এই ষড়যন্ত্রের শেষ দেখতে চাই
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০৩:১৬:২৭ দুপুর
আমরা বাঙালি। বাংলা আমাদের ভাষা। আর বাংলাদেশ আমাদের দেশ। আমাদের হাজার বছরের ইতিহাস আছে, ঐতিহ্য আছে, সংস্কৃতি আছে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমাদের এই সংস্কৃতিকে ভুলিয়ে দেওয়া, আমাদের নিজেদের ভাষাকে ভুলিয়ে দেওয়ার এক গভীর চক্রান্ত শুরু হয়েছিল, ঠিক যখন ঐ পাকিস্তান নামে একটি দেশ হ’ল— যার দুটি অংশ। প্রায় হাজার/১২০০ মাইল দূরে একটা পূর্ব, আরেকটা পশ্চিম পাকিস্তান গড়ে তোলা হল। বাঙালিরাই ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু দেখা গেল যে যাঁরা সংখ্যালঘু তাঁরাই আমাদের উপর মনে হল যেন জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে আমাদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি একে একে সব অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চালালো।সেই তখন থেকেই এই ষড়যন্ত্রের সুচনা। আমাদের দুর্ভাগ্য যে এক একটা কাজ শুরু করলে তারপরেই একটা বাধা আসে। ৫৮ সালের ৭ই অক্টোবর আইয়ুব খান পাকিস্তানে মার্শাল’ল ঘোষণা করে এবং তিনি নিজেকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। সাথে সাথে আমাদের শহীদ মিনার নির্মাণের কাজও বন্ধ হয়ে যায়। আজকে একটা জিনিস আমরা লক্ষ করছি পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয় নাই। তাঁরা এই কিছুদিন আগে একটি পুস্তক বের করে। ২৫ মার্চ থেকে তাঁরা যে গণহত্যা শুরু করেছিল সেই গণহত্যার ছবিগুলিতে তারা এই হত্যাকাণ্ড যে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী শুরু করেছিল এবং তাঁদের সাথে পরবর্তীতে যোগ দেয় রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী—এদেশীয় কিছু কুলাঙ্গার। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি তারা নতুনভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ঐ গণহত্যার ছবিতে সেগুলি মুক্তিযোদ্ধারা হত্যা করেছে বলে সেই ক্যাপশন দিয়ে তাঁরা সেই রিপোর্ট তৈরি করে সব জায়গায় বিলি করার চেষ্টা করছে। আমি মনে করি যে এখন আমরা স্বাধীন দেশ। অর্থনৈতিকভাবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বিশ্বে বাংলাদেশ একটি রোল মডেল। বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ একটি মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু সেই সময়ে এই ধরনের অপপ্রচার তারা করে যাচ্ছে, এটা কারও কাছে গ্রহণযোগ্য না। ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবসে তারা জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছিল, দিনের পর দিন এ দেশের মানুষকে তাঁরা হত্যা করেছিল। আমাদের ত্রিশ লক্ষ শহীদ জীবন দিয়েছে, দুই লক্ষ মা-বোনের ইজ্জত গিয়েছে। এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য। অথচ আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমাদের দেশে কোনো কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এই সংখ্যা ঠিক নাই বলে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আসলে এর থেকে লজ্জার আর কী হতে পারে? এর থেকে জঘন্য কথা হয়ত আর কিছু হতে পারে না। আসলে এরা পাকিস্তানিদের এই অপপ্রচারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের এই বক্তব্য শহিদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা এবং শহীদের প্রতি অবমাননা করা ছাড়া আর কিছুই না। এজন্য আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে এ সকল ষড়যন্ত্রকারীর ষড়যন্ত্র থেকে। দেশকে মুক্ত করতে হবে এদের অশুভ দর্শন থেকে।
বিষয়: বিবিধ
৬৪৭ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন