হাওর নিয়ে নতুন ভাবনা
লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ১২ জানুয়ারি, ২০১৭, ০৪:১০:১১ বিকাল
এককালে সম্পদের সীমাবদ্ধতার অভিযোগ ছিল এদেশের সকল পশ্চাৎপদতার অনিবার্য অজুহাত। তারপর কালক্রমে কি এক যাদুর স্পর্শে বদলে যেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। অব্যাহত উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বিষ্মিত করে চলেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে, অর্জন করেছে উন্নয়নের রোল মডেলের স্বীকৃতি। দুর্নিবার বাঙালি জাতি আজ মেতে উঠেছে সাফল্যের উন্মাদনায়, তারা এবার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়বেই। ছাইয়ের গাদা থেকে তারা এখন প্রতিনিয়ত খুঁজে ফিরছে অমূল্য রতন, সম্ভাবনার নব নব উৎস। এরই ধারাবাহিকতায় এবার যোগ হতে চলেছে সুনামগঞ্জের ছোট-বড় দেড় শতাধিক হাওর (জলাভূমি)এর মিঠাপানির বাণিজ্যিক ব্যবহারের সময়োপযোগী পরিকল্পনা। একই সঙ্গে উজানে ভারত থেকে নেমে আসা বালু ও পলিতে ভরাট হওয়া হাওরের তলদেশ খনন করে মাটি বিক্রিরও পরিকল্পনা চলছে। হাওরের তলদেশ নিজ খরচে খনন করে পানির আধার সৃষ্টির পাশাপাশি সেই মাটি সরকারকে রাজস্ব দিয়ে ব্যবহারের আগ্রহ দেখিয়েছে ছাতক উপজেলায় অবস্থিত লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট ফ্যাক্টরি। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে হাওরের মাটি ও মিঠাপানি বিক্রি করে মোটা অঙ্কের রাজস্ব পেতে পারে সরকার। এতে স্থানীয় ও জাতীয় উন্নয়নেও বিরাট ভূমিকা রাখবে হাওর। দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা বালু ও পলিতে সুনামগঞ্জ এলাকার হাওরের তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে পানির আধার কমে যাওয়ায় প্রতিবছর আগাম বন্যায় হাওরের একমাত্র বোরো ফসল তলিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষক। সিমেন্ট কোম্পানির হাওর খনন ও মাটি কেনার পরিকাল্পনা বাস্তবায়িত হলে হাওরে বর্ষায় পানি ধারণের ক্ষমতা বাড়াতে বোরো ফসল আগাম বন্যা থেকে রক্ষা পাবে, বাড়বে মৎস্য সম্পদ, সরকারের ঘরে যাবে মোটা অঙ্কের রাজস্ব। এ ধরণের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ইতিবাচক মানসিকতায় উজ্জীবিত অদম্য বাঙালি আগামীতে সীমাবদ্ধতার মাঝে আবিষ্কার করবে নতুন নতুন সম্ভাবনা - দুর্নিবার গতিতে এগিয়ে যাবে সাফল্যের পথে, এটাই প্রত্যাশা। সমৃদ্ধ আগামী এখন আর কোন কাল্পনিক সোনার হরিণ নয়, এক অনিবার্য বাস্তবতা।
বিষয়: বিবিধ
৯৪৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন