ভারতে পর্যটক গমনে শীর্ষস্থানে বাংলাদেশ

লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০৩:৪৫:১৯ দুপুর

প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণীজ্য দিন দিন বেড়েই চলছে। এছারা চিকিৎসার প্রয়োজনেও অনেক বাঙ্গালীর গন্তব্য এখন ভারত। পাশাপাশি লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে ও বন্ধু বা আত্নীয়স্বজনের সাথে দেখা করার জন্য ভারত যাচ্ছে অনেকেই। ভারত গমনের এই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যকে পেছনে ফেলে ভারতে পর্যটক গমনের দিক থেকে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো প্রতিবেশী দেশটির বিদেশী পর্যটক আগমন খাতে আয়ের প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। দেশটির পর্যটন খাতে এত দিন সবচেয়ে বেশি বিদেশী ভ্রমণকারী এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। তবে গত বছর এ ধারা ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গেছে ১৩ লাখ ৭০ হাজার পর্যটক। এ সময় ভারতে ২০১৫ সালের তুলনায় বাংলাদেশী পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে ২১ শতাংশ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে পর্যটক সংখ্যা বেড়েছে যথাক্রমে ৮ দশমিক ২ ও ১০ দশমিক ৪ শতাংশ। ভারতে পর্যটক গমনের হিসাবে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দ্বিতীয় ও যুক্তরাজ্যের তৃতীয়। বাংলাদেশ থেকে বিপুল হারে পর্যটক গমনের কারণ হিসেবে ভারতের উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার সুযোগ গ্রহণ ও ব্যবসা বাণিজ্য-সংক্রান্ত ভ্রমণকে চিহ্নিত করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে ভারতে বাংলাদেশী পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে। ২০১২ সালেও দেশটিতে যাওয়া বাংলাদেশী পর্যটকের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪ লাখ ৮০ হাজার। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় তিন গুণ। ২০১৬ সালে দেশটিতে ভ্রমণকারী মোট পর্যটকের সংখ্যা ৮৮ লাখ ৯০ হাজার। এর মধ্যে বাংলাদেশী ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের অংশ যথাক্রমে ১৪ দশমিক ৭৪ ও ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। ২০১৫ সালে মোট ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪৪টি চিকিৎসা ভিসা ইস্যু করেছে ভারত। এর মধ্যে অর্ধেকই ইস্যু হয়েছে বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য। এর পর ২০১৬ সালের প্রথমার্ধেই ভারতে চিকিৎসা ভিসার আওতায় গমনকারীর সংখ্যা ৯৭ হাজারে পৌঁছে যায়। ভারতে চিকিৎসাসেবা নিতে যাওয়া পর্যটকের মধ্যে বাংলাদেশীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দুই দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ দৃঢ় করতে এরই মধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে হাইকমিশন। দেশে চালু আটটি ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে এখন আর কোনো ধরনের ই-টোকেনের প্রয়োজন থাকছেনা। ভিসা নিয়ে নানা অভিযোগের সমাধান, দালালদের দৌরাত্ম্য হ্রাস ও ভিসাপ্রাপ্তি সহজতর করতে এসব কেন্দ্রে এ প্রথা বাতিল করা হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে ভিসাপ্রার্থীকে অবশ্যই বিমান, সড়ক বা রেলপথে যাতায়াত নিশ্চিতের টিকিট নিয়ে আসতে হবে। ২০১৬ সালের ৪ জুন থেকে ১২ দিনে ঈদ ভিসা ক্যাম্পে আবেদনকারীরা ‘ই-টোকেন’ ছাড়াই সরাসরি আবেদনপত্র জমা দেয়ার সুযোগ পেয়েছে। এসব আবেদনকারীকে এক বছরের জন্য মাল্টিপল ভিসা দেয়া হচ্ছে। দুই দেশের সু-সম্পর্কের কারণেই ই-টোকেন ছাড়াই ঈদ ভিসা ক্যাম্পে আবেদনপত্র জমা দেয়া, মোবাইল ফোনে পাসওয়ার্ড ও সাক্ষাতের তারিখ এসএমএস (ক্ষুদে বার্তা) আকারে পাঠানো এবং নারী আবেদনকারীদের ভিসা আবেদন সরাসরি জমা ও গ্রহণ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

বিষয়: বিবিধ

৮৩২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

382003
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সকাল ০৯:৩৩
হতভাগা লিখেছেন : এমনিতেই ভারতের সাথে আমাদের বাণিজ্য ঘাতি বিশাল । তারা তাদের দেশে আমাদের পণ্য ঢুকতেই দেয় না , তাদের দেশে আমাদের টিভি চ্যানেলগুলোও চলে না ।

এরপরেও চিকিৎসা ও বেড়ানোর তালে বাংলাদেশীরা প্রচুর টাকা ঢেলে দিয়ে আসে ভারতে । পড়াশুনার খরচও করে সেখানে।

অথচ বেড়ানোর জন্য বাংলাদেশে অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে । সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালও এগিয়ে এসেছে চিকিৎসা খাতে । আর পড়াশুনার জন্য ভারতে গমন খুবই দূর্ভাগ্যজনক।

উপরোক্ত ৩ কারণের এক কারণেও ভারতীয়রা বাংলাদেশে টাকা ঢালতে আসে না।

এটা কোন গর্বের বিষয় না যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যকে পেছনে ফেলে ভারতে পর্যটক গমনের দিক থেকে বাংলাদেশর শীর্ষস্থানে উঠে আসা ।

এটা মূলত দেশের বিভিন্ন সেক্টরের অব্যবস্থাপনাকেই ইন্ডিকেট করে যার ফলে দেশের মানুষ দেশের জিনিসের প্রতিই অনাস্থা দেখাতে বাধ্য হয়েছে।

সরকারের উচিত এমন কাজ করা যাতে আমরা এটা দেখাতে পারি যে - চিকিৎসা , শিক্ষা ও পর্যটনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ভারতের চেয়ে বেশী আকর্ষনীয় যুক্তরাষ্ট্র , যুক্তরাজ্য ও পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে।

বৈদেশিক মূদ্রা বাইরে পাঠাতে নয় , দেশে ধরে রাখতে এবং নিয়ে আসতে সরকারের অবিরাম মাথা ঘামানো উচিত।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File