সোলার বিদ্যুতে চলবে দেশের প্রথম বহুতল সাইলো

লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০৪:০০:২৮ বিকাল

দেশের প্রথম অত্যাধুনিক বহুতল বিশিষ্ট খাদ্য গুদাম নির্মিত হয়েছে বগুড়ার সান্তাহারে। ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই খাদ্য গুদামের ধারণ ক্ষমতা ২৫ হাজার মেট্রিক টন। সরকারের পাশাপাশি এতে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জাইকা। অত্যাধুনিক সাইলোটির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এতে শুধু খাদ্যশস্য নয়, বরং শাক-সবজি, ফলমূলসহ অন্যান্য উদ্বৃত্ত কৃষিপণ্যও সংরক্ষণ করা যাবে। বর্তমানে দেশে যথেষ্ট পরিমাণে খাদ্যশস্য, বিশেষ করে ধান

ও চাল উদ্বৃত্ত থেকে যাচ্ছে প্রতিবছর। সেই হিসেবে সরকারী খাদ্য গুদামগুলোর ধারণ ক্ষমতা পর্যাপ্ত নয়। অধিকাংশ সাইলো পুরনো বিধায় জরাজীর্ণ ও ব্যবহারের অনুপযুক্ত।অথচ প্রতিবছর উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্যসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য আধুনিক খাদ্য গুদামের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। দেশ এখন খাদ্য উৎপাদনে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়, বরং উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্যে ভরপুর। সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকে জনসাধারণের দৈনন্দিন খাদ্যচাহিদা মিটিয়েও। দেশে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রাক্কলিত জনসংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি ৯১ লাখ। বিআইডিএসের সমীক্ষা-২০১২ অনুযায়ী চালের দৈনিক জনপ্রতি চাহিদা প্রায় ৪৬২ গ্রাম এবং গমের চাহিদা প্রায় ৪৬ দশমিক ২১ গ্রাম। সেই হিসেবে চাল ও গম মিলিয়ে মোট খাদ্যশস্যের চাহিদা প্রায় ২৯৩ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চাল ও গমের নিট উৎপাদন ৩০৭ দশমিক ৬০ লাখ মেট্রিক টন। এই হিসাব অনুযায়ী চালের উদ্বৃত্ত প্রায় ২৭ দশমিক ৭০ লাখ মেট্রিক টন। পক্ষান্তরে গমের ঘাটতি প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ মেট্রিক টন। অর্থাৎ খাদ্যশস্যের মোট উদ্বৃত্ত প্রায় ১২ দশমিক ২০ লাখ মেট্রিক টন। বাংলাদেশের খাদ্যশস্য উৎপাদনে এই সাফল্যের প্রশংসা করা হয়েছে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকেও। এও সত্য যে, কিছু মানুষ বিশেষ করে নিম্ন আয়ভুক্ত দরিদ্র শ্রেণীর জন্য সরকার ১০ এবং ১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির ব্যবস্থা করেছে। বিশ্বে চাল উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। আরও উন্নতমানের প্রযুক্তি, বীজ, সার, সেচ, কীটনাশক ইত্যাদি ব্যবহার করে এই উৎপাদন আরও বাড়ানো যায়। তবে তা না করে এখন বরং নজর দেয়া উচিত বিভিন্ন ও বহুমুখী খাদ্যশস্য উৎপাদন এবং সংরক্ষণে। সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার হলো সব মানুষের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা। গমের ঘাটতির কথা আগে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি ডাল, তেলবীজ, ডিম, মাংস, দুধ, মাছ, মসলা উৎপাদনেও ঘাটতির বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া বাঞ্ছনীয় বৈকি। মনে রাখতে হবে যে শুধু ভাতে পেট ভরে বটে, তবে পুষ্টি ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত হয় না। গত কয়েক বছরে শাক-সবজি, ফলমূল উৎপাদন বাড়লেও মাছ, দুধ-মাংস জাতীয় খাদ্য অর্থাৎ প্রোটিনে বিপুল ঘাটতি এখনও রয়ে গেছে। সরকারের ‘একটি বাড়ি, একটি খামার’ প্রকল্পটি অত্যন্ত বাস্তবধর্মী ও গণমুখী। মূলত এর মাধ্যমেই সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থাপনা ও সুষম খাদ্য উৎপাদন সম্ভব হতে পারে। এর জন্য ব্যয়ও খুব বেশি হবে না। বরং চাই সুষ্ঠু, সমন্বিত ও বহুমুখী পরিকল্পনা।



বিষয়: বিবিধ

৮৭৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File