উন্নয়ন সূচকে এগিয়ে বাংলাদেশ
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ২১ জানুয়ারি, ২০১৭, ০৪:০০:৪৫ বিকাল
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থনীতিতে অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। কৃষি নির্ভর অর্থনীতি ছিল এক সময়ে এ অঞ্চলে। কিন্তু সেই কৃষি নির্ভর অর্থনীতি থেকে ক্রমশ বেরিয়ে এসে শিল্প ও সেবা খাতমুখী হয়েছে আমাদের অর্থনীতি। এখন আর অর্থনীতিতে কৃষির একচ্ছত্র দাপট নেই আগের মত। এক সময় যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির পর্যালোচনা করেছিল বিশ্বব্যাংক। ওই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছিল ৭০-এর দশকের বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রতিচিত্র। যেখানে বলা হয়েছিল, ১৯৭০ সালে বাংলাদেশের মোট জাতীয় উৎপাদনে কৃষি খাতের অবদান ছিল ৫৯ দশমিক ৪ শতাংশ। আর শিল্প ও সেবা খাতের অবদান যথাক্রমে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ ও ৩৪ শতাংশ। পাকিস্তানি শাসক চক্রের শোষণ বঞ্চনায় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছিল উন্নয়নের ছোঁয়া বঞ্চিত। এখানকার আয় দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানে শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক চক্রের চরম অনীহা প্রকাশ পেয়েছে। অভাব, দুঃখ, দারিদ্র্য ছিল এখানকার মানুষের নিত্যসঙ্গী। স্বাধীনতার পর বিগত ৪৫ বছরে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তিগুলো পাল্টেছে। ক্রমশ শিল্প ও সেবার খাতের বিকাশ হয়েছে। এর ফলে অর্থনীতির মৌলিক কাঠামো অনেকটাই বদলে গেছে। সর্বশেষ ২০১৫-১৬ অর্থবছরের হিসাবে, মোট দেশজ উৎপাদনের তিনটি খাতের মধ্যে কৃষি খাতের অবদান তৃতীয় স্থানে। সেবা খাতের অবদান শীর্ষে। গত অর্থবছরে জিডিপিতে সেবা খাতের অবদান ছিল ৫৩ দশমিক ১২ শতাংশ। আর কৃষি খাতের অবদান কমতে কমতে ১৫ দশমিক ৩৫ শতাংশে নেমে এসেছে। শিল্পখাত জোগান দিয়েছে ৩১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। সময়ের আবর্তনে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকারও বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকগুণ। স্বাধীনতা পূর্ব সময়ে এদেশের অর্থনীতির আকার ছিল অনেক ছোট। স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অনেক পালাবদল ঘটেছে। নানা চড়াই-উতরাই ধাপ অতিক্রম করে বর্তমানে আমাদের অর্থনীতি একটি ভালো পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় উঠে এসেছে এদেশ। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৯৭০ সালে এ দেশের অর্থনীতিতে মোট জাতীয় উৎপাদনের আকার ছিল মাত্র ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার। সেই হিসাবে, অর্থনীতির আকার দাঁড়ায় ৩ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের স্থিরমূল্যে দেশের অর্থনীতি বা জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৮৩ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা। মাথাপিছু আয় এখন ১৪শ’ ডলার ছাড়িয়েছে। আগামী ২০২৪ সাল নাগাদ বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে বলে আঙ্কটাডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার যে তিনটি সূচক আছে ২০২১ সালের মধ্যে এ তিনটি সূচকের একটিতেও পিছিয়ে থাকবে না বাংলাদেশ। বাংলাদেশ বর্তমানে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর পরের ধাপ উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ। সব মিলিয়ে বদলে যাওয়া অর্থনৈতিক কাঠামো নিয়ে বাংলাদেশ আরো সমৃদ্ধি এবং অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাবে ক্রমেই-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বিষয়: বিবিধ
৭৩৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন