফুলের গাছ ও অন্যান্য গাছগাছালি লাগানোর প্রবণতা অনেক বেড়েছে। সৌখিনতা দিয়ে শুরু হলেও এর সুফল পেতে শুরু করেছেন শহরের মানুষেরা। এখন অনেক বাসাবাড়ির ছাদ, বারান্দা ও ব্যালকনিতে দেখা যায় সবুজ গাছ আর রঙিন ফুল, ফল ও সবজির নান্দনিক শোভা। শহরের মানুষের এই প্রকৃতির সান্নিধ্য পাওয়ার চেষ্টাকে উপজীব্য করে গড়ে উঠেছে অনেক অনেক নার্সারি। এতে কর্মসংস্থান হচ্ছে বহু মানুষের। রাসায়নিক ব্যবহার না করার ফলে সবজি খুব সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত হয়। বেগুন, টমেটো, বরইটি, ক্যাপসিকাম, ঝিঙ্গা, ধুন্দল, ঢেঁড়স, পুঁইশাক, করলা, মরিচ, মিষ্টি কুমড়াসহ নানা জাতের সবজি চাষ হচ্ছে ছাদে। ফলের মধ্যে- পেয়ারা, আম, কলা, লেবু, বড়ই, স্ট্রবেরি, পেঁপে, শরিফা, সফেদা, ডালিমসহ দেশীয় জাতের প্রায় সব ফলেরই ছাদে চাষাবাদ হচ্ছে। বাহারি দেশী-বিদেশী ফুলের চাষ আরও অনেক বছর আগে থেকেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকে ছাদে ফুল, ফল ও সবজির মিশ্র চাষ করেও সফল হয়েছেন। ছোট একটা চৌবাচ্চায় করতে পারেন মাছ চাষ। ছাদে খরগোশ, কবুতর কিংবা কোয়েল পালনও করা যায়। এতে যেমন পরিবেশের ভারসম্য রক্ষা হচ্ছে তেমনি আয় করাও সম্ভব।
বিষয়: বিবিধ
৭৫৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন