প্রতিশ্রুতি পূরণ

লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ১৭ এপ্রিল, ২০১৭, ০৩:২৯:৩৩ দুপুর

বিশ্ব স্বীকৃত অনন্য নেতৃত্বের দূরদর্শীতা প্রসূত সময়োপযোগী কর্মপরিকল্পনা আর রাষ্ট্র পরিচালনায় মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও চেতনার পুনর্বাসনে বাংলাদেশ এখন অব্যাহত গতিতে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছ। কিন্তু একটি চিহ্নিত অপশক্তি বাংলাদেশের এই সাফল্যকে ম্লান করে দিতে ধর্মীয় উগ্রবাদকে উস্কে দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা শুরু করেছে। তাদের ষড়যন্ত্রে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল জঙ্গীবাদের মতো ভ্রান্ত কৌশলের আগ্রাসনের। তবে যে পরীক্ষিত নেতৃত্বের দূরদর্শীতায় দেশের আজকের এই অর্জন তিনি কি আর কৌশল নির্ধারণে ভুল করতে পারেন? শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রত্যাসী জনতাকে সাথে নিয়ে তিনি দেশব্যাপী জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছেন দুর্জয় প্রতিরোধ। দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণের। তার সুযোগ্য দিক নির্দেশনাতেই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর একের পর এক সফল অপারেশনে দেশ আজ প্রায় জঙ্গীবাদের শঙ্কামুক্ত অবস্থায় উপনীত। এরই ধারাবাহিকতায় দেশ কাঁপানো জঙ্গিগোষ্ঠী নব্য জেএমবিসহ বারোটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে সরকার। গত বছরের জুলাই মাসে গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে লাইমলাইটে আসে নব্য জেএমবি। এর পর থেকে সংগঠনের সদস্যরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে। নব্য জেএমবি ছাড়া বাকি এগারোটি সংগঠনও গোপনে (আন্ডারগ্রাউন্ডে) সক্রিয় আছে। দেশকে জঙ্গিমুক্ত করার সরকারি প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে চলেছে সরকার। তবে একটি চিহ্নিত মহল বাংলাদেশে আইএস আছে বলে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে তার কোনো ভিত্তি নেই। এরাই জঙ্গিদের লালনপালনের পাশাপাশি দেশে জঙ্গীবাদকে উস্কে দিচ্ছে। কিন্তু জঙ্গীদের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির আওতায় এবার তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নিতে তৎপর হয়ে উঠবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী – সরকারি ঘোষণায় এতদসংক্রান্ত নির্দেশনা আশ্বস্ত করেছে দেশবাসীকে। সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তালিকাভুক্ত বারোটি জঙ্গী সংগঠন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে। সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড দ্রুত নিষিদ্ধের আওতায় আনতে সুপারিশ করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে যে সংগঠনগুলো : নব্য জেএমবি, তৌহিদী জনতা, জুমাদআতুল আল সাদাত, তামিরউদ্দীন দ্বীন বাংলাদেশ, আল খিদমত, হিজবুল মাহদি, হিজবুল্লাহ ইসলামী সমাজ, দাওয়াতি কাফেলা, শাহাদত-ই-নবুয়ত, জামাত-আস-সাদাত, জামিউতুল ফালাহ ও ইসলামিক সলিডারিটি ফ্রন্ট। তবে বারোটি সংগঠনের মধ্যে প্রথমেই নিষিদ্ধ করা হবে নব্য জেএমবিকে। কেননা কথিত জিহাদের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বিশ্বাসী হয়ে উঠা নব্য জেএমবির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সক্রিয় আছে। কেউ সমন্বয়ের কাজ করছে। কেউ কেউ ধর্মীয় ও সামরিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। কেউ অস্ত্র ও বোমা সরবরাহ করছে, কেউ কেউ আবার আইটি বিশেষজ্ঞ। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে আগামী দুই মাসের মধ্যেই নব্য জেএমবি নিষিদ্ধ হয়ে যাবে, পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে অন্য সংগঠনগুলোও। ইতোপূর্বে চলতি বছরের ৫ মার্চ আনসার আল ইসলামকে নিষিদ্ধ করা হয়। ২০১৫ সালের ২৫ মে আনসারুল্লাহ বাংলাকে টিম, ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর হিযবুত তাহরীর, ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ, ঐ বছরের ১৭ অক্টোবর জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি) ও জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এবং ২০০৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি শাহাদত ই আল হিকমাকে নিষিদ্ধ করা হয়। বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণের সংস্কৃতিতে আস্থাশীল বলেই নিকট ভবিষ্যতে জঙ্গীবাদের শঙ্কামুক্ত বাংলাদেশের সম্ভাবনায় জনমনে স্বস্তির সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। এখন শুধু অপেক্ষা, কবে আসবে সেই সুদিন!!

বিষয়: বিবিধ

৭৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File