নগরের যান্ত্রিক জীবনের মাঝেও সবুজ প্রকৃতি

লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ২৯ মার্চ, ২০১৭, ০৩:৩০:৫০ দুপুর



নগরের যান্ত্রিক জীবনে সবুজ প্রকৃতির দেখা মেলে খুবই কম। অনেক সময় যান্ত্রিকতা ছেড়ে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে চলেন দূরের কোনো সবুজ প্রকৃতির বুকে। তবে চাইলেই শহুরে জীবনের ইট-কংক্রিটের ভিড়ে ছোট বাসাবাড়িতে ফিরিয়ে আনা যায় সবুজ প্রকৃতির ছোঁয়া। বাসার ছাদেই গড়ে তুলতে পারেন স্বপ্নের বাগান, যেখানে থাকবে ফলফলাদি আর বাহারি ফুলের গাছ। আমরা যারা

শহরে বাস করি, তাদের কাছে গাছ লাগানোর জমি যেন সোনার হরিণ। তাই নিজের বাড়ির ছাদই হয়ে ওঠে একমাত্র ভরসা। এতে নানা ধরনের শাকসবজি, ফল, ফুলসহ বিভিন্ন গাছ লাগানো যায়। এর মাধ্যমেই নগরীর প্রতিটি বাড়ির ছাদ হয়ে উঠতে পারে একখণ্ড সবুজ বাগান। আমরা যারা শহরে বাস করি বিশেষত ঢাকা কিংবা দেশের প্রধান শহরগুলোতে যেকোনো ফসল উৎপাদনের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা শুধুই ভোক্তা। নগদ অর্থের বিনিময়ে বাজার থেকে কিনে এনে চুলোয় চড়িয়ে দেয়া পর্যন্তই তাদের দায়। কিন্তু গ্রামের সেই মেহনত করা মানুষটি কত শ্রমে-ঘামেই না তার প্রিয় ফসল ঘরে তুলে। উৎস খুঁজে নেয় দু’পয়সা রোজগারের। রোজগার না হোক অন্তত নিজেদের চাহিদা পূরণ কিংবা শখের বশে হলেও কিন্তু আমরা এ কাজটি করতে পারি। আমরা যারা শহুরে তাদের কারও কারও বাসার ছাদ আছে। আর সেই ছাদই হয়ে উঠতে পারে আপনার শখের জমিন। যেখানে আপনি চাইলে করতে পারেন নানা ধরনের ফসল উৎপাদন। ঠিক সে কাজটিই হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের ছাদে ছাদে। সেখানে প্রতিটি ছাদে বাগান তৈরির ধুম পড়েছে। হাইড্রোপনিক প্রযুক্তি ব্যবহার ও পানির অপচয় না করে সেখানে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে। ফলে স্থানীয় বাজারে সাশ্রয়ী মূল্যে সবজি পাওয়া যাচ্ছে, কর্মসংস্থানও হচ্ছে মানুষের৷ দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম জনবহুল এলাকা হিলব্রো-র ভবনগুলোর ছাদ ধীরে ধীরে কৃষিভূমিতে পরিণত হচ্ছে৷ ক্যাথেরিন খামবুলে আর থান্ডি এনগুবেনি ‘কোটজে রুফটপ ফুড গার্ডেন কোঅপারেটিভ'-এ কাজ করেন৷ ক্যাথেরিন আর থান্ডি শখের গার্ডেনার নন৷ এ বিষয়ে রীতিমত প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তাঁরা৷ এখন প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১৭০ কেজি শাক উৎপাদন করছেন৷ এছাড়া সালাদ, ঔষধি গাছ, বাঁধাকপি ইত্যাদির চাষও করেন৷ স্থানীয় বাজারে এগুলো বিক্রি করা হয়৷ হাইড্রোপনিক প্রযুক্তিতে ছাদে বাগান করা হচ্ছে৷ এভাবে ফসল ফলাতে মাটির প্রয়োজন হয় না৷ টিউবে করে চারা গাছগুলোতে পানি দেয়া হয়৷ এই উপায়ে চারা অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং এভাবে সারা বছরই চাষ করা যায়৷ আমদের দেশেও এ ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিলেও কাঙ্ক্ষিত ফল আসেনি তবে সম্প্রতি বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংগঠনের (এফএও) অর্থায়নে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মডেল ছাদ বাগান করে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশনের সহযোগিতায় প্রাথমিকভাবে ৫০টি বাড়ির ছাদ নির্বাচন করা হয়েছে। এখনে শুধু আর্থিক বিষয়কে বিবেচনা করা হচ্ছে না এর সাথে জড়িয়ে আছে একটি সুন্দর, সুষ্ঠ পরিবেশের ব্যাপারটিও। একটি বাড়ির বাগান শিশুদের মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আবার এটি দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে বয়োজ্যেষ্ঠদের সময় কাটানোর উপলক্ষও হতে পারে।

বিষয়: বিবিধ

৭৯৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File