আন্তর্জাতিক রেল নেটওয়ার্ক ট্রান্স এশিয়া রেলওয়েতে যুক্ত হবে বাংলাদেশে
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ০৩ এপ্রিল, ২০১৭, ০৩:৩৬:১৮ দুপুর
ট্রেনে চড়ে কক্সবাজারে আসতে না পারার আক্ষেপ ঘুচে যাচ্ছে এবার। শুধু বাংলাদেশ নয়, অন্যান্য দেশ থেকেও রেলপথে আসা যাবে বিশ্বের দীর্ঘতম এই সমুদ্র সৈকতে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের কাজ শুরু হবে। পুরো প্রকল্প শেষ হতে বছর পাঁচেকও সময় লাগবে না। ২০২০-২২ সালের মধ্যেই সব কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে প্রথম দফায় দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার রেললাইনের কাজ শুরু হবে। তখন ঢাকা থেকে সরাসরি রেলগাড়ি আসবে সমুদ্র সৈকতের শহরে। আর সৈকতের স্টেশনটি হবে ঝিনুকের আদলে। যাতে এটিকে সমুদ্র সৈকতের স্টেশন বলে সহজেই চেনা যায়। বিশাল ঝিনুক আকৃতির কক্সবাজার স্টেশনে ঝিনুকের ভেতরেই হবে প্লাটফর্ম এবং যাত্রী আসা- যাওয়া ও বসার লাউঞ্জ। পুরো প্রকল্পটিকে সরকারের ফাস্টট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরেই। রেললাইনের ‘রুট এলাইনমেন্ট’ পিলার দিয়ে আলাদা করা হয়েছে। চলছে জমি অধিগ্রহণ কাজ। উঁচু নিচু টিলা, বনভূমি ও সমতল সবুজ প্রান্তর পেরিয়ে রেললাইনটি শেষ হবে সমুদ্রতীরের একেবারে কাছে। এজন্য পরিবেশ অধিদপ্তর ও বনবিভাগের অনাপত্তিপত্র নেয়া হয়েছে। এ পথে ১৪০ কিলোমিটার নতুন ‘সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ’ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। বনভূমির যেসব স্থানে বণ্যপ্রাণী ও হাতির বিচরণ এলাকা, সেসব স্থান চিহ্নিত করে ‘প্যাসেজ’ নির্মাণ করা হবে। ৯টি রেলস্টেশন থাকবে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত। এগুলো হচ্ছে দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ, রামু ও শেষ স্টেশন সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণকাজ দুটি ভাগে বিভক্ত করে দরপত্র আহবান করা হয়েছে। প্রথম ভাগে দোহজারী থেকে চকোরিয়া পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার ট্র্যাক নির্মাণ, রেলের সিগন্যালিং ও টেলিকম্যুনিকেশন কাজ করা হবে। যাতে ব্যয় হবে ৩৬৪১.৪৮ কোটি টাকা। দ্বিতীয় ভাগে চকোরিয়া থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার ট্র্যাক নির্মাণ এবং কক্সবাজারে আইকনিক ইন্টারমডাল টার্মিনাল ভবন নির্মাণ করা হবে যাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫৯১.২০ কোটি টাকা। পুরো এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৮০৩৪.৪৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে এডিবি সহায়তা দেবে ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। নতুন এ পরিকল্পনায় রামু হবে জংশন। সেখান থেকে একটি লাইন চলে যাবে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পাশে। আরেকটি লাইন পূর্ব দিকে মিয়ানমারের কাছে গুনধুম যাবে। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রেল নেটওয়ার্ক ট্রান্স এশিয়া রেলওয়েতে যুক্ত হবে বাংলাদেশের রেলপথ। এ রেলওয়ে নেটওয়ার্ক মায়ানমার-বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান-ইরান হয়ে যাবে ইউরোপের তুরস্ক পর্যন্ত।
বিষয়: বিবিধ
৭১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন