নতুন ঠিকানায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ২৩ এপ্রিল, ২০১৭, ০৪:১৪:৪৪ বিকাল
১৯৯৬ সালের ২২ মার্চ ঢাকার সেগুনবাগিচায় একটি ভাড়া বাড়িতে প্রথম মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে শেরেবাংলা নগরে দুই একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয়েছে ৮৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের নতুন এ জাদুঘর। এই জাদুঘরে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহার করা বিভিন্ন সামগ্রী, মুক্তিযুদ্ধের দলিল ও চিঠি মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার স্মৃতিস্মারক রয়েছে। চারটি গ্যালারিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বাঙালীর স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের সময়ের মূল্যবোধের নানা দিক। সেগুনবাগিচার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পুরাতন ভবন থেকে নতুন ও পুরাতন প্রজন্মের ৭১ হেঁটে সেখান থেকে শিখা অম্লান নিয়ে এসে নতুন জাদুঘরের প্রবেশ মুখে কালো মার্বেল পাথরের গন্ডির মধ্যে পুনঃস্থাপন করা হয়। এর ঠিক ওপরেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত একটি যুদ্ধবিমান এবং হেলিকপ্টার ডিসপ্লের জন্য রাখা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত অস্ত্র থেকে শুরু করে ব্যবহার্য জিনিসপত্র, একাত্তরের নানা দলিলপত্র, বার্তা, চিঠি মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার নিদর্শন রাখা হয়েছে। নয় তলা ভবনের ৫ হাজার বর্গফুটের প্রদর্শনী গ্যালারিগুলো শুরু হয়েছে চতুর্থ তলা থেকে। ‘আমাদের ঐতিহ্য আমাদের সংগ্রাম’ শীর্ষক এই গ্যালারিতে বাংলাদেশের প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে ইংরেজ বিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলনসহ ১৯৭০ সাল পর্যন্ত কালপর্বের নানা নিদর্শন স্থান পেয়েছে। দ্বিতীয় গ্যালারিতে রয়েছে একাত্তরের জানুয়ারি থেকে অগ্নিঝরা মার্চের ঘটনাবলী, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, ২৫ মার্চে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গণহত্যা এবং ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। ‘আমাদের যুদ্ধ এবং আমাদের মিত্র’ শীর্ষক তৃতীয় গ্যালারিতে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের নানা ঘটনা, রাজকারদের তৎপরতা এবং মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহলের ভূমিকা। চতুর্থ গ্যালারির শিরোনাম ‘আমাদের জয়’। মুক্তিবাহিনীর সম্মুখযুদ্ধ, মিত্রবাহিনীর অভিযান, বুদ্ধিজীবী হত্যা আরও রয়েছে ঢাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ। এছাড়া জাদুঘরে দুটি অস্থায়ী গ্যালারি রয়েছে বিশেষ দিবসে প্রদর্শনের জন্য। নতুন প্রজন্ম যেন মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলে না যায় সেজন্য সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন জানতে পারে, কত বড় ত্যাগের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। সেই স্মৃতিচিহ্নগুলো তারা দেখবে, উপলব্ধি করবে, অন্তরে ধারণ করবে, সেভাবে তাদের চরিত্র গঠন করবে। এ লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
৫৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন