এবার মূল্য নির্ধারিত হবে চোখের কৃত্রিম লেন্সের

লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ২৮ এপ্রিল, ২০১৭, ০৪:০৩:২৫ বিকাল

বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের জনবান্ধব চরিত্র এখন এক প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত সত্য, এক দৃশ্যমান বাস্তবতা। নিন্দুকের মুখে চুনকালি মাখিয়ে দায়বদ্ধতায় উজ্জীবিত এই সরকার একের পর এক জনকল্যাণমুখী নীতি প্রবর্তনেই তার কার্যক্রমকে সীমিত রাখেনি – নিশ্চিত করে চলেছে তার শতভাগ বাস্তবায়নও। সরকারের ইতিবাচক মানসিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে দেশে হৃদরোগ চিকিৎসায় ব্যবহৃত স্টেন্টের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) নির্ধারণের পর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবার চোখের কৃত্রিম লেন্সের এমআরপি ঠিক করার উদ্যোগ নিয়েছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমানের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১১টি ব্র্যান্ডের লেন্সের দাম ঠিক করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা স্টেন্টের এমআরপি ঠিক করেছি। এখন লেন্সের এমআরপি ঠিক করছি। অন্যান্য চিকিৎসাসামগ্রীর এমআরপি ঠিক করার কাজে হাত দেব। সরকারি আইন ও নীতি মেনেই এমআরপি ঠিক করা হচ্ছে। এমআরপি, নিবন্ধন নম্বর, প্রস্তুতকারক দেশের নাম এবং মেয়াদ উল্লেখ থাকলে চিকিৎসাসামগ্রী কেনাবেচায় স্বচ্ছতা আসবে। এতে বেশি লাভবান হবে দরিদ্র রোগীরা।’ বিষয়টি সকলেরই জানা যে, মানুষের চোখে ছানি পড়লে দেখতে সমস্যা হয়। তখন অস্ত্রোপচার করে এই ছানি সরানো হয়। এরপর কৃত্রিম স্বচ্ছ লেন্স প্রতিস্থাপন করা হয়, যা ইন্ট্রাঅকুলার লেন্স নামে পরিচিত। এর মাধ্যমে রোগী আগের মতো পরিষ্কার দেখতে পান। বর্তমানে দেশে ১৭টি ব্র্যান্ডের লেন্সের (ইন্ট্রাঅকুলার লেন্স) নিবন্ধন আছে। কিন্তু হাজারের মতো নিবন্ধনহীন আরও অনেক ব্র্যান্ড ব্যবহার করা হচ্ছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা লেন্সের ১১টি ব্র্যান্ডের এমআরপি ঠিক হয়েছে। এগুলো বিভিন্ন দেশে তৈরি। এগুলোর গুণ ও মানেও ভিন্নতা আছে। তাই বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এমআরপিতে পার্থক্য আছে। তবে ইতিমধ্যে নির্ধারিত মূল্যের তালিকায় দেখা যায়, ১ হাজার ১২৫ টাকায়ও লেন্স পাওয়া যাবে। আবার কেউ চাইলে ১৪ হাজার ৬০০ টাকা দিয়েও লেন্স কিনতে পারবেন। সম্প্রতি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উদ্যোগের অংশ হিসেবে যেসব প্রতিষ্ঠানে হৃদরোগীদের শরীরে স্টেন্ট পরানো হয়, সেগুলো পরিদর্শন করছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই স্টেন্টের মূল্যতালিকা টাঙিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া স্টেন্টের মূল্যসংবলিত পোস্টার ছাপানোরও উদ্যোগ নিয়েছে অধিদপ্তর। এসব পোস্টার সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে সাঁটা হবে। অধিদপ্তর ইতিমধ্যে হৃদরোগ চিকিৎসায় ব্যবহৃত ৪০টি ব্র্যান্ডের স্টেন্টের এমআরপি ঠিক করেছে। তালিকায় দেখা যায়, এখন ১৪ হাজার ৩৮৮ টাকা থেকে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮৯১ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্টেন্টের এমআরপি নির্ধারণ করা হয়েছে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, লেন্সের এমআরপি ঠিক করার পর অধিদপ্তর হৃদরোগ চিকিৎসার অন্যান্য সামগ্রীর এমআরপি ঠিক করার কাজে হাত দেবে। এর মধ্যে আছে হৃদযন্ত্রের ভালভ, পেসমেকার, ক্যাথেটার ইত্যাদি। এরপর তারা কৃত্রিম হাড় বা অন্যান্য সামগ্রীর এমআরপি ঠিক করবে। জনবান্ধব সরকারের এই অনন্য উদ্যোগের ধারাবাহিকতা অচিরেই দেশের সার্বিক চিকিৎসা কর্মকান্ডে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করবে – চিকিৎসা সেবা ক্রমশঃ হয়ে উঠবে সার্বজনীন। আগামীতে দেশের আপামর জনতা অসাধু মুনাফালোভীদের চিকিৎসা বাণিজ্যের আগ্রাসনমুক্ত হবে – এটাই এখন সকলের প্রত্যাশা।

বিষয়: বিবিধ

৯৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File